মিয়ানমারের মংডু শহর থেকে প্রায় দুই বছর পরে ১৯ টন আতব চাল নিয়ে এল একটি ট্রলার।
মঙ্গলবার বিকালের দিকে ট্রলারটি কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে এসে পৌঁছায়।
স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট টেকনাফ লিমিটেডের ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন একথা নিশ্চিত করেন।
আনোয়ার হোসেন বলেন, এর আগে ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মেসার্স নিউ বড় বাজার শপিংমলের নামে মিয়ানমার থেকে ২৩৭ টন চাল আমদানি করা হয়। এরপর আর সেখান থেকে কোনও ধরনের চাল আমদানি হয়নি। প্রায় ২ বছর পরে মেসার্স জিন্না অ্যান্ড ব্রাদার্সের নামে একটি চাল ভর্তি ট্রলার স্থলবন্দরে এসে পৌঁছায়।
চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স জিন্না অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী শওকত আলী চৌধুরী বলেন, মোহাম্মদ সেলিম নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী মিয়ানমার থেকে ১৯ টন চাল এনেছেন। তবে খাদ্য অধিদপ্তরের অনুমতির বৈধ কাগজপত্র নিয়ে জটিলতা থাকায় চালগুলো এখনই সরবরাহ করা যাচ্ছে না।
চাল আমদানির বিষয়ে মোহাম্মদ সেলিম বলেন, মিয়ানমার থেকে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা চাল কেনা হয়েছে ২ হাজার ৩০০ টাকা দরে। পরিবহন, শ্রমিক ও বন্দর খরচসহ আরও ১০০ টাকা খরচ গুনতে হচ্ছে।
চালগুলো চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পাঠানোর কথা। এক্ষেত্রে সরকারি সহযোগিতা পাওয়া গেলে আরও চাল আনা হবে বলেও জানান তিনি।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি জান্তা বাহিনীর সঙ্গে সেখানকার জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) যুদ্ধ শুরু হলে তার প্রভাব পড়ে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানিতে।
সীমান্ত বাণিজ্যের আওতায় মিয়ানমারের মংডু শহর, আকিয়াব ও ইয়াঙ্গুন বন্দর থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে হিমায়িত মাছ, বিভিন্ন প্রকারের কাঠ, শুটকি, সুপারি, নারকেল, আচারসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়। আর বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে যায় তৈরি পোশাক, আলু, প্লাস্টিক পণ্য, সিমেন্ট, বিস্কুট, চানাচুর, চিপস ও কোমলপানীয়।
স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, যুদ্ধ শুরুর আগে শুধু ইয়াঙ্গুন বন্দর দিয়েই প্রতি মাসে ৮ থেকে ১৫টি ট্রলার টেকনাফে আসতো। সংঘাতের পর তা নেমে আসে ৬ থেকে ৮টিতে।
গত ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর শতভাগ নিয়ন্ত্রণে নেয় আরাকান আর্মি(এএ)। এরপর নাফ নদীতে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে তারা। বাংলাদেশও নৌ যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এতে বন্ধ হয়ে পড়ে দুই দেশের পণ্য লেনদেন।
এএ মংডুর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর মিয়ানমার থেকে পণ্যবাহী কোনও কার্গো ট্রলার ও জাহাজ টেকনাফ স্থলবন্দরে আসেনি, এমনকি মালামাল খালাস করা কার্গো ট্রলার ও জাহাজ মিয়ানমারের ফেরত যেতে পারেনি। মিয়ানমার থেকে পণ্য নিয়ে আসা তিনটি ট্রলার এখনও স্থলবন্দরে নাফ নদীতে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে।
মংডু থেকে ১৯ টন চাল আসার কথা জানিয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা বি এম আব্দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, ট্রলারটি স্থল বন্দরের জেটিতে নোঙ্গর করেছে। আইজিএম (আমদানির প্রাথমিক বিবরণীর তালিকা) জমা দিলে পণ্য খালাসের পাশাপাশি সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।