Beta
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

দুর্নীতির মামলার বিচারে চাই পৃথক আদালত

মঈদুল ইসলাম। প্রতিকৃতি অঙ্কন: সব্যসাচী মজুমদার

ঘটনা হলো, তৎকালীন হবিগঞ্জ মহকুমার চুনারুঘাট থানার রানিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের এক মেম্বার ১৯৬৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর ৮ জন কৃষকের নামে জাল টিপ স্বাক্ষর দিয়ে কৃষকদের মধ্যে বিতরণযোগ্য ৩৫২ টাকা ৬৯ পয়সা মূল্যের সার থানা কৃষি কর্মকর্তার দপ্তর থেকে উত্তোলন করেন বলে অভিযোগ করে হবিগঞ্জের তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরোর এক সহকারী পরিদর্শক ১৯৬৮ সালের ২৯ মে থানায় এজাহার ঠুঁকে দেন এবং তিনিই তদন্ত করে চার্জশিট দাখিল করলে ১৯৭০ সালে সিলেটের সিনিয়র স্পেশাল জজ মামলাটি আমলে নিয়ে বিচারের জন্য চট্টগাম বিভাগীয় স্পেশাল জজে পাঠিয়ে দেন।

তখন মহকুমাগুলোসহ পুরো সিলেট জেলার (বর্তমানের সিলেট বিভাগ) ওপরেও বিচারের এক্তিয়ার চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজের ছিল। এটাও নিশ্চয় সবার জানা যে, ২০০৪ সালের ২১ নভেম্বর দুদক অর্থাৎ, দুর্নীতি দমন কমিশন গঠিত হওয়ার আগে পর্যন্ত ১৯৫৭ সালের ১ এপ্রিল থেকে দুর্নীতি দমনের কাজে ছিল দুর্নীতি দমন ব্যুরো।  

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ সেই মামলায় ১৯৭১ সালের ২৩ জানুয়ারি বিচার শেষ করে আসামি ইউপি মেম্বারকে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং দুই মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩৫০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে অতিরিক্ত এক মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। জরিমানায় বিভাগীয় স্পেশাল জজ সাহেব ২ টাকা ৬৯ পয়সা কেন কিভাবে কমালেন তা বোধগম্য নয়। কারণ, সে রায়ের কপি নাই আমার কাছে। আমি জানতে পারছি একটি ল-জার্নালে (৩০ অ্যাপেক্স ল রিপোর্ট ১৮৫ পৃষ্ঠা) প্রকাশিত হাইকোর্ট বিভাগের রায়টি দেখে। জরিমানা কমাবার বিষয় নিয়ে কথাটা উঠছে কারণ, স্পেশাল জজের সৃষ্টি যে-আইনে এবং তাকে এক্তিয়ার ও ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যে-আইনে সেই ‘ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট ১৯৫৮’-এর ৯ ধারায় বলা হয়েছে, স্পেশাল জজ কাউকে দোষী সাব্যস্ত করলে তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হোক বা না হোক, জরিমানা তাকে করতেই হবে এবং যত টাকার দুর্নীতি সে করেছে তার চেয়ে কম টাকার জরিমানা মোটেও করা যাবে না।

দুদক সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষ এক্তিয়ারসম্পন্ন কিছু বেঞ্চও হলো হাইকোর্ট বিভাগে। কিন্তু, ২০২১ সালে দেখা গেল, ১৯৭১ সালের সেই ৮১ নম্বর আপিল যেইকার সেই অনিষ্পন্ন অবস্থায় হাইকোর্টেই পড়ে আছে ৫০টা বছর। দেখাটা পাওয়া গেল দীর্ঘদিনের অনিষ্পন্ন পুরাতন ফৌজদারি আপিল-রিভিশন শুনানি ও নিষ্পত্তির নবসৃষ্ট বেঞ্চে। ১৯৭১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জামিন পেয়ে সেই যে গেছে আসামি-আপিলকারী ও তার উকিল, আর পাত্তা নেই তাদের।

এই কমের বিষটি হাইকোর্টে ওঠেনি। হাইকোর্টের রাগ উঠেছে অন্য কারণে। ১৯৭১ সালের ২৩ জানুয়ারির সেই দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে দণ্ডিত আসামি ১৯৭১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ঢাকা হাইকোর্টে আপিল করে (ক্রিমিনাল আপিল ৮১/১৯৭১) ১৯ ফেব্রুয়ারি জামিনে মুক্তি নেয়। তখন হাইকোর্ট বিভাগ ছিল না, ছিল ঢাকা হাইকোর্ট, আর তার ওপরে ছিল পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট। সেই পাকিস্তান গেল ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ, হলো স্বাধীন বাংলাদেশ, স্বাধীনতা সংগ্রামের মুক্তিযুদ্ধে বিজয় হলো ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। হলো বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, ওপরে রইল আপিল বিভাগ, গোড়ায় রইল হাইকোর্ট বিভাগ। দিন গড়িয়ে, মাস গড়িয়ে, বছরের পর বছর যায়। থানা থেকে উপজেলা হলো চুনারুঘাট, মহকুমা থেকে জেলা হলো হবিগঞ্জ, জেলা থেকে বিভাগ হলো সিলেট। দুর্নীতি দমন ব্যুরো থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন হলো দুদক।

দুদক সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষ এক্তিয়ারসম্পন্ন কিছু বেঞ্চও হলো হাইকোর্ট বিভাগে। কিন্তু, ২০২১ সালে দেখা গেল, ১৯৭১ সালের সেই ৮১ নম্বর আপিল যেইকার সেই অনিষ্পন্ন অবস্থায় হাইকোর্টেই পড়ে আছে ৫০টা বছর। দেখাটা পাওয়া গেল দীর্ঘদিনের অনিষ্পন্ন পুরাতন ফৌজদারি আপিল-রিভিশন শুনানি ও নিষ্পত্তির নবসৃষ্ট বেঞ্চে। ১৯৭১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জামিন পেয়ে সেই যে গেছে আসামি-আপিলকারী ও তার উকিল, আর পাত্তা নেই তাদের। হাইকোর্ট থেকে নোটিশ করেও সেই উকিল সাহেবকে পাওয়া যায়নি। জীবিত আছেন কিনা সেও এক প্রশ্ন! আপিলে মক্কেলের থাকার দরকার হয় না, তার উকিল সাহেব থাকলেই চলে।

বাদী-রেসপন্ডেন্ট সরকারপক্ষে কোনো এএজি (সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল) কিংবা ডিএজি (ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল) কেউ আর শুনানির জন্য চাপাচাপি করতে আসেননি। সেকালে দুর্নীতি দমন ব্যুরোকে পক্ষ করা হতো না, সরকারই থাকত শুধু। দুদক হবার পরেও ২০১৩ সালের সংশোধনীর (দুদক আইনের) আগে এবং অনেক কাল পরেও দুদককে পক্ষ করা হতো না হাইকোর্টে। ২০১৩ সালের সংশোধনীতে দুদক আইনের ৩৩ (৫) ধারায় দুদককে পক্ষভুক্ত করা বাধ্যতামূলক হয়।

এই আপিলটি শুনানিতে আসে যখন হাইকোর্টের এই বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে দীর্ঘদিনের অনিষ্পন্ন পুরাতন আপিলাদির নথি সেকশন থেকে তলব দিয়ে শুনানির কার্যতালিকায় তোলা শুরু করেন তখন। নিম্ন আদালতের (দণ্ডদাতা চট্টগাম বিভাগীয় স্পেশাল জজের) নথি হাইকোর্টের সেকশনে এসে পৌঁছায় ১৯৭২ সালে ১৫ জুন, কিন্তু তা সামিল করা হয়নি আপিলের নথির সঙ্গে। সামিল করা হয় ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বরে এবং সেদিনই আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত দেখিয়ে বেঞ্চে পাঠানো হয়। তার মানে, এই আপিলের ৫০টা বছর কেটেছে সেকশনেই। বিশেষ এই বেঞ্চ থেকে তলব না দিলে আরো কত বছর কাটত কে জানে! এই ৫০ বছরে সেকশনে কত কর্মচারী এলো গেল, কাকে থুয়ে কাকে ধরা হবে! হাইকোর্ট তাই হতাশা ব্যক্ত করে ক্ষোভ ঝাড়েন।

বেশ কিছুদিন শুনানির তালিকায় থাকাতে একদিন চোখ গেল দুদকের এক প্যানেল আইনজীবীর, দরখাস্ত দিলেন শুনানি করার জন্য। মঞ্জুর হলো তা ২০২১ সালের ৭ মার্চ তারিখে। শুনানি হলো ১৭ নভেম্বর ২০২১ তারিখে। দুদকের আইনজীবী ও সরকারের এএজি ও ডিএজি উপস্থিত। আসামি-আপিলকারীর কোনো আইনজীবী হাজির নাই। শুনানির সময় এসব বের হলো এবং আরো দেখা গেল, ১৯৮৯ সালের ১৭ জুন তারিখে আসামি-আপিলকারী মারা গেছে বলে নোট আছে আপিলের নথিতে। শুনানির আগেই আসামি-আপিলকারী মারা গেলে আপিল ‘অ্যাবেট’ (বাতিল) হয়ে যাওয়া সিআরপিসির ৪৩১ ধারার নিয়ম। কিন্তু, এই আসামি-আপিলকারীর দণ্ডের মধ্যে কারাদণ্ড ছাড়াও জরিমানা থাকায় জরিমানার অংশটুকু বাবদ আপিল অ্যাবেট না হয়ে ঐটুকু থেকেই যাচ্ছে।

