উত্তর কোরিয়ার পর ভিয়েতনামে সফর করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার ভোররাতে তিনি ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে পৌঁছান।
দেশটির নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক সেরে সেদিন রাতেই পুতিন রাশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি এশিয়ার দুই দেশ সফর শেষ করেন।
বুধবার এশিয়া সফরের প্রথম দিনেই পুতিন আরেক কমিউনিস্ট দেশ উত্তর কোরিয়া সফর করেন। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে পুতিন একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছেন।
ওই চুক্তির মধ্য দিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার একটি নতুন জোটবদ্ধতার সূচনা হয়েছে। চুক্তির পর উত্তর কোরিয়া থেকে বুধবার সন্ধ্যায় পুতিন ভিয়েতনামে রওনা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র সমালোচনার মুখেও ভিয়েতনাম পুতিনকে উষ্ণ সংবর্ধনা দিয়েছে। ভিয়েতনামের উপপ্রধানমন্ত্রী চান হোং হা এবং দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ কূটনীতিক লে হাই চুং হ্যানয় বিমানবন্দরে পুতিনকে স্বাগত জানান ও লাল গালিচা সংবর্ধনা দেন।
এই সফরে পুতিন ভিয়েতনামের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী রাজনীতিবিদ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক নেয়ন ফু চং, দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট তো লাম এবং প্রধানমন্ত্রী ফাম মিং চিং সহ অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
হ্যানয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে গত সোমবার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, “কোনও দেশেরই পুতিনকে তার আগ্রাসনমূলক যুদ্ধের প্রচারের জন্য প্ল্যাটফর্ম দেওয়া উচিৎ হবে না। কারণ এর মধ্য দিয়ে তার নৃশংসতাকে স্বাভাবিক বলে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।”
ভিয়েতনামে এটি পুতিনের পঞ্চম সফর। সর্বশেষ ২০১৭ সালে এশিয়-প্রশান্তমহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা এপেক সম্মেলনের সময় পুতিন ভিয়েতনাম সফর করেন।
রাশিয়ার সঙ্গে ভিয়েতনামের সম্পর্ক অনেক পুরোনো, সেই সোভিয়েত যুগ থেকে। স্নায়ুযুদ্ধের সময় ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির হাজার হাজার কর্মী সোভিয়েত ইউনিয়নে পড়তে যেত। দেশটির কমিউনিস্ট পার্টির বর্তমান প্রধান নেয়ন ফু চংও তাদের একজন।
রাশিয়ার সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্কের গুরুত্ব এখনও মনে রেখেছে ভিয়েতনাম। যদিও দেশটি ইউরোপ ও আমেরিকান সঙ্গেও সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা চালাচ্ছে।
ভিয়েতনামের সরকারি ওয়েবসাইটের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “পুতিনের এই সফর প্রমাণ করে যে ভিয়েতনাম সক্রিয়ভাবে স্বাধীনতা, স্বনির্ভরতা, বহুমুখীকরণ, বহুপাক্ষিকতার চেতনায় তার বৈদেশিক নীতি বাস্তবায়ন করে।”
পুতিনও তার সফরের আগে ভিয়েতনামের ‘নিহান দ্যান’ নামের একটি সংবাদপত্রে বুধবার প্রকাশিত তার লেখা এক নিবন্ধে ইউক্রেন যুদ্ধ বিষয়ে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান নেওয়ায় দেশটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
নিবন্ধে পুতিন লেখেন, “ইউক্রেন সংকটে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান গ্রহণ করায় আমরা আমাদের ভিয়েতনামের বন্ধুদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এ ছাড়া ইউক্রেন সংকট শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে বাস্তবসম্মত উপায় বের করার বিষয়ে তারা আগ্রহ প্রকাশ করায়ও তাদের ধন্যবাদ।”
বিশ্ব শক্তিগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভিয়েতনাম একটি নিরপেক্ষ পররাষ্ট্র নীতি অনুসরণ করে যাকে তারা ‘ব্যাম্বু ডিপ্লোমেসি’ বা ‘বাঁশের কূটনীতি’ বলে থাকে। এ কারণেই ভিয়েতনাম ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার নিন্দা করেনি। ভিয়েতনাম সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ৯টি দেশ ইউক্রেন যুদ্ধে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট এমন এক সময়ে উত্তর কোরিয়া ও ভিয়েতনাম সফরে গেলেন, যখন রাশিয়া আন্তর্জাতিকভাবে প্রায় বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে। এর আগে গতমাসে পুতিন চীন সফরেও যান।
পুতিনের ভিয়েতনাম সফরের লক্ষ্য
ভিয়েতনাম সফরে পুতিনের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের একটি রুশ প্রতিনিধিদল রয়েছে। তারা দেশটির কমিউনিস্ট সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে তারা উভয় দেশের আঞ্চলিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। বিশেষ করে শান্তি, সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়।
