বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন নিঃসন্দেহে সাকিব আল হাসান। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও নিজের নাম ছড়িয়ে দিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। পিছিয়ে নেই তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। বিদেশি লিগে খুব বেশি না খেললেও জাতীয় দলের জার্সিতে তাদের বর্ণিল ক্যারিয়ার। এই ক্রিকেটাররা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে রেখেছেন অগ্রণী ভূমিকা।
কিন্তু তাদের পথ ধরে পরবর্তী প্রজন্ম দেশের ক্রিকেটকে আরও ওপরে নিতে পারেননি বলে মনে করেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। দিনকয়েক আগে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচের আসনে বসা সালাউদ্দিন এই জায়গায় উন্নতি চাইছেন। তিনি সাকিব-তামিমদের ছাড়িয়ে যাওয়া প্রজন্মের খোঁজে।
বাংলাদেশ দলে আগেও কাজ করেছেন সালাউদ্দিন। ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন সহকারী কোচ ও ফিল্ডিং কোচের ভূমিকায়। সেসময় খুব কাছ থেকে দেখেছেন সাকিব-তামিম-মুশফিকদের। যারা বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্নতিতে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অফিসিয়াল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওতে সালাউদ্দিন বলেছেন, “আগেও যখন পাঁচ বছর কাজ করেছি, তখন একটা প্রজন্মের সঙ্গে কাজ করেছি। সাকিব, তামিম, মুশফিক, রিয়াদ, মাশরাফিরা ছিল। ওই প্রজন্ম দেশকে অনেক কিছু দিয়েছে। একটা পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এখন পরবর্তী প্রজন্মকেও যদি আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে সহায়তা করতে পারি, সেটা দেশের জন্য ভালো হবে, সেই খেলোয়াড়ের জন্য ভালো হবে।”
এমন খেলোয়াড় বাংলাদেশে আছে বলে বিশ্বাস সালাউদ্দিনের। এইচপি দল ও একাডেমিতে কাজ করেছেন তিনি। তাছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটেও নিয়মিত কোচের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকে তার বিশ্বাস, সাকিব-তামিমদের ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো প্রজন্ম তৈরি হবে বাংলাদেশে।
সালাউদ্দিনের বক্তব্য, “আমরা যারা বলি- সাকিব, তামিম, মুশফিকরা একটা পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে গেছে; ওটা যদি না ভাঙতে পারি, তাহলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বাংলাদেশের ক্রিকেট এগোয়নি। পরবর্তী প্রজন্ম যেন তাদের চেয়ে ভালো খেলোয়াড় হতে পারে, বড় হতে পারে। সেটা অসম্ভবও নয়। এখন খেলোয়াড়েরা মেন্টালি, ফিজিক্যালি ও আর্থিক দিক থেকে অনেক স্বাবলম্বী। যেটা হয়তো আগে ছিল না। এখন ভালো করার সুযোগ বেশি।”
সেটি করতে গেলে চিন্তা ও মানসিকতায় পরিবর্তন আনা জরুরী বলে মনে করছেন সালাউদ্দিন, “এইচপি বা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের খেলোয়াড়দের লক্ষ্য জিজ্ঞেস করলে বলবে- জাতীয় দলে খেলতে চাই। স্বপ্নটা কিন্তু ওখানেই থেমে গেল। জাতীয় দলে খেললে এরপর কীভাবে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে সেটা তারা জানে না। যারা এতদিন খেলছে তাদের আসলে কী ধরনের লক্ষ্য হওয়া উচিত, মেন্টালিটি হওয়া উচিত, কীভাবে আরও বড় খেলোয়াড় হওয়ার জন্য নিজেকে মোটিভেট করা উচিত- এই ছোট ছোট কাজগুলো করতে হবে।”
সঙ্গে যোগ করেছেন, “এই ছোট কাজগুলো যদি করা যায়, বিশেষ করে ড্রেসিং রুম ও ড্রেসিং রুমের বাইরে কীভাবে চিন্তা করবে; সেই চিন্তার জায়গাটা যদি আরও পরিষ্কার করে ধারণা দেওয়া যায়, তাদের আরও ভালো ভবিষ্যৎ সামনে আছে।”