এরকম অবস্থায় নিয়ম ছিল আসামি-আপিলকারীর ওয়ারিশদের ঠিকানা খুঁজে এনে তাদের ওপর নোটিশ জারির ব্যবস্থা করা, আর সে-দায়িত্ব ছিল জরিমানার প্রাপক সরকারপক্ষের (AIR 1957 all. 20)। হাইকোর্ট সময় অপচয়ের সে-দিকে আর না গিয়ে মেরিটে শুনানি করে আসামি-আপিলকারীকে স্পেশাল জজের দেওয়া দণ্ড ঠিকই হয়েছে বলে সাব্যস্ত করেন। আর ৩৫০ টাকা জরিমানা আদায় করতে সরকারের খাজনার চেয়ে বাজনার খরচাদি বেশি (“সুদীর্ঘ ৫৩ বছর পূর্বে দায়ের করা এই মামলায় বিচারিক আদালত কর্তৃক আদায়যোগ্য জরিমানার অর্থ ৩৫০/- টাকা হওয়ায় উক্ত জরিমানা আপিলকারীর স্থাবর/অস্থাবর সম্পত্তি থেকে বা বৈধ উত্তরাধিকারীগণের নিকট থেকে আইনানুগভাবে আদায় করতে সরকারের প্রশাসনিক কাঠামোর কর্মযজ্ঞ, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, আইনজীবী নিয়োগ ও তার পারিশ্রমিক প্রদানসহ অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়সমূহের ব্যয় নির্বাহ করা জরিমানার অর্থমূল্যের চেয়ে অধিক বিবেচনায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিচারিক আদালত কর্তৃক নির্ধারিত জরিমানার অর্থ ৩৫০/- টাকা মওকুফ (Remit) এর আদেশ দেয়া সমীচীন বলে আমরা মনে করি।”) বলে জরিমানা মওকুফ করে দিয়ে আপিলটি অ্যাবেট (বাতিল) হিসেবে নিষ্পত্তি করেন ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর।  

হাইকোর্ট বিভাগের সেই রায় একটি ল-জার্নালে (অ্যাপেক্স ল রিপোর্ট) প্রকাশিত হলো ২০২৪ সালের মার্চ ইস্যুতে, আমার কাছে এসে পৌঁছাল তা জুলাই ২০২৪-এর জুলাইতে, তাইতে জানা গেল ব্যাপারটা। দুদকের পূর্বসূরি দুর্নীতি দমন ব্যুরোর মামলার ৫৩ বছর পর, আসামি-আপিলকারীর মৃত্যুর ৩২ বছর পর, ব্যুরো বিলুপ্তির ১৭ বছর পর (২০০৪ সালের ২১ নভেম্বর দুদকের কমিশন গঠিত হওয়ার দিন থেকে ব্যুরো বিলুপ্ত হয়েছে) আপিলটির নিষ্পত্তিতে বিলম্বটা হয়ত একটু বেশিই হয়েছে, পাকিস্তান আমলের ফাইল চাপা পড়া, বাংলাদেশের ধুলো জমা ব্যতিক্রমে।

মাত্র ৩৫২ টাকা ৬৯ পয়সার সারের দুর্নীতির মামলার নিষ্পত্তি হতে যদি ৫৩ বছর লাগে (আসামি-আপিলকারী মরে খালাস ৩২ বছর আগেই) তাহলে কোটি কোটি, শত কোটি, হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির মামলার বিচার শেষ হবে কত শত বছরে? সাজা খাটাবার জন্য জীবিত পাওয়া যাবে কি এক জনকেও?

