দেশের শীর্ষস্থানীয় সাত শিল্পগোষ্ঠীর শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় ও দান অবিলম্বে স্থগিত করতে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের (আরজেএসসি) নিবন্ধককে অনুরোধ জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অর্থাৎ এসব শিল্পগোষ্ঠীর মালিকানা বদলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো।
গ্রুপ সাতটি হচ্ছে- বসুন্ধরা গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, নাসা গ্রুপ ও থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেড (নগদ লিমিটেড)।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের (সিআইসি) মহাপরিচালক আহসান হাবিব স্বাক্ষরিত একটি চিঠি আরজেএসসির নিবন্ধককে দেওয়া হয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে, আয়কর আইন ২০২৩-এর ২২৩ ধারার অধীনে এনবিআর কর ফাঁকি রোধে সম্পত্তির অন্তবর্তীকালীন অবরুদ্ধকরণ বা ক্রোকের প্রয়োজনীয় ক্ষমতা সংরক্ষণ করে। চলমান তদন্তে অনুযায়ী, উল্লিখিত কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগসহ আর্থিক অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। জাতীয় স্বার্থে আপনার (আরজেএসসির নিবন্ধক) সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।
এই নির্দেশনার এক মাস আগে এসব প্রতিষ্ঠান ঠিক মতো কর দিয়েছে কি না—তা খতিয়ে দেখতে তাদের অ্যাকাউন্টের তথ্য দিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিল কর অফিস।
যাদের তথ্য চাওয়া হয়েছে, তারা হলেন- বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিজ খান, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওবায়দুল করিম।
গত আগস্টে ব্যাংকগুলোয় পাঠানো চিঠিতে ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে এসব ব্যবসায়ীর মেয়াদি আমানত, সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, ঋণ হিসাব, বিদেশি মুদ্রা হিসাব, ক্রেডিট কার্ড, লকার ও ভল্টের তথ্য জানতে চায় এনবিআর।
গত আগস্টে এনবিআরের দুটি ফিল্ড অফিস থেকে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী ও এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়।
এছাড়া, এস আলম গ্রুপের ১৮ প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট অডিটের জন্য ভ্যাট কমিশনারেট চট্টগ্রাম চারটি টিম গঠন করে।
গত আগস্টে জারি করা আরেকটি চিঠিতে কর কর্তৃপক্ষ বলেছিল, আয়কর আইন-২০২৩ ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর আওতায় সিআইসি উল্লেখযোগ্য সম্পদ অর্জনকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগের বিষয়ে বিশেষ তদন্ত শুরু করেছে।