খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের তদন্ত সাপেক্ষে আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে।
বুধবার ৯৩তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ।
সভায় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। এছাড়া রাজনীতির সাথে জড়িত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও তদন্ত সাপেক্ষে আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করা হোক।”
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার ছাত্রদলের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত বহিরাগতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সেই সঙ্গে প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করার কথা বলা হয়েছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় দোষী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করতে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠনেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়। তিন কার্যদিবসের মধ্যে এই কমিটি তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করবে।
মঙ্গলবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি এবং উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার রাতেই তারা অবরুদ্ধ করে উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাছুদকে। দাবি পূরণে বুধবার দুপুর একটা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছিল তারা। ওই সময় পার হওয়ার পর তারা ভবনগুলোতে তালা দিয়ে দেয়।
মঙ্গলবারের সংঘর্ষের পর বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের পক্ষ থেকে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে দায়ী করা হচ্ছে। শিবিরকে ‘গুপ্ত’সংগঠন উল্লেখ করে তাদের প্রতিরোধের আওয়াজও তুলেছেন ছাত্রদলের নেতারা।
অন্যদিকে ছাত্রশিবির এই অভিযোগ অস্বীকারের পাশাপাশি ছাত্রদলের আচরণকে ছাত্রলীগের সঙ্গে তুলনা করে ‘নব্য ফ্যাসিস্ট’দের ঠেকানোর আহ্বান জানিয়েছে।
আবার জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনও কুয়েটের ঘটনার জন্য ছাত্রদলকেই দায়ী করছে। হামলার প্রতিবাদে কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে তারা।