এসময় তেল, গ্যাস, পারমাণবিক বিজ্ঞান এবং শিক্ষাসহ আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে ১১টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকও সই করেন দুই দেশের প্রেসিডেন্ট।
পুতিনের এই সফরের সময় দুই দেশ ভিয়েতনাম-রাশিয়া সম্পর্কের মৌলিক নীতি সম্পর্কিত চুক্তি স্বাক্ষরের ৩০তম বার্ষিকী উদযাপন হয়। হ্যানয় ও মস্কো ১৯৯৪ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ১৯৭৮ সালের বন্ধুত্ব চুক্তিকে প্রতিস্থাপন করার জন্য চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করে।
১৯৯৪ সালের চুক্তিটি একটি অ-আগ্রাসন চুক্তি হিসাবে কাজ করে। চুক্তিটিতে হ্যানয় এবং মস্কো উভয়ই তৃতীয় কোনও পক্ষের সঙ্গে তাদের দুদেশের স্বার্থে আঘাত করবে এমন কোনও চুক্তিতে প্রবেশ না করার প্রতিশ্রুতি দেয়। ভিয়েতনাম-রাশিয়া সম্পর্ক এখনো সেই চুক্তির পরিধির মধ্যে পরিচালিত হয়।
তবে পুতিনের এই সফরের মূল লক্ষ্য হলো বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করা। এর মধ্য দিয়ে পুতিন দেখাতে চাইছেন, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের বিচ্ছিন্নতার নীতির কোনও প্রভাব পড়ছে না।
অনেকটা উত্তর কোরিয়া সফরের মতোই পুতিনের ভিয়েতনাম সফরও দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ভিয়েতনামের কাছ থেকেও সহায়তা বাড়াতে চাইছেন পুতিন।
উইলসন সেন্টারের এশিয়া প্রোগ্রামের একজন ফেলো প্রশান্ত পরমেশ্বরন বলেন, “এই সফরের মধ্য দিয়ে পুতিন ইঙ্গিত দিচ্ছেন, রাশিয়া এশিয়ায় বিচ্ছিন্ন নয়। অন্যদিকে, ভিয়েতনাম তাদের একটি প্রধান ঐতিহ্যগত সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করছে। যদিও দেশটি যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গেও সম্পর্ক রাখে।”
ভিয়েতনামের ভারসাম্যমূলক কূটনীতি
পুতিনের এই সফরের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনামের ভারসাম্যমূলক পররাষ্ট্র নীতির বিষয়টিও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ভারতের মতো ভিয়েতনামও রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন সহ প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তিগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজার রাখে। সকলেই দেশটির গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার। গত বছর ভিয়েতনাম চীনা নেতা শি জিনপিং এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন উভয়েরই সফরের আয়োজন করেছিল।
সেই সফরে যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনাম তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ককে ‘বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারত্বে’ উন্নীত করেছে, যা সাবেক শত্রুদের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতির একটি ঐতিহাসিক লক্ষণ। দুটি দেশ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাণিজ্যিক সম্পর্কও জোরদার করেছে।
২০২৩ সালে রাশিয়া ও ভিয়েতনামের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ৩.৬ বিলিয়ন ডলারের। আর চীনের সঙ্গে ১৭১ বিলিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ১১১ বিলিয়ন ডলারের। নিজের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও গভীর বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী।
তবে রাশিয়ার সঙ্গেও দেশটি কখনো সম্পর্ক ছিন্ন করবে না। কারণ ১৯৫০ সালে উত্তর ভিয়েতনামের নতুন কমিউনিস্ট রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশটিকে সোভিয়েত রাশিয়া সামরিক, অর্থনৈতিক ও কুটনৈতিক সহায়তা দেওয়া শুরু করে।
ভিয়েতনামও রাশিয়ান সঙ্গে তার সম্পর্ককে ‘আনুগত্য ও কৃতজ্ঞতায় ভরা’ বলে বর্ণনা করেছে। ভিয়েতনাম ১৯৭৮ সালে কম্বোডিয়ার গণহত্যাকারী খেমাররুজ সরকারকে উৎখাতে দেশটিতে আক্রমণ করলে পশ্চিমাদের সঙ্গে চীনও দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সেসময় একমাত্র সোভিয়েত রাশিয়া ভিয়েতনামের পাশে ছিল।
বর্তমানে ভিয়েতনামের অর্থনীতি বিশ্ব বাজারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিজের উন্নতি করছে। দেশটির বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে চীন, এশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের চেয়ে অনেক পিছিয়ে পড়েছে রাশিয়া। তথাপি ভিয়েতনাম এখনও প্রধানত রাশিয়ার তৈরি সামরিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে এবং দক্ষিণ চীন সাগরে তেল অনুসন্ধানের জন্য রাশিয়ান তেল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্বের উপর নির্ভরশীল।
