Beta
শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

৭ দিন হলেও কারাগারে থাকা উচিত : পলক 

ss-polok-19225
[publishpress_authors_box]

তখনও বিচারক এজলাসে ওঠেননি। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।

সেখানে দাঁড়িয়েই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, জেল জীবন মারাত্মক। জীবনে শিক্ষার জন্য সাত দিন হলেও কারাগারে থাকা উচিত।

কখনও কারাগার থেকে বের হতে পারলেও একই কথা বলবেন বলেই জানান সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী।

জুলাই আগস্টের আন্দোলন চলার সময়ে রিয়াজ হত্যা মামলায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে বুধবার শুনানি হয় জুনায়েদ আহমেদ পলকের।

এদিন সকাল ১০টা ৫৮ মিনিটে সিএমএম আদালতের হাজতখানা থেকে পলককে বের করা হয়। এসময় তাকে হেলমেট, হাতকড়া ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পড়ানো হয়েছিল। হেঁটে আদালতে যাওয়ার পথে তিনি বলেন, “মিথ্যা দিয়ে সত্যকে সাময়িকভাবে আড়াল করা গেলেও সত্যের জয় অনিবার্য, ইনশাআল্লাহ।”

পরে তাকে আদালতের কাঠগড়ায় তাকে তোলা হয়। এসময় তিনি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “আমাকে তো নিয়মিত আদালতে আসা লাগে। যেদিন আসা লাগে না, সেদিন কারাগারে হাঁটতে বের হলে জেলের বন্দিরা আমাকে বলে, ‘ভাই আজকে আপনার অফিস নেই?’ আদালতে হাজিরা নিয়ে তারা মজা করে। আদালতকে তারা আমার অফিস ভাবে।”

শিক্ষার জন্য কারাগারে থাকা উচিত মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, “জেল জীবন মারাত্মক। জীবনে শিক্ষার জন্য সাত দিন হলেও কারাগারে থাকা উচিত। আমি যদি কখনও কারাগার থেকে বের হতে পারি তখনও এই কথা বলব।” এ সময় পুলিশ তাকে কথা বলতে নিষেধ করলে জবাবে পলক বলেন, “আমি কোনও বেআইনি কথা বলছি না।”

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, “চিড়া মুড়ি খাওয়ারও টাকা নাই। কারাগারে সুমনের (ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন) সঙ্গে রুটি কলা ভাগ করে খাই।”

একই সময়ে নিজের ব্যক্তিগত আইনজীবীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “তোমরা কথা বললেই তো রিমান্ডের পরিমাণ বেড়ে যায়। তারা তো (রাষ্ট্রপক্ষ) বলেছে, রিমান্ড শুরু, তাই কথা বলার দরকার নেই। আল্লাহ উত্তম পরিকল্পনাকারী। এটা কোনওভাবে পরিবর্তন করা যাবে না।”

এরপর তিনি কাঠগড়ায় সামনে গিয়ে দাঁড়ান। তখন ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকীকে উদ্দেশ করে একাধিকবার সালাম দেন। প্রথমে সাড়া না দিলেও পরে পিপি হাসতে হাসতে তার সালামের উত্তর দেন। এরপর পলক বলেন, “যাক এইবার পিপি স্যারের মন নরম হয়েছে।”

১১টা ১০ মিনিটে এজলাসে উঠেন বিচারক। পরে শুরু হয় রিয়াজ হত্যা মামলার শুনানি। শুনানি শেষে আদালত তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর পুলিশি পাহারায় তাকে আদালত থেকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

জুলাই-আগস্টের আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৪ আগস্ট ঢাকার ধানমন্ডির সায়েন্স ল্যাব এলাকা থেকে জিগাতলা এলাকায় যাওয়ার পথে আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে মারাত্মক আহত হন মো. রিয়াজ। মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুই সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৭ আগস্ট সে মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতের মা মোসা. শাফিয়া বেগম ৯ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চার মেয়াদে ছিলেন সংসদ সদস্য। তিনবার সামলেছেন দুটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব।

গণআন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ৬ আগস্ট দেশের বাইরে যাওয়ার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পলককে আটক করে নিজেদের হেফাজতে নেয় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।

পরে ১৪ আগস্ট ঢাকার খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত