আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৪-এর খসড়ায় রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের প্রস্তাবিত বিধান বাদ দেওয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
তিনি বলেছেন, “উপদেষ্টারা সবাই মিলে চিন্তা করেছেন যে, বিচারের শুদ্ধতা রক্ষার জন্য রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিষয়টি সংশোধিত অধ্যাদেশে আনা উচিত নয়।”
বৃহস্পতিবার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মূল ভবনের সংস্কার কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
বিগত আওয়ামী লীগের শাসনামলে জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এর বিচারের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
একই সঙ্গে ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনটি সংশোধনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়।
প্রস্তাবিত সংশোধনীতে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিধান থাকবে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে প্রকাশ হয়। গত মঙ্গলবার উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) সংশোধন অধ্যাদেশের খসড়ার বিষয়ে নিজেই বলেছিলেন, কোনও রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হলে আদালত চাইলে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করতে পারবে।
খুন, গুম, নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে কোনও রাজনৈতিক দল বা সংগঠন দোষী সাব্যস্ত হলে সেই দল বা সংগঠনকে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা যাবে, খসড়ায় এমন বিধান প্রস্তাবের কথাও শোনা যাচ্ছিল।
কিন্তু বুধবার সেই বিধান বাদ দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৪-এর খসড়া অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।
এদিন সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে জানান, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিষয়টি বাদ রেখে সংশোধনী অধ্যাদেশ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তবে অনুমোদন হওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) অধ্যাদেশের সংশোধনীতে ট্রাইব্যুনালের অন্তর্বর্তী আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের বিধান রাখা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের অন্তর্বর্তী আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের বিধান রাখায় এ বিচার বিলম্বিত হবে কি না, বৃহস্পতিবার সাংবাদিকরা এ প্রশ্ন রাখেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের কাছে।
তিনি তাদের বলেন, “বিচারের শুদ্ধতার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অন্তর্বর্তী আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের বিধান রাখার পাশাপাশি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিধান বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে অন্তর্বর্তী আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের বিধান খুব সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রে রাখা হয়েছে।”