অন্যদিকে, এই অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান চীনা প্রভাব মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রেরও ভিয়েতনামকে প্রয়োজন এবং দেশটি ওয়াশিংটনের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ভিয়েতনামও বাণিজ্যিকভাবে চীনের উপর তার অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা কমাতে চায়। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সামরিক উপস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ থেকেও উপকৃত হতে আগ্রহী দেশটি।
সিঙ্গাপুরের আইএসইএএস-ইউসুফ ইশাক ইনস্টিটিউট-এর ভিয়েতনাম স্টাডিজ প্রোগ্রামের সিনিয়র ফেলো লে হং হিপ বলেন, “ভিয়েতনামের দৃষ্টিকোণ থেকে রাশিয়াকে এখনও ভিয়েতনামের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখা হয়।
“তবে ভিয়েতনাম নিজেকে রাশিয়ার খুব বেশি ঘনিষ্ঠ হিসেবে দেখানোর বিষয়েও সতর্ক রয়েছে। কারণ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররাও ভিয়েতনামের নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
“পুতিনকে স্বাগত জানিয়ে ভিয়েতনামের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের হতাশ করার ঝুঁকিও রয়েছে। তথাপি দেশটি তার অংশীদারদের দেখিয়ে দিচ্ছে যে, ভিয়েতনাম শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা পূরণের জন্য অন্যদের সঙ্গে তার সম্পর্ক বিসর্জন দেবে না।
“এটি কোনও পক্ষ নেওয়ার বিষয় নয়। এটি বৈচিত্র্যমূলক পররাষ্ট্রনীতি বজায় রাখা এবং স্বায়ত্তশাসনের কৌশল অনুসরণ করার বিষয়।”
বিকল্প বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পুতিনের জোর প্রচেষ্টা
গত সপ্তাহে সুইজারল্যান্ডে ইউক্রেন নিয়ে বৈশ্বিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান থেকে বিরত থাকা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের একটি ভিয়েতনাম।
পুতিন বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার এবং পশ্চিমাদের বিপরীতে একটি নতুন বিশ্বব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা বাড়িয়ে তুলেছেন। ফলে রাশিয়াকে একঘরে করার পশ্চিমা আশাও পূরণ হচ্ছে না বলেই মনে হচ্ছে।
পঞ্চম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরই মে মাসে পুতিন চীন সফর করেন। ওই সফরে দুই দেশের নেতা যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতায় তাদের কৌশলগত অংশীদারত্বকে আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতি দেন।
এখন পুতিন চীনের দুই প্রতিবেশী দেশে সফর করছেন। এ ছাড়া এই বছর রাশিয়া ব্রিকস অর্থনৈতিক জোটেরও সভাপতিত্ব পেয়েছে। অক্টোবরে রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কাজানে ব্রিকস সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে।
তিন ডজনেরও বেশি দেশ এই ব্লকে প্রবেশের চেষ্টা করছে। এ বছরের শুরুতে ব্রিকস জোট বিশ্বব্যাপী তার প্রভাব বলয় আরও সম্প্রসারিত করেছে। ইরান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইথিওপিয়া এবং মিশর আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকসে যোগদান করেছে। এর পরই রাশিয়া সংস্থাটির তত্ত্বাবধান করার দায়িত্ব পেল।
ব্রিকসের এই সম্প্রসারণকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন জি-৭ এর পাল্টা ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জোট গড়ে তোলার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এবং মস্কো ও বেইজিংয়ের নতুন বিশ্বব্যবস্থা তৈরির প্রচেষ্টায় একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
মালয়েশিয়াও ব্রিকসে যোগদানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। ভিয়েতনামও গত মাসে ব্রিকস নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। গত সপ্তাহে ভিয়েতনাম রাশিয়ায় ব্রিকস পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে ভিয়েতনামের চেয়ে রাশিয়া এই সফর থেকে বেশি লাভবান হতে পারে। আর হ্যানয় উত্তর কোরিয়া সফরের পরে পুতিনকে স্বাগত জানানোর মাধ্যমে সুনাম হারানোর ক্ষতির শিকার হতে পারে।
লে হং হিপ বলেন, “যদি কোনও সারগর্ভ চুক্তি নাও হয়, তথাপি এই সফরটি প্রতীকীভাবে তাৎপর্যপূর্ণ হবে। এর মধ্য দিয়ে পুতিন ও রাশিয়া বিশ্বকে দেখাতে পারবে যে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো কাজ করছে না। আর সেই প্রতীকবাদ পুতিনের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
তথ্যসূত্র : বিবিসি, সিএনএন, আল জাজিরা, দ্য ডিপ্লোমেট