তবে, এটা খুব বেশি ব্যতিক্রম আর মনে হয় না, যখন দেখা যায় ২০০৭ সালের, এমনকি, ব্যুরো আমলের অনেক আপিল-রিভিশন এখনো অনিষ্পন্ন অবস্থায় আটকে আছে হাইকোর্টে। দুদকের ২০২৩ সালের বার্ষিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে দেখা যাবে, পূর্বের অনিষ্পন্ন ১০০৮টির সঙ্গে নতুন দায়ের হওয়া ১৯১টি মিলিয়ে ২০২৩ সালে ফৌজদারি আপিল ছিল মোট ১১৯৯টি, আর নিষ্পত্তি হয়েছে (২০২৩ সালে) মাত্র ২৮টি, শতকরা হিসেবে নিষ্পত্তির হার মাত্র ২.৩৩ ভাগ। সেবছর (২০২৩ সালে) পূর্বের অনিষ্পন্ন ৫১৩টির সঙ্গে নতুন দায়ের হওয়া ১৫৯টি মিলিয়ে ফৌজদারি রিভিশন ছিল মোট ৬৭২টি, নিষ্পত্তি হয়েছে মাত্র ৩২টি, শতকরা হিসেবে নিষ্পত্তির হার মাত্র ৪.৭৬ ভাগ। জামিন আর মামলা বাতিলের মিস কেস নিষ্পত্তিতেই (৪৯২টি) সময় গেছে, ফাঁকে রিট (দুদক যাতে কোনো ব্যবস্থা নিতে না পারে সেই প্রার্থনার) নিষ্পত্তি হয়েছে শতকরা ৫.৮২ ভাগ (৭৭৫টির মধ্যে নিস্পত্তি ৪৪টি)। এই হারে চলতে থাকলে (উন্নতির ক্ষীণ আশা করার মতোও লক্ষণ নেই) আরো অনেকগুলোরই বয়স ষাটোর্ধ্ব হয়ে যাবে অচিরেই। মাত্র ৩৫২ টাকা ৬৯ পয়সার সারের দুর্নীতির মামলার নিষ্পত্তি হতে যদি ৫৩ বছর লাগে (আসামি-আপিলকারী মরে খালাস ৩২ বছর আগেই) তাহলে কোটি কোটি, শত কোটি, হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির মামলার বিচার শেষ হবে কত শত বছরে? সাজা খাটাবার জন্য জীবিত পাওয়া যাবে কি এক জনকেও? 

তাই, শুধুই দুর্নীতির মামলা বিচারের এখতিয়ার দিয়ে একেবারে পৃথক দুর্নীতি দমন আদালত/ট্রাইব্যুনাল (যার সংখ্যা হতে পারে ঢাকায় ৩/৪টি, আর বাকি পুরাতন ১৮টি জেলায় একটি করে) নতুনভাবে সৃষ্টি করা এবং দুর্নীতির মামলার আপিল-রিভিশন-রিটসহ সব কার্যক্রমের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি দ্রুততর করার জন্য হাইকোর্টের বিচারপতির যোগ্যতাসম্পন্ন বিচারকদের সমন্বয়ে পুরোপুরি পৃথক ২/৩টি দুর্নীতি দমন আপিল আদালত/ট্রাইব্যুনাল গঠন করা এখন সময়ের দাবি।

ওদিকে নিম্ন আদালতে, মানে বিচারের স্পেশাল জজ কোর্টগুলোতে ২০২৩ সালে মামলা অনিষ্পন্ন ছিল ব্যুরো আমলের ৩৫৯টি, আর দুদক আমলের ২৯৯৪টি, সব মিলিয়ে ৩৩৫৩টি। নিষ্পত্তি হয়েছে ব্যুরো আমলের ৩০টি আর দুদক আমলের ২৮৩টি, সব মিলিয়ে ৩১৩টি, শতকরা হিসেবে যা মাত্র ৯.৩৩ ভাগ। ২০০৭ সালে ঢাকায় সৃষ্ট ১০টিসহ সারা দেশে একেবারে পৃথকভাবে সৃজিত স্পেশাল জজ আদালত আছে ২৯টি। সেগুলোতে আদতে আর পৃথক নেই, কার্যত হয়ে গেছে সাধারণ আদালত। কারণ, সেগুলোতে ২০০৩ সালের ‘অতিরিক্ত দায়িত্ব আইন’ দিয়ে অন্য সব মামলাও ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে। যার ফলে আদালত প্রতি গড়ে ১১৫টি করে মামলা পড়লেও সারা বছরে এই ২৯টি আদালতের একেকটিতে গড়ে নিষ্পত্তি হচ্ছে মাত্র ১০টির মতো, মাসে হচ্ছে একটিরও কম।  

তাই, শুধুই দুর্নীতির মামলা বিচারের এখতিয়ার দিয়ে একেবারে পৃথক দুর্নীতি দমন আদালত/ট্রাইব্যুনাল (যার সংখ্যা হতে পারে ঢাকায় ৩/৪টি, আর বাকি পুরাতন ১৮টি জেলায় একটি করে) নতুনভাবে সৃষ্টি করা এবং দুর্নীতির মামলার আপিল-রিভিশন-রিটসহ সব কার্যক্রমের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি দ্রুততর করার জন্য হাইকোর্টের বিচারপতির যোগ্যতাসম্পন্ন বিচারকদের সমন্বয়ে পুরোপুরি পৃথক ২/৩টি দুর্নীতি দমন আপিল আদালত/ট্রাইব্যুনাল গঠন করা এখন সময়ের দাবি।      

লেখক: কলামিস্ট, প্রবন্ধকার ও গ্রন্থকার; অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ও দুদকের সাবেক মহাপরিচালক।
ইমেইল: [email protected]

ad

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত