জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের আগের সময়ের সঙ্গে বর্তমান সময়ে পুলিশের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান জানিয়ে বাহিনীর প্রধান বাহারুল আলম বলেছেন, ফ্যাস্টিস্ট সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী হয়ে ওঠায় পুলিশকে জনরোষের মুখে পড়তে হয়েছে।
তিনি বলেন, “বিপ্লব-পূর্ব সময়ে পুলিশ হয়ে উঠেছিল ফ্যাসিস্ট সরকারের লাঠিয়াল। ফলে পুলিশকে জনরোষের শিকার হতে হয়েছে। পুলিশের নেতৃত্বস্তর ভেঙে পড়েছিল, জনআস্থা থেকে ছিটকে পড়েছিল পুলিশ।”
শনিবার রাজারবাগের বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতির (বিআরপিওডব্লিউএ) ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এসব কথা বলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক।
বর্তমানে পুলিশ একটি ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছে উল্লেখ করে বাহারুল আলম বলেন, “বাংলাদেশ পুলিশের ইতিহাসে পুলিশকে এমন অবস্থায় আর কখনও পড়তে হয়নি।”
এখন বাহিনীকে সুসংগঠিত করা, জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলাই বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা সেজন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। পুলিশ যাতে আর কখনও জনবিরোধী অবস্থানে ফিরে যেতে না পারে সেই লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। উদ্যম, আগ্রহ আর নিষ্ঠা নিয়ে আমরা পুলিশকে সংগঠিত করছি।”
আইজিপি বলেন, “জাতীয় জীবনে গর্ব করার মত অবদান আছে পুলিশের। এ বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাক হানাদারদের আক্রমণ রুখে দিয়ে গড়ে তুলেছিল সশস্ত্র প্রতিরোধ। আমরা সে বাহিনীর উত্তরসূরি।”
বিপ্লব পরবর্তী পুলিশের পুনর্গঠনের যে দায়িত্ব তিনি পেয়েছেন তা পূরণে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের সহায়তা চান বাহারুল আলম।
জুলাই-আগস্টের ঘটনা পুলিশের জন্য লজ্জার বলে মনে করেন আইজিপি। আর এ ঘটনা থেকে সবাইকে শিক্ষা নিয়ে, পেশাদারত্বের সঙ্গে মানুষের সেবা দেওয়ার মাধ্যমে হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার ওপর জোর দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি এম আকবর আলীর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সমিতির সহ-সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি ইয়াসমিন গফুর। অনুষ্ঠানে বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সমিতির মহাসচিব অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিয়া লুৎফর রহমান চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে আইজিপি বাহারুল আলম সমিতির পক্ষ থেকে সমিতির পাঁচজন বয়োজ্যেষ্ঠ পুলিশ সদস্যকে সম্মাননা দেওয়া হয়।