বেতন কাঠামো দশম গ্রেডে উন্নীত করার ঘোষণা দিতে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেধে দিয়ে ঢাকার শাহবাগ ছাড়ছেন দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।
চাকরিতে বেতন কাঠামো ১৩তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত ও বৈষম্য দূরীকরণের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি দিতে শুক্রবার বিকালে শহীদ মিনার থেকে পদযাত্রা শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা।
তাদের পদযাত্রা জাতীয় জাদুঘরের সামনে এলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যান ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল। এরপর প্রাথমিকের শিক্ষকরা শাহবাগে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে শাহবাগে ফিরে শুক্রবার রাত পৌনে আটটার দিকে এ ঘোষণা দেন শিক্ষক প্রতিনিধি মনিবুল হক বসুনিয়া।
তিনি বলেন, “দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবির স্মারকলিপি আমরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জমা দিয়েছি। বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টা বিদেশে অবস্থান করছেন। তাই আমাদেরকে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।
“কর্তৃপক্ষের অনুরোধের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। এর মধ্যে দশম গ্রেড বাস্তবায়নের ঘোষণা দিতে হবে। এই সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।”
কর্মসূচি পালনে আর ঢাকা আসবেন না জানিয়ে তিনি বলেন, “স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে আমরা কর্মবিরতি পালন করব। তবে আমরা প্রত্যাশা করছি, এর মধ্যেই আমাদের এই দাবি বাস্তবায়ন করা হবে।”
আজ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছেন জানিয়ে আরেক শিক্ষক প্রতিনিধি খাইরুন নাহার লিপি বলেন, “তবে এর জেরে যদি দেশের কোনও প্রান্তে আমাদের কোনও সহকর্মীকে হয়রানি করা হয় তাহলে আমরা রাস্তায় নেমে আসব। আমরা প্রত্যাশা করছি, আমাদের দাবি বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষ সদয় হবেন।”
এদিন সকাল ১০টা থেকে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সমাবেশ করেন সারাদেশ থেকে আসা বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এসময় তারা নিজেদের দাবি আদায়ে শপথ বাক্য পাঠ করেন এবং অধিকার আদায়ের প্রশ্নে কারও সঙ্গে আপস না করার ঘোষণা দেন। এ সময় তারা ‘এক দফা এক দাবি, শিক্ষকদের দশম গ্রেড’, ‘জেগেছেরে জেগেছে, শিক্ষক সমাজ জেগেছে’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
দুপুরের দিকে বিএনপির কার্যনির্বাহী সদস্য রফিকুল ইসলাম ও গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল ইসলাম নুর তাদের কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
একপর্যায়ে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা সরকারের প্রতিনিধিদের দুপুর ২টার মধ্যে তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য সময় বেঁধে দেন। তবে এসময়ে মধ্যে সরকারের প্রতিনিধি কেউ না আসায় পৌনে ৪টার দিকে পদযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে যমুনার দিকে রওনা দেন। পথেই পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তারা।
তারপর পুলিশ সদস্যদের মধ্যস্থতায় বিকাল ৫টার পর শাহবাগ থানার ভেতর থেকে একটি পুলিশ ভ্যানে করে যমুনায় স্মারকলিপি জমা দিতে যান শিক্ষকদের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
শিক্ষকদের মিছিলটি আটকে দেওয়ার পর শিক্ষকরা শাহবাগেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।