চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে পণ্যবাহী নৌযান এম ভি আল-বাকেরায় সাতজনকে হত্যার ঘটনায় চাঁদপুরের হাইমচর থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর মঙ্গলবার রাতে বাগেরহাট থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে র্যাব।
হাইমচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন সুমন বুধবার সকালে মামলার বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নৌযান এম ভি আল-বাকেরার মালিক ঢাকার দোহার এলাকার মো. মাহবুব মোরশেদ বাদী হয়ে হাইমচর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় হত্যা ও ডাকাতির অভিযোগ এনে ৮ থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফান নামে একজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে র্যাব।
বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে বুধবার সকালে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো র্যাবের এক খুদে বার্তায় জানানো হয়েছে।
চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে নোঙর করে রাখা পণ্যবাহী নৌযান এম ভি আল-বাকেরা থেকে সোমবার পাঁচ জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। একই সঙ্গে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো তিনজনকে, যাদের মধ্যে দুজন মারা যায়।
নিহতরা হলেন– জাহাজের মাস্টার কিবরিয়া, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার সজিবুল ইসলাম, মাজেদুল ইসলাম ও শেখ সবুজ এবং বাবুর্চি রানা।
ওইদিন নৌ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (চাঁদপুর জোন) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ থেকে টেলিফোন পেয়ে তারা এম ভি আল-বাকেরা থেকে হতাহতদের উদ্ধার করেন।
তিনি বলেন, “জাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে সিরাজগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। সকাল থেকে জাহাজটির মালিক কোনও কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। পরে একই কোম্পানির আরেকটি জাহাজকে আল-বাকেরার খোঁজ নিতে বলেন।
“ওই জাহাজের কর্মীরা মেঘনার মাঝখানে আল-বাকেরাকে নোঙর করা অবস্থায় দেখতে পান। খোঁজ নিতে গিয়ে তারা কক্ষের ভেতরে লাশ দেখে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে টেলিফোন করে পুলিশকে জানান।”
নৌপুলিশ সদস্যরা গিয়ে পাঁচজনকে মৃত দেখতে পান, তিনজন ছিলেন গুরুতর আহত। তাদের দ্রুত চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালটির আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আনিসুর রহমান জানান, আহত জুয়েলের শ্বাসনালিও কাটা ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
নৌ পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, জাহাজে ডাকাতি করতে বাধা দেওয়ায় এদের হত্যা করা হয়।
লাশ উদ্ধারের পর নৌ পুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, নৌযানটির মালিক মেসার্স এইচপি এন্টারপ্রাইজ। এটিতে সার পরিবহন করা হচ্ছিল।