সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীকে পাঁচ দিন নিজেদের হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে প্রায় দুই বছর আগে বিএনপির কর্মী মকবুলকে গুলি করে হত্যার অভিযোগের বিষয়ে।
এ ঘটনায় হওয়া একটি মামলায় রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকার গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল সাবের হোসেনকে, সোমবার যাকে হাজির করা হয় আদালতে।
ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মাহবুবুল হকের আদালতে সাবেক এই মন্ত্রীকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চান পল্টন মডেল থানার এসআই নাজমুল হাচান।
এসময় তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবী। তবে রাষ্ট্রপক্ষ করে জামিনের বিরোধীতা। পরে শুনানি শেষে বিচারক সাবের হোসেনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
যে মামলায় সাবের হোসেন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর একদফা দাবি আদায়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এর আগে ৭ ডিসেম্বর ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ, মেহেদী হাসান ও বিপ্লব কুমার বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে অভিযান চালায়।
কার্যালয়টিতে ভাংচুর চালানোর পাশাপাশি আশপাশে থাকা নেতাকর্মীদের ওপরও হামলা চালানো হয়। সেসময় মকবুল হোসেন নামে এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
সদ্য বিলুপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের এই সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন সাবের হোসেন চৌধুরী। তীব্র ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর সংসদ বিলুপ্ত করে রাষ্ট্রপতি। ফলে অন্য সবার মতো পদ হারান সাবের হোসেন চৌধুরীও।
১৯৬১ সালে ফেনীতে জন্ম নেওয়া এই রাজনীতিবিদ ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
লন্ডনের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকার স্টাডিজ থেকে রাজনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নেন সাবের হোসেন চৌধুরী। এছাড়া তিনি ওয়েস্টমিনস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিষয়ে ডিপ্লোমা করেন।
সাবের হোসেন চৌধুরী ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ছিলেন। তিনি দায়িত্ব পালনকালেই ২০০০ সালের জুনে বাংলাদেশ আইসিসির পূর্ণ সদস্য পদ পায়, মেলে টেস্ট স্ট্যাটাসও।
২০০১ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত হন সাবের হোসেন চৌধুরী। ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দলের সাংগঠনিক সম্পাদক-১ হিসেবে ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব পালন করেন। ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সচিবও।
১৯৯৯ সালে তিনি প্রথম নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় যুক্ত হন। পরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পালন করেন।