অভিনয় ও তারকা জীবনে বরাবর সপাট ও সপ্রভিত থাকেন রাধিকা আপ্টে। অন্তঃসত্ত্বা ও মা হওয়ার হওয়ার অভিজ্ঞতাও এই অভিনয়শিল্পীর কাছে তার মতো করেই ধরা দিয়েছে।
স্বামী ব্রিটিশ সংগীতশিল্পী ও সুরকার বেনেডিক্ট টেলর আর ভারতীয় নায়িকা রাধিকা আপ্টের বিবাহিত জীবনের এক যুগ হয়েছে। তবে রাধিকা আপ্টের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কথা দুজনে নাটকীয়ভাবেই জানান দেন গত অক্টোবরে।
১৬ অক্টোবর, বুধবার বিএফআই লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবে ‘সিস্টার মিডনাইট’ সিনেমার প্রদর্শনীতে অংশ নেন তিনি। সেখানে তাঁর বেবি বাম্প দেখে রীতিমতো হতবাক ভক্তরা।
গত ১৬ অক্টোবর বিএফআই লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘সিস্টার মিডনাইট’ সিনেমার প্রদর্শনীতে এসেছিলেন রাধিকা আপ্টে। সেখানে কালো অফ শোল্ডার মিডি ড্রেসে স্পষ্ট হয়ে ওঠা বেবিবাম্প জানিয়ে দেয় প্রথম সন্তানের অপেক্ষায় রয়েছেন রাধিকা আপ্টে-বেনেডিক্ট টেলর দম্পতি।
এই ডিসেম্বরে মা হয়েছেন এই নায়িকা। সন্তান জন্মদানের এক সপ্তাহ পর জানান দেন সেই সুখবর।
সামনে ল্যাপটপ রেখে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর ছবি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার দিয়ে তিনি বলেন, “সন্তান জন্মের পর প্রথম কাজ নিয়ে মিটিং করছি।”
এর সঙ্গে জুড়ে দেন কয়েকটি হ্যাশট্যাগ – ব্রেস্ট ফিডিং, মাদারস অ্যাট ওয়ার্ক।
ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, ছেলে না মেয়ে সন্তান তা এখনও জানা যায়নি। ভক্তদেরও প্রশ্ন, রাধিকার ছেলে হলো না মেয়ে?
যদিও রাধিকার আপ্টের ওই ইনস্টাগ্রাম পোস্টে ‘ইটস আ গার্ল’, ‘গার্লস আর দ্য বেস্ট’ হ্যাশট্যাগ বলে দিচ্ছে, মেয়ে সন্তানের মা হয়েছেন তিনি।
এসব আলোচনার মাঝেই সামনে এসেছে রাধিকা আপ্টের বেবিবাম্পের একাধিক ছবি।
সদ্য মা হওয়া রাধিকা আপ্টে বেবিবাম্প নিয়ে রাখঢাক করেননি। মন খুলে বলেছেন স্ফীত উদর নিয়ে নিজের শারীরিক কষ্টের দিনগুলোর কথাও।
‘সন্তান নেবেন কি নেবেন না’ সিদ্ধান্তে নিশ্চিত থাকা দম্পতির জন্য এমন অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যাওয়া সহজ বলে মনে করেন রাধিকা আপ্টে।
তিনি বলেন, “আমাদের বেলায় আসলে আমরা দুজনেই সন্তান নিতে চাইনি। এরপরও কোথাও এক শতাংশ আগ্রহ রয়েই গিয়েছিল, সন্তান হলে কেমন হয়। তারপরেই তো অন্তঃসত্ত্বা হলাম।”
২০১১ সালে লন্ডনে বেনেডিক্ট টেইলরের সঙ্গে পরিচয় হয় রাধিকা আপ্টের। এরপর ২০১২ সালে বিয়ে করেন দুজন।
সন্তান প্রসবের এক সপ্তাহে আগে ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনের সঙ্গে রাধিকা আপ্টের সাক্ষাৎকার পর্বে ছিল বেবিবাম্প নিয়ে এই ফটোশুটও।
একটি ছবিতে রাধিকা আপ্টের পরনে ছিল বাদামি রঙের স্বচ্ছ গাউন; জিরো-মেকআপ চেহারা এবং চুলে ছিল জেল দেয়া।
আরেকটি ছবিতে তার পরনে ছিল সোনালী জালের পোশাক। এক পাশ থেকে তোলা এই ছবিতে ফুটে উঠেছিল রাধিকা আপ্টের শরীরে মাতৃত্বের কারণে আসা পরিবর্তন।
গলাবদ্ধ লম্বা গাউন পরা আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, পোশাকের মাঝ দিয়ে স্ফীত উদর বেরিয়ে এসেছে।
একেবারে ’হুট’ করে অন্তসত্ত্বা হয়ে যাননি রাধিকা আপ্টে। এরপরও শরীরের এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে বেগ পেতে হয়েছিল তার।
“আমি সন্তান জন্ম দেয়ার সপ্তাহখানেক আগে এই ফটোশুট করি। সত্যি বলছি, আমাকে যেমন দেখাচ্ছিল তা মেনে নিতে নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি আমি। আমি কখনও নিজেকে এতো মোটা দেখিনি।”
“আমি রীতিমত ফুলে গিয়েছিলাম। আমার পেলভিস ব্যথা করতো শুটিং চলাকালে। আমার ঘুম কমে গিয়েছিল বলে সবকিছু নিয়ে আমার মধ্যে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেখা দিয়েছিল। এখন সন্তান প্রসবের দুই সপ্তাহও হয়নি; আমার শরীর আবার অন্য রকম দেখাচ্ছে। ”
এখন অবশ্য ওই ফটোশুটের ছবিতে নিজের স্ফীত উদরের সৌন্দর্য খুঁজে পেতে শুরু করেছেন সদ্য মা হওয়া এই নায়িকা।
কিন্তু গর্ভকালের কষ্টের দিনগুলো নিয়ে তা উপলব্ধি হচ্ছে, “অধিকাংশ নারীকে আমি দেখেছি গর্ভকালে কষ্টের দিন কাটাতে। সত্যি বলতে, মেনোপজ অথবা পিরিয়ড … এসবের হরমোনগুলো সহজ কিছু নয়।
“কিন্তু যখনই আমরা প্রকাশ্যে পিরিয়ড ও মেনোপজের কষ্ট নিয়ে কথা বলি, গর্ভকালের উদ্ভাসিত চেহারা দিয়ে বাকি সব এড়িয়ে যাওয়া হয়। কেউ যন্ত্রণার দিকটা নিয়ে বলে না। আমার কাছে এটা খুব আজব বলে মনে হয়েছে।”
২০১৬ সালে ‘পার্চড’ ছবির যৌনদৃশ্য ফাঁস হওয়ার পর বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল রাধিকা আপ্টেকে। এরপরও এই ‘অহল্যা’ ও ‘বাদলাপুর’ নায়িকা দৃঢ়তার সঙ্গেই বলেছিলেন, যৌনদৃশ্যে অভিনয় নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই তার।