বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করেছেন দলটির এক সময়কার মিত্র ও জোটসঙ্গী দল বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
জামায়াতকে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে দলটি।
রবিবার ঢাকার চন্দ্রিমা উদ্যানে দলের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, “৫ আগস্টের আগে ব্যাংক লুট ও দখল করেছিল আওয়ামী লীগ আর ৫ আগস্টের পর ব্যাংক দখল করছে একটি ইসলামী দল।
“শুধু পার্শ্ববর্তী দেশই অপপ্রচার করছে না, দেশের দুই-একটি রাজনৈতিক দলও ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। ৫ আগস্টের পর একটি রাজনৈতিক দলের আত্মসাৎ দেখেছে জনগণ। কারা পায়ের রগ কাটে, তাদের চেনে জনগণ। এখন ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে একাত্তরের বিরোধিতাকারী জামায়াত।”
১৯৯৯ সালে জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোটকে নিয়ে চার দলীয় জোট গঠন করে বিএনপি। ২০০১ সালে এই জোট নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় গেলে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো মন্ত্রিসভায় স্থান হয় জামায়াতের দুই নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মো. মুজাহিদের। যদিও পরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
পরবর্তীকালে বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট পরিণত হয় ২০ দলীয় জোটে। ২০১৪ সালে এই জোট নির্বাচন বর্জন করলে জামায়াতও নির্বাচনে যায়নি। ২০১৮ সালে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্ব বিএনপিসহ কয়েকটি দল যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিল তাতে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন জামায়াতের প্রার্থীরা।
কারণ ২০১৮ সালেই জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
মূলত ২০১২ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার কাজ শুরু হলে কোণঠাসা হয়ে পড়তে শুরু করে জামায়াত। ধীরে ধীরে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্কেও আসে দূরত্ব।
শেখ হাসিনার আমলে যারা লুট করেছে সেই এস আলমদের উত্তরসূরি হয়ে অনেকেই এখন ব্যাংক দখল করছে অভিযোগ করে রবিবার রিজভী বলেন, “পাড়া মহল্লায় টার্মিনাল দখল, টেন্ডারবাজিসহ নানান কিছু দখল করেছে একটি দল।”
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে জামায়াত শেখ হাসিনাকে ক্ষমা করতে চায় বলেও জানান বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, “ইসলাম নিয়ে রাজনীতি করে জামায়াত। কিন্তু ইসলাম মানে তো বারবার মোনাফেকি করা নয়!”
বিএনপি কখনোই জনগণের প্রতি অঙ্গীকার থেকে পিছিয়ে আসেনি উল্লেখ করে রিজভী বলেন, “১৯৭১ সালে থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত গণতন্ত্রের প্রশ্নে বিএনপি কখনও মাথা নত করেনি।”
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, সহ-অর্থ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, ডা. জাহিদুল কবির, ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়ালসহ অন্যরা।