পাকিস্তানের ২৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হলেন শেহবাজ শরিফ। পার্লামেন্টের ২০১ সদস্যের ভোট পেয়ে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন, জানিয়েছে ডন।
প্রধানমন্ত্রী পদে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রেসিডেন্ট শেহবাজ শরিফের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের ওমর আইয়ুব খান। তিনি পেয়েছেন ৯২ ভোট।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্পিকার আয়াজ সাদিক শেহবাজের নাম ঘোষণার পরেই পার্লামেন্টে উপস্থিত তার জোটসঙ্গীরা উল্লাস প্রকাশ করেন।
এরপর শেহবাজ বিজয় ভাষণের শুরুতেই নিজের পার্টি ও জোটসঙ্গীদের ধন্যবাদ জানান।
এসময় তিনি বলেন, “পিএমএল-এন এবং এর মিত্ররা পাকিস্তানি, মুসলমান ও মানুষ হিসেবে তাদের ভূমিকা পালন করবে।
“এই সংসদে এমন প্রতিভাবান ব্যক্তিরা আছেন, যারা পাকিস্তানের জাহাজকে তীরে নিয়ে যেতে পারেন… এদের মধ্যে সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ, ধর্মীয় নেতা রয়েছেন।”
ভাষণে তিনি পাকিস্তানের জনগণের অর্থনৈতিক দুরাবস্থা প্রসঙ্গে বলেন, জনগণ আকাশচুম্বী বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যের বোঝা বহন করছে।
তিনি বলেন, “বিদ্যুৎ ও কর চুরি পাকিস্তানের জন্য জীবন-মৃত্যুর সমস্যা…আমি বলতে চাই, ইনশাআল্লাহ, আমরা এই ক্যান্সারকে শেকড় থেকে উপড়ে ফেলে দেশকে নিজের পায়ে দাঁড় করাবো।
“এটি কঠিন… এটি বাধা-বিপত্তি পূর্ণ এক দীর্ঘ ও কঠিন যাত্রা। কিন্তু যেসব দেশ এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করেছে, তারা বিশ্বের অন্যতম উন্নত জাতিতে পরিণত হয়েছে।“
এসময় তিনি ৯ মে‘র ঘটনায় দায়ীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার কথাও বলেন।
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির নেতা আমির দোগার ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) ইউসুফ রাজা গিলানির পীড়াপীড়ি সত্ত্বেও বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টি-মেঙ্গেলের আখতার মেঙ্গেল বিরোধী বেঞ্চে বসেছিলেন। তিনি ভোট দিতে অস্বীকার করেন।
নির্বাচন পরবর্তী প্রতিক্রিয়া
প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর জাতীয় পরিষদে বক্তৃতায় ওমর আইয়ুব খান দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “দেশের বেশিরভাগ তরুণের মনে এমন ধারণা গেঁথে আছে যে দেশটি সন্ত্রাসবাদ ও সহিংসতায় ভুগছে।“
নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের ভাষণের পর তাকে উদ্দেশ্য করে আইয়ুব খান বলেন, “আপনি আইনের শাসন কথা বলেন, কিন্তু আইনের শাসন কখনোই প্রয়োগ করেননি।”
এদিকে মওলানা ফজলুর রেহমানের নেতৃত্বাধীন জামিয়াত উলেমা-ই-ইসলাম (ফজল) সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও তারা বর্তমান সরকারের নীতি ও কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করে।
করাচিতে সাংবাদিকদের ফজলুর রেহমান বলেন, “আমরা মনে করতাম পাকিস্তানের ইতিহাসে ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি কারচুপি হয়েছিল। কিন্তু এখন দেখছি সেই রেকর্ড ভেঙে গেছে।
“আপনি যে সংসদ দেখছেন তা জনগণের প্রতিনিধি নয়, এই সংসদ কারচুপির জন্ম দিয়েছে, যেখানে কিছু লোক নিজেদের নেতা বলে ডাকবে।“