শুক্রবার হঠাৎই গ্রেফতার করা হয় তেলেগু সুপারস্টার আল্লু আর্জুন। ৪ ডিসেম্বর হায়দ্রাবাদের একটি সিনেমা হলে ‘পুষ্পা টু: দ্য রুল’-এর বিশেষ শোয়ের সময় পদদলিত মারা যান এক নারী। ঐ ঘটনায় করা মামলায় অভিযোগ দায়ের হয় এই তারকার বিরুদ্ধে।
গ্রেফতারের দিনই অবশ্য তেলঙ্গানা হাই কোর্ট অন্তর্বর্তী জামিন দেয় আল্লু আর্জুনকে। কিন্তু শুক্রবার রাতটা জেলে থাকতে হয়েছে ‘পুষ্পা’-কে, খবর আনন্দবাজার অনলাইনের।
শনিবার সকাল সকাল বাড়ি ফেরেন এই দক্ষিণী তারকা। তার অপেক্ষায় ছিলেন স্ত্রী ও দুই সন্তান। পরিবারই শুধু নয়, অপেক্ষায় ছিলেন অন্য তারকারাও।
মুক্তি পেতেই তার সঙ্গে দেখা করতে ছুটে যান নাগা চৈতন্য ও রাণা দগ্গুবতী। নাগা ও রানাকে দেখা মাত্রই জড়িয়ে ধরেন আল্লু আর্জুন। আরে সেই ভিডিও সমাজিক মাধ্যমে ভাইরাল।
আল্লু আর্জুনের বাড়িতে গিয়েছিলেন অভিনেতা চিরঞ্জীবীর স্ত্রী সুরেখা কোনিদালাও।
বাড়ি ফিরে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে কথা বলতে গিয়ে হাত জোড় করে ক্ষমা চান আল্লু আর্জুন। বললেন ৪ ডিসেম্বর রাতে যে ঘটনা ঘটেছিল, তাতে তার হাত ছিল না।
“আমি ভাল আছি। চিন্তার কোনও কারণ নেই। সকলকে অনেক ধন্যবাদ। আমি একজন নাগরিক, আইন মেনে চলি। আইনকে সম্মান করি। আইনি প্রক্রিয়ায় আমি সহযোগিতা করব। তার জন্য যা করতে হবে করব,” বলেন এই পুষ্পা তারকা।
কী হয়েছিল সেইদিন?
গেল ৪ ডিসেম্বর আল্লু আর্জুন এবং তার পুষ্পা টু : দ্য রুল সিনেমার সহ-অভিনেত্রী রশ্মিকা মান্দানাকে নিয়ে উপস্থিত হলে তাদের এক ঝলক দেখার জন্য হায়দ্রাবাদের সন্ধ্যা থিয়েটারে বিপুল সংখ্যক ভক্ত ভিড় করেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিনেতার আগমনের বিষয়ে সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ বা নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে আগে থেকে কোনও তথ্য ছিল না।
তাছাড়া দর্শকদের জন্য আলাদা কোনো প্রবেশ বা বের হওয়ার রাস্তাও ছিল না। পুলিশ বলছে, থিয়েটারের গেইটটি বাড়তি ভিড়ের চাপ সহ্য করতে না পেরে ধসে পড়লে পদদলিতের ঘটনাটি ঘটে।
পরে নিহত নারীর স্বামী মাগুদামপল্লী ভাস্করের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিনেতা আল্লু আর্জুনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। অভিযোগে মাগুদামপল্লী বলেন, তার স্ত্রী রেবতী শ্বাস নিতে পারছিলেন না এবং নিচে পড়ে যান কারণ নিরাপত্তাকর্মীরা নায়কের জন্য ‘নিরাপত্তা বেষ্টনী’ তৈরি করতে ভিড়কে ধাক্কা দিয়েছিল।
অভিযোগপত্র থেকে নিজের নাম প্রত্যাহারের জন্য আল্লু আর্জুন তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত শুনানি হয়নি।
ঘটনার প্রায় ১০ ঘণ্টা পর নিজের প্রতিক্রিয়া আর্জুন বলেছিলেন “মর্মান্তিক ঘটনার দ্বারা গভীরভাবে মর্মাহত।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় তার দেরি করে ক্ষমা ও দুঃখ প্রকাশ নিয়েও দারুণ সমালোচনার মুখে পড়েন এই অভিনেতা।
৭ ডিসেম্বরে সিনেমাটির আরেকটি প্রদর্শনে আর্জুন দেরিতে প্রতিক্রিয়া জানানোর ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, “এটি বুঝতে এবং ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে আমার কয়েক ঘণ্টা সময় লেগেছিল। আমি এটিকে মানসিকভাবে নিতে পারিনি। এতে আমার প্রায় ১০ ঘণ্টা লেগেছিল। খবরটি শুনে আমাদের সবার মাথা ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল।”
তিনি নিহত নারীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সম্ভাব্য সবরকম সহায়তা করার প্রতিশ্রুতিও দেন। এই সময় ওই নারীর আহত কিশোর বয়সী ছেলের চিকিৎসার জন্য তিনি ২৫ লাখ রুপি সহযোগিতার কথাও জানান।