Beta
বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫

আওয়ামী লীগ মাঠে নামলে কঠোরভাবে দমন করবে সরকার

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
[publishpress_authors_box]

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ কর্মসূচি দিয়ে দেশের রাজনীতিতে ফেরার ঘোষণা দিলেও তাদের অনুমতি না দেওয়ার অবস্থানে রয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বুধবার এক ফেইসবুক পোস্টে বলেছেন, অতীতের ভূমিকার জন্য আওয়ামী লীগ ক্ষমা চেয়ে তাদের সংশোধন না করা পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ করার অনুমতি দেওয়া হবে না।

এরপরও আওয়ামী লীগ কর্মসূচি পালনে নামলে তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে বলেও হুঁশিয়ার করেছেন তিনি।

অভ্যুত্থানে গত বছরের আগস্টে ক্ষমতা হারানোর পর ছন্নছাড়া আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ফেরার লক্ষ্যে ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

দলটির নেতাদের কেউ কারাগারে, কেউ বিদেশে থাকার মধ্য ফেইসবুক পাতায় এই কর্মসূচির জানান দেওয়া হয়।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আগামী ১ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি প্রচারপত্র বিলি, ৬ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ, ১০ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। এরপর ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি হরতাল ডেকেছে দলটি।

ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ এর আগে ১৫ আগস্ট এবং ১০ নভেম্বর কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিলেও সেখানে দলের নেতা-কর্মীদের দেখা যায়নি। বরং তা ঠেকাতে উপস্থিত ছিল অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

সাড়ে ৫ মাস বাদে আওয়ামী লীগ হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দেওয়ার পর সরকারের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিবই প্রথম তা নিয়ে কথা বললেন।

ফেইসবুকে তিনি লিখেছেন, গত আগস্টে দায়িত্ব নেওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনও বিক্ষোভ বন্ধ বা নিষিদ্ধ করেনি। তবে আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন।

“আমাদের কি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে বিক্ষোভ করার সুযোগ দেওয়া উচিৎ?” এই প্রশ্ন রেখে তিনি জুলাই আন্দোলনের সময় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে আওয়ামী লীগের নিপীড়ন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনাবলি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “তাদের পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শহীদ হয়েছেন কয়েকশ তরুণ শিক্ষার্থী, এমনকি নাবালক শিশুরাও। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় গণহত্যা, খুন ও তাণ্ডবের জন্য দায়ী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের দলীয় সরকার।”

নিউ ইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পর্যবেক্ষণে ১৬ বছর শাসনকালে শেখ হাসিনাকে গুম-খুনের নির্দেশদাতা হিসাসে তুলে ধরার কথাও বলেন প্রেস সচিব।

তিনি বলেন, “যতক্ষণ না আওয়ামী লীগ এই গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড এবং প্রকাশ্য দুর্নীতির জন্য ক্ষমা না চাইবে এবং যতক্ষণ না তাদের অন্যায়কারী নেতা-কর্মীরা বিচার ব্যবস্থার কাছে আত্মসমর্পণ করে তাদের অপরাধের জন্য বিচারকার্যের প্রক্রিয়া শুরু করে পাপমোচন করতে উদ্যোগ না নেবে এবং যতক্ষণ না আওয়ামী লীগ তাদের বর্তমান নেতৃত্ব ও ফ্যাসিবাদী আদর্শ থেকে নিজেকে আলাদা না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ করার অনুমতি দেওয়া হবে না।”

তারপরও যদি আওয়ামী লীগ কর্মসূচি পালনে নামে, তাহলে তাও কঠোরভাবে দমনের হুঁশিয়ারি দিয়ে শফিকুল বলেন, “পৃথিবীর কোনও দেশ কি একদল খুনি এবং দুর্নীতিবাজ চক্রকে আবার ক্ষমতায় আসতে দেবে? কোনও দেশই জবাবদিহি ছাড়া স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফেরার অনুমতি দেয় না।

“বাংলাদেশের জনগণ এই খুনিরা কোনও প্রতিবাদ-সমাবেশ করলে তার বিরুদ্ধে কঠিন জবাব দেবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। আমরা দেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়ার কোনও ধরনের প্রচেষ্টাকে সুযোগ দেব না। আওয়ামী লীগের পতাকাতলে কেউ যদি অবৈধ বিক্ষোভ করার সাহস করে. তবে তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে।”

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি মূলত ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধেই। এই সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে তারা। সেই সঙ্গে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিচারের উদ্যোগ থামার আহ্বান জানিয়েছে দলটি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত