অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ বলেছে, রিসেট বাটনে চাপ দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস মুছে ফেলা যাবে না।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে একথা বলেছে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা হারানো দলটি। আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজে এই বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করা হয়। জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেন, ছাত্ররা বলেছে, তারা রিসেট বাটন পুশ করেছে। অতীত নিশ্চিতভাবে চলে গেছে।
এ প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সম্প্রতি ড. ইউনুস বাংলাদেশের ইতিহাসে রিসেট বাটন দিয়ে দেশের ইতিহাস মুছে ফেলার কথা বলছেন। যা খুবই আপত্তিজনক এবং নিন্দনীয়। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাস মুছে ফেলার জন্য যতই রিসেট দেন না কেন, দেশের মৌলিক ও অস্তিত্বের ইতিহাসগুলো মুছার ক্ষমতা ওনার নাই।
“মুছতে পারলেতো বাংলাদেশই থাকবে না। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ, ত্রিশ লক্ষ শহীদ, জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা, জাতির পিতা হচ্ছে বাংলাদেশের মৌলিক ভিত্তি, আমাদের জাতিগত অস্তিত্বের জায়গা। দেশকে তিনি শাসন শোষণ যাই করুন, এসব গৌরবময় অধ্যায় মেনে নিয়েই করতে হবে।”
সাক্ষাৎকারে ভয়েস অব আমেরিকার পক্ষ থেকে বলা হয়, ৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়। এরপর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি, যেটা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে পরিচিত, সেটা বিনষ্ট করা হয়। ১৫ আগস্ট শোক দিবস বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকার। এনিয়ে সমালোচনা আছে। আবার অনেকে বলছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তারা ফ্যাসিবাদের আইকন হিসেবে দেখে। এ কারণেই ঘটনাগুলো ঘটেছে। দীর্ঘদিন জাতির জনক হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান স্বীকৃত।
এসব বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাইলে ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক আনিস আহমেদকে ড. ইউনূস বলেন, “আপনি পুরনো দিনের কথাবার্তা বলছেন। এর মধ্যে একটা গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেছে। আপনার বোধহয় স্মরণে নেই। আপনি এমনভাবে বলছেন যেন এসব ঘটনা ঘটেই নাই।
“নতুন ভঙ্গিতে যা হচ্ছে, সেটা দেখতে হবে। কত ছেলে প্রাণ দিল, সেটা নিয়ে আপনার কোনও প্রশ্ন নেই। ছাত্ররা বলেছে, আমরা রিসেট বাটন পুশ করেছি। অতীত নিশ্চিতভাবে চলে গেছে। এখন নতুন ভঙ্গিতে আমরা গড়ে তুলব। দেশের মানুষও তা চায়। এর জন্য আমাদের সংস্কার করতে হবে।”
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার দিন থেকে ভারতে অবস্থান করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলটি বলছে, শেখ হাসিনা যেকোনও পরিস্থিতিতে দেশবাসীর পাশে আছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “জানি আপনারা ভালো নেই। দেশের সার্বিক অবস্থা চারদিকে সবার মাঝে এক সংকটময় অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং দলের সভানেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা যেকোনও পরিস্থিতিতে আপনাদের পাশে আছেন এবং থাকবে ইনশাল্লাহ।”
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার কারণ তুলে ধরে দেশবাসীর উদ্দেশে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আপনারা সবই জানেন, সবই দেখেছেন। এখন হয় তো সবকিছু অনুধাবন করতে পারছেন, কী পরিস্থিতিতে দেশরত্ন শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছিলেন। ষড়যন্ত্রকারীরা আরও লাশ চেয়েছিলে। তিনি চাননি আর কোন বাবা-মায়ের বুক খালি হোক। তাই সময়ের প্রয়োজনে এই সাময়িক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
“আপনারা দেখেছেন, মহামান্য আদালতের রায় শিক্ষার্থীদের সব দাবীর পক্ষেই গিয়েছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও আমাদের সরকার তাদের সকল দাবি মেনে নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচারের নিশ্চয়তা দিয়েছিল। নিহত সকল পরিবারের পাশে দাড়িয়েছিল, আহতদের বিনা খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিল।
“তারপরও কেন এই অরাজকতা, এতো হত্যা, এতো ধ্বংসযজ্ঞ করা হলো? কারণ, এর পিছনে ছিল ক্ষমতা দখলের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক এক ষড়যন্ত্র।”
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আপনারা দেখেছেন ১৬ জুলাই থেকেই ছাত্রদের আন্দোলনকে হাইজ্যাক করে কীভাবে দেশের রাজনৈতিক অপশক্তি ও বিদেশি এজেন্টরা কীভাবে হত্যা ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। এমনকি ছাত্রদের উপর ৭.৬২ রাইফেল ব্যবহার করে গুলি চালিয়ে পরিস্থিতিকে অগ্নিগর্ভ করে তোলা হয়।
“কীভাবে ঢাকা শহরে অবস্থিত রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। কীভাবে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, বৌদ্ধ মঠে হামলা ও ভাংচুর চালানো হয়েছে। কত নিষ্ঠুরভাবে পুলিশ ও সাংবাদিক হত্যা এবং মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মীদের লাঞ্ছিত করা হয়েছে।
“পাঁচই আগস্ট কীভাবে বাঙালি জাতির মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের সুতিকাগার, জাতীর পিতার স্মৃতি বিজড়িত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ধ্বংস করা হয়েছে।”
বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন জাতীয় সংসদ ভবন ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ বলেছে, এছাড়া প্রধান বিচারপতির বাসভবন, নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সরকারি, বেসরকারি অফিস আদালত বাসভবন পোড়ানো ও লুটপাট করা হয়েছে।
“আপনারাই ভেবে দেখুন, এইসব সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞের সাথে কোটা আন্দোলনের কী সম্পর্ক ছিল। যে পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে, পরিকল্পিতভাবে কীভাবে তাদেরকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে এবং ৪৫০টি থানা ও অস্ত্রাগার লুট করা হয়েছে। নিষ্ঠুরভাবে একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা পুলিশ অফিসারকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে।”
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “কতজন পুলিশকে হত্যা করা হয়েছে- এই সংখ্যাও জাতির সামনে এখনও সরকার প্রকাশ করছে না। এরসবই ছিল ক্ষমতা দখলের একটি ষড়যন্ত্র। তখন সরকার আরও কঠোর হলে হয়তো আরও লাশ পড়তো, আরও অনেক বাবা-মায়ের বুক খালি হতো। তাই মানুষের জানমাল রক্ষায় দেশরত্ন শেখ হাসিনা এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।”
বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ আরও বলেছে, “সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের একটি অনুষ্ঠানে এই অবৈধ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস বলেছেন, এই আন্দোলন একদিনে সৃষ্টি হয়নি। এর পিছনে দীর্ঘ পরিকল্পনা ছিল এবং এর মাস্টারমাইন্ড হিসাবেও একজনকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।
“তিনি বলেছেন, অনেকদিনের পরিকল্পনার ফসল নাকি তার এই সরকার। এ থেকে স্পষ্টই বুঝা যাচ্ছে এটা ছাত্রদের কোটার আন্দোলন ছিল না। তাই সকল দাবী মেনে নেওয়ার পরও তারা পরিকল্পিতভাবে সারাদেশে অরাজকতা চালিয়েছে।
“দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি দেখে আপনারাও নিশ্চয় এখন অনুধাবন করতে পারছেন। আপনারা বুঝতে পারছেন, কেন সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে সংরক্ষিত করে কার্যত জনগণের যাতায়াতের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। কেন পার্বত্য চট্টগ্রামে পরিকল্পিতভাবে একের পর এক সহিংসতা তৈরি করা হচ্ছে।”
বিবৃতিতে দেশবাসীর উদ্দেশে আরও বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আপনাদের আশ্বস্ত করছে, আমাদের বুকে এক বিন্দু রক্ত থাকতে বাংলাদেশের মাটিতে অন্য কোনও দেশের ঘাঁটি হবে না। এই দেশ ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত ও আড়াই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে কেনা। এই দেশ বাঙালির ২৪ বছরের দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল। অন্য কোনও দেশের পতাকা এই মাটিতে উড়তে দেয়া হবে না। প্রয়োজনে আরেকটি যুদ্ধ হবে, স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ।”
বিবৃতিতে ‘শিক্ষকদের অপমান’ করার প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগ বলেছে, “আপনারা দেখেছেন, সারাদেশে কীভাবে শিক্ষক সমাজকে অপমান করা হয়েছে। এমনকি শিক্ষদেরকে জুতার মালা পরিয়ে প্রহার করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। শিক্ষকদেরকে শপথ বাক্য পাঠ করাচ্ছেন ছাত্ররা, শিক্ষকদের চেয়ার দখল করে সেখানে শিক্ষার্থীরা বসে আছে।”
এটা কি আমাদের সংস্কৃতি- এ প্রশ্ন রেখে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “শিক্ষকদের শ্রদ্ধা করার যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই সংস্কৃতি কেন নষ্ট করা হয়েছে? কাদের স্বার্থে নষ্ট করা হয়েছে? অভিভাবকদের কাছে অনুরোধ, আপনারা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচান।”
মসজিদে পরিকল্পিত হামলার অভিযোগ করে দেশবাসীর উদ্দেশে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আপনারা দেখেছেন, আল্লাহর পবিত্র ঘর মসজিদও ভাংচুর ও লুটপাটের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। খোদ রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে পর্যন্ত লাঞ্ছিত করা হয়েছে।
“এমনকি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজে খুতবারত অবস্থায় কিভাবে ভাংচুর, হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই সবই করা হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে। দেশে একটা অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে, স্থিতিশীলতা রক্ষার নামে বাইরের কোনও দেশকে বাংলাদেশে ঘাঁটি তৈরির সুযোগ করে দেওয়া।”
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ ৫ আগস্টের পর যেসব হামলা, হত্যাকাণ্ড হয়েছে তার বিচার দাবি করেছে।
দলটি বলেছে, “পাঁচই আগস্টের পর দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর যেভাবে নির্মম হত্যাকাণ্ড, অত্যাচার ও নির্যাতন চালানো হয়েছে তা খুবই ন্যাক্কারজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। নির্বিচারে তাদের উপাসনালয়, ঘর বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে। আমরা ধন্যবাদ জানাই, সনাতন ধর্মাবলম্বীদেরকে, তারা প্রতিবাদ করেছেন। ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়িয়েছেন। আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকুন।
“আপনারা দেখেছেন, শান্তির ধর্ম ইসলাম যারা এই দেশে প্রচার ও প্রসার করেছেন, সেই পীর-আউলিয়াদের মাজার কীভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। আহমদিয়া সম্প্রদায়ের উপর হামলা চালানো হয়েছে, তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে। এইসব কিসের লক্ষণ?
“এই সবকিছুর সুষ্ঠ তদন্ত ও দোষীদের বিচার অবশ্যই করতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের উপর্যুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। নতুবা উদ্ভুত পরিস্থিতির দায় এই অবৈধ ইউনুস সরকারকেই বহন করতে হবে।”
শেখ হাসিনার সরকার তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ থেকে প্রায় পঁচিশ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতে উন্নীত করেছিল- এ দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “শুধু সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে আজ দেশের মানুষ বিদ্যুতের অভাবে কষ্ট করছে। এই কয়দিনেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। অথচ, সেই দিকে কোনও নজর নেই, ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে অবৈধ ইউনুস সরকার আওয়ামী লীগ নিধনেই বেশি ব্যস্ত।”
প্রশাসনে পরিকল্পিতভাবে অসন্তোষ তৈরির অভিযোগ তুলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ন্যায্য দাবী নিয়ে আন্দোলন করায় কতজন আনসার সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে, তা কোনও মিডিয়াও প্রকাশ করতে সাহস পাচ্ছে না।”
পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগ বলেছে, “বেতন ভাতা নিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিকরা আন্দোলন করায় ইতিমধ্যে দুজন শ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে। অসংখ্য শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে।”
‘মব জাস্টিস’র সমালোচনা করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সোস্যাল মিডিয়া খুললেই আপনারা দেখবেন, আমাদের মা বোনদেরকে পথে ঘাটে কীভাবে অপমান, অপদস্ত করা হচ্ছে। নারী শিশু কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। দিন দুপুরে ডাকাতি, চাঁদাবাজি ছিনতাই এখন নিত্য নৈমেত্তিক ব্যাপার। এর কোনও প্রতিকার নেই। এর কোনও কিছুই মিডিয়াতেও প্রচার করতে দেয়া হচ্ছে না “
এই সরকার মিডিয়া অফিস দখলে বিশ্ব রেকর্ড করেছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ বলেছে, “এই পর্যন্ত সারাদেশে দেড় শতাধিক সাংবাদিকের নামে হত্যা মামলা দিয়েছে। তিন শতাধিক সাংবাদিককে চাকুরিচ্যুত করেছে। এরাই আবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে বড় বড় কথা বলে।”
৫ আগস্টের পর সারাদেশে সহস্রাধিক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে নির্বিচারে হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে বিবৃতিতে।
চাঁদাবাজি, বসতভিটা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল ও নির্যাতনের অভিযোগ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “সবই হচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডগায়। সাধারণ মানুষও চাঁদাবাজি ও নির্যাতন থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। হ্যাঁ, কেউ যদি অপরাধী হয়, দেশের আইন অনুযায়ী এর বিচার হোক। আমাদের সরকারও দলীয় অনেক অপরাধীকে বিচারের আওতায় এনেছিল।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই অবৈধ সরকার ক্ষমতা দখলের পরপরই দেশের সকল শীর্ষ সন্ত্রাসী ও আন্তর্জাতিকভাবে চিহ্নিত সকল জঙ্গিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী প্রহরায় মুক্তি দিয়ে আরও বেশি অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। কারণ সন্ত্রাসীরা বুঝে গেছে, অপকর্ম করলে তাদের কোনও শাস্তি হবে না।
“আমরা হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, সাধারণ মানুষসহ আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা বন্ধ ও হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচার করতে হবে এবং এখনই এই নারকীয় অত্যাচার, নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “কেউ যদি মনে করেন অত্যাচার, নির্যাতন করে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করে দিবেন তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করেন। আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে, এই দেশের জন্মের সাথে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক। দেশের ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগ এর স্বমহিমায় ফিরে আসবে, দেশের অসমাপ্ত উন্নয়নের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে একটি উন্নত জাতি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করবে।”