দুঃসময় যেন পিছু ছাড়ছে না বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের। বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটির কারণে ক্রিকেটে বল করতে পারবেন না বলে ক’দিন আগেই পেয়েছেন আইসিসির নির্দেশনা। এবার চেক ডিজঅনার মামলায় তাকে ডেকেছে আদালত।
বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মাহবুবুল হক সাকিব আল হাসানসহ চারজনের নামে সমন জারি করেছে। নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ১৮ জানুয়ারি তাদের সশরীরে আদালতে হাজির হতে হবে বলে জানিয়েছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী খন্দকার শাহরিয়ার আলম।
তিনি বলেন, “আজ এই মামলায় শুনানি শেষে আদালত সাকিব আল হাসানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে।”
আইএফআইসি ব্যাংকের করা চেক ডিজঅনার মামলার অপর আসামিরা হলেন– সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গাজী শাহাগীর হোসাইন, পরিচালক ইমদাদুল হক ও মালাইকার বেগম।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি সাকিব আল হাসানসহ চার জনের বিরুদ্ধে গত ১৫ ডিসেম্বর চেক ডিজঅনার মামলাটি করেন আইএফআইসি ব্যাংকের রিলেশনশিপ অফিসার সাহিবুর রহমান। মামলায় ৪ কোটি ১৫ লাখ টাকার চেক ডিজঅনারের অভিযোগ আনা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সাতক্ষীরার সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন সাকিব। ২০১৭ সালে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে ১ কোটি এবং টার্ম লোন হিসেবে দেড় কোটি টাকা আইএফআইসি ব্যাংকের বনানী শাখা থেকে নেয় ওই প্রতিষ্ঠান।
পরে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে নেওয়া টাকা সময়মতো পরিশোধ না করায় ব্যাংকটি এই টাকা মেয়াদি ঋণে পরিবর্তন করে। টাকা ফেরত চেয়ে কয়েক দফা নোটিস দেওয়ার পর এ বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ব্যাংকটিকে ৪ কোটি ১৫ লাখ টাকার দুটি চেক দেয় সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেড।
তবে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টে যথেষ্ট টাকা না থাকায় চেক বাউন্স করে। পরে ঋণের টাকা ফেরত চেয়ে আইএফআইসি ব্যাংকের বনানী শাখা নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে আইনি নোটিস পাঠায়। নোটিস পাঠানোর ৩০ দিন পরও টাকা ফেরত না পাওয়ায় মামলা করে আইএফআইসি ব্যাংক।
বিদেশি লিগ খেলার কারণে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের সরকার পতনের আগে থেকেই বিদেশে ছিলেন সাকিব। এরপর থেকে আর দেশে ফেরা হয়নি তার। এর মধ্যে গত ২২ আগস্ট দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় আসামি করা হয় সাকিবকে। পরে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতেও আসে তার নাম।
মাঝে গত সেপ্টেম্বরে ভারতে টেস্ট সিরিজ খেললেও এরপর থেকেই জাতীয় দলের বাইরে আছেন সাকিব আল হাসান। ওই সিরিজের মাঝপথে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণাও দেন তিনি। সে সময় জানিয়েছিলেন, অক্টোবরে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে শেষবারের মতো মাঠে নামতে চান তিনি, অবসর নিতে চান ঘরের মাঠ থেকে।
তবে সে ইচ্ছা পূরণ হয়নি দীর্ঘ সময়জুড়ে বিশ্বে অলরাউন্ডার হিসেবে সব ফরমেটে শীর্ষস্থান দখলে রাখা সাকিব আল হাসানের। নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় থাকায় সে সময় দেশে ফিরতে পারেননি সাকিব। যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাই এসে আবার ফিরে যেতে হয় তাকে।
সর্বশেষ ফ্র্যাঞ্জাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্ট নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন সাকিব। তবে সম্প্রতি ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড তার বোলিংয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর আইসিসি জানায়, বোলিং অ্যাকশন না শুধরে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে বল করতে পারবেন না তিনি।