Beta
শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫

নির্বাচিত সরকার ছাড়া সংস্কারের বৈধতা দিতে পারব না : ফখরুল

বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘রাজবন্দির জবানবন্দি’ শীর্ষক গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘রাজবন্দির জবানবন্দি’ শীর্ষক গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
[publishpress_authors_box]

সংস্কার অবশ্যই লাগবে, আর সেজন্য কাঠামো তৈরির প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে তিনি এও সতর্ক করেছেন, নির্বাচিত সরকার ছাড়া কোনও সংস্কারের বৈধ্যতা দেওয়া যাবে না।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ‘রাজবন্দির জবানবন্দি’ শীর্ষক গ্রন্থের প্রকাশনা উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, “আমরা যেন বিভক্তির রাজনীতি না করি। এখন যেটা প্রয়োজন- দেশকে বাঁচানোর জন্য, গণতন্ত্রকে ফিরে পাবার জন্য আমাদের প্রয়োজন ঐক্য; স্ট্রাকচার তৈরি করেন, সংস্কার অবশ্যই লাগবে।

“কিন্তু সেই সংস্কারটা হচ্ছে যে, এর পেছনে যে শক্তিটা লাগবে, সেটা হচ্ছে যে, নির্বাচিত পার্লামেন্ট, নির্বাচিত সরকার; এটা ছাড়া সংস্কারকে কখনও লেজিটেমেসি দিতে পাবর না আমরা। এটা ফ্যাসিস্টরা পারবে।”

‘বিভাজন নয়, ঐক্য চাই’

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা আহ্বান জানাব, দেশের সমস্ত গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষদেরকে, স্বাধীনতাকামী মানুষদেরকে যে, আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন, বিভাজিত হবেন না। আমি রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের যারা যে যেখানে কাজ করছেন সবাইকে অনুরোধ করব, বিভাজন সৃষ্টি করবেন না।

“আমি জানি না, কিছু মানুষ একেবারে যেন ডেসপারেট হয়ে গেছে যে, তারা দেশকে ভাগ করে ফেলবে, জনগণকে বিভক্ত করবে এবং বিভিন্ন রকম কথা বলছে, বিভিন্ন রকম উস্কানিমূলক কথা বলছে। আপনারা দয়া করে ওগুলোর মধ্যে যাবেন না।”

তারেক জিয়া দেশে ফিরবেন  

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব মুক্ত হবেন কিছুদিনের মধ্যে, পুরোপুরি সব মামলা থেকে; তিনিও আমাদের মাঝে উপস্থিত হবেন ইনশাল্লাহ।

“আমাদের যে ত্যাগ, আমাদের জনগণের, আমাদের ‍যুবকদের, আমাদের স্বেচ্ছাসেবকদের, আমাদের ছাত্রদের, আমাদের মহিলাদের- এটা কোনও মতেই বৃথা যাবে না, বৃথা যায়নি। আমরা অন্তত ফ্যাসিবাদকে সরাতে পেরেছি, ওদেরকে তাড়াতে পেরেছি।”

তিনি বলেন, “হাসিনা পালানোর পর থেকে আমরা কেন জানি নিজেদর মধ্যে পুরো বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে পারছি না, ঐক্যের জায়গাটাতে থাকতে পারছি না। দেখুন না- কী একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে ক্ষমতায় টিকে থাকবার জন্য।

“আরে ক্ষমতায় তো টিকে থাকবে তখনই, যখন তুমি এটাকে তুমি স্যাটেল করতে পারবে। তার জন্য আমরা বারবার বলছি সংস্কার। এই সংস্কার তো আমরাই শুরু করেছি, প্রথম সংস্কারের কথা বলেছি। জিয়াউর রহমান সাহেব প্রথম সংস্কার করেছে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে এসেছিলেন।”

তিনি বলেন, “এই যে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা- মাত্র চারটা ছাড়া সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল। জিয়াউর রহমান সাহেব এসে সব সংবাদপত্র খুলে দিয়েছিলেন; একটা বদ্ধ অর্থনীতি ছিল, সেখানে তথাকথিত ভ্রান্ত সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিকে বাদ দিয়ে সেখানে তিনি একটা মিশ্র বা মুক্ত অর্থনীতির মতবাদ নিয়ে এসেছিলেন। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের যে দর্শন, সেই দর্শন ইটসেলফ সংস্কারের মূলকথা এবং ১৯ দফা কর্মসূচি ছিল সংস্কারের বড় কর্মসূচি। আমাদেরকে এগুলো সামনে নিয়ে আসতে হবে।”

‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে’

উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার লন্ডনে যেতে রাজকীয় বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর জন্য কাতারের আমির প্রতি কর্তৃজ্ঞতা প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেলেন এবং গেলেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদা নিয়ে। তাকে সি অফ করেছে, পথে পথে লক্ষ লক্ষ মানুষ বিদায় জানিয়েছে এবং তিনি আন্তর্জাতিকভাবে যে সন্মানটুকু পেয়েছেন, কোথাও বাধা পেতে হয়নি আমাদেরকে। আমরা সেখানেই বলেছি, আমাদের এই ভিসা দরকার, সাথে সাথে করে দিয়েছে।

“ম্যাডামের প্রতি সম্মান স্বরূপ কাতারের আমির যে বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছেন, সেজন্য আমিরের প্রতি কতৃজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি ধন্যবাদ জানাই ব্রিটিশ সরকারকে, তারা সেখানে তার (খালেদা জিয়া) লন্ডনে যাওয়ার ব্যাপারটা নিশ্চিত করেছেন এবং সেখানে আমাদের চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবসহ যারা আছেন, তারা সেখানে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা শুরু করতে পেরেছেন।” 

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মিথ্যা মামলার শুনানিকালে আদালতে দেওয়া তার জবানবন্দির ওপর রচিত হয়েছে ‘রাজবন্দির জবানবন্দি’। দ্য প্যাট্রিয়ট প্রকাশনা সংস্থার ৩০০ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থের দাম ২০০ টাকা।

আদালতে খালেদা জিয়া যেসব জবানবন্দি দিয়েছেন তা গ্রন্থে রূপ দিতে নেপথ্যে বিএনপির আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুর রেজ্জাক খান এবং সাংবাদিক শফিক রেহমান ও খালেদা জিয়ার সাবেক প্রেস সচিব সাংবাদিক মারুফ কামাল খানের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা স্মরণ করেন বিএনপি মহাসচিব।   

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সাবেক সচিব ইসমাইল জবিহউল্লাহর সভাপতিত্বে ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সাংবাদিক শফিক রেহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, কেন্দ্রীয় নেতা আমিরুজ্জামান খান শিমুল, মাহমুদা হাবিবা, বিগত সরকারেরে আমলে নানাভাবে নির্যাতিত অললাইট অ্যাক্টিভিস্ট হুমায়ুন কবীর, রেজাউর রহমান, ফসিউল আলম, কাজল রহমান, শিপন মোল্লা, ওয়াসিম ইফতেখারুল হক, আবদুর রহমান নূর রাজন ও রেজওয়ানুল হক শোভন বক্তব্য রাখেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত