পাকিস্তানের শাসকদলের অন্যতম জোটসঙ্গী পিপিপি (পাকিস্তান পিপলস পার্টি) ইমরান খানের দলকে নিষিদ্ধ করার বিরোধীতা করেছে।
দলটি পিটিআইকে (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) রাজনীতির মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে সরকারকে।
সম্প্রতি পাঞ্জাবের প্রদেশিক পরিষদে পিটিআইকে নিষিদ্ধ করতে একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়।
পাঞ্জাব পিপিপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হাসান মুর্তজা বলেন, “আমরা পিটিআইকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে নই। বরং পিটিআইকে জাতীয় মূলধারায় আনার উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে।”
তিনি শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “পিটিআই নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। সরকার এবিষয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা পুরো পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।”
তিনি আরও বলেন, কোনও নেতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার বদলে পিটিআইকে নতুন করে আলোচনার আহ্বান জানাতে হবে সরকারকে।
পিটিআই খাইবার পাখতুনখোয়া সরকারের পূর্ণ সমর্থন নিয়ে বারবার ইসলামাবাদে মিছিল করেছে। সর্বশেষ ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির ডাকে কয়েক লাখ মানুষ ইসলামাবাদের আশেপাশে জড়ো হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন নিহত হন। এদের মধ্যে রয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর পাঁচ সদস্য। এক পর্যায়ে আন্দোলন স্থগিত করেন বুশরা বিবি।
কিছুদিন আগে পাকিস্তানের কেন্দ্রিয় সরকার খাইবার পাখতুনখেয়ায় গভর্নরের শাসন কার্যকরের চিন্তা করেছিল। আর গত বৃহস্পতিবার বেলুচিস্তানের প্রদেশিক পরিষদে পিটিআইকে নিষিদ্ধ করতে একটি প্রস্তাব পাস হয়।
প্রস্তাবে পিটিআইয়ের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে আক্রমণের অভিযোগ করা হয়। প্রস্তাবটি পিএমএল-এন (পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ) নেতা সালিম খান খোসো সংসদে উত্থাপন করেন। এতে সমর্থন দেয় পিপিপি নেতা মীর সাদিক উমরানিসহ আরও অনেকে। এএনপিও (আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি) এতে সমর্থন দেয়।
পিএমএল-এন নেতা উজমা কারদারও পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদে একই ধরনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এই প্রস্তাবে পিটিআইকে ৯ মে দেশের বিভিন্ন স্থানে দাঙ্গা সৃষ্টি এবং এই সপ্তাহে ইসলামাবাদে আবারও সহিংসতা ঘটানোর জন্য অভিযুক্ত করা হয়।
এতে বলা হয়, খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী ইসলামাবাদ হাই কোর্টের আদেশ অমান্য করে দুইবার রাজধানীতে মিছিল করেন। পিটিআই বিদেশি বিনিয়োগ বন্ধের উদ্দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছে, এমনটাও বলা হয়।
পিপিপির সাধারণ সম্পাদক মুর্তজার মতে, ইসলামাবাদের পরিস্থিতি ভালো না হলেও, জাতিকে বিভক্তির দিকে ঠেলে দেওয়া ঠিক হবে না। তিনি খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুরের সমালোচনাও করেন। বুশরা বিবির সঙ্গে গান্দাপুরও ইসলামাবাদে প্রবেশ করেন।
সাবেক সেনেট চেয়ারম্যান মিয়া রাজা রাব্বানিও রাজনৈতিক আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা সমাধান নয়। কারণ তা নতুন নামে আবার উঠে আসে। আমাদের ইতিহাস থেকে শিখতে হবে। ন্যাপ ও কমিউনিস্ট পার্টি অফ পাকিস্তান নিষিদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু এর ফল কী হয়েছিল?”
তথ্যসূত্র : ডন।