মাছ নয়তো ডিম ভুনা, রোস্ট ও পোলাও রান্নায় বেরেস্তা, ভর্তা এবং পান্তাভাতের সঙ্গে পেঁয়াজ মানেই রসনায় আলাদা স্বাদ যোগ হয়। পেঁয়াজে থাকা সালফার খাবারের স্বাদ বহুগুণ বাড়িতে দিতে পারে।
ডায়েটিশিয়ান ভৃতি শ্রীবাস্তব ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, পেঁয়াজের সালফার ও কোয়েরসেটিন মানুষের শরীরের কোষের সুরক্ষা দেয় এবং প্রদাহ কমায়।
“পেঁয়াজের এই সালফার হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারি। পেঁয়াজ খেলে রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে। রক্ত জমাট বাঁধা ঠেকাতে পারে পেঁয়াজের এই উপাদান।”
এই পেঁয়াজ হলো মশলা জাতীয় উদ্ভিদ; যার মূল উপাদান পানি, কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবার। এতে পানির পরিমাণ প্রায় ৮৫ শতাংশ।
অলিয়াম সেপা বা পেঁয়াজে কোনো রকম ফ্যাট থাকে না। শরীরে ভিটামিন সি, বি এবং পটাসিয়ামের চাহিদা পূরণেও পেঁয়াজ ভালো উৎস।
পেঁয়াজের উপাদান এলিসিনের অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে। এলিসিনের কারণে পেঁয়াজ হয়ে ওঠে রোগ প্রতিরোধক শক্তিতে ভরপুর।
শ্রীবাস্তব বলেন, “মার্স্টার্স করার সময় আমি হোস্টেলে থাকতাম। তখন বলতে গেলে রোজই পেঁয়াজ কেটে লেবুর রস এবং গোল মরিচ দিয়ে খাওয়া হতো। তারপর খেয়াল করলাম, আমার রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা আগের চেয়ে ভালো হচ্ছে।
“একসময় দ্রুতই ঠান্ডা লেগে যেতো আমার। কিন্তু একবার আমার রুমমেট ভীষণ রকম ঠান্ডা ও জ্বরে কাবু হয়ে গেলো। অবাক হয়ে দেখলাম, আমি অসুস্থ হইনি।”
পেঁয়াজে ভিটামিন এ, বি এবং আয়রনও ভরপুর থাকে। অ্যানিমিয়া রোধে তাই পেঁয়াজ খেতে হবে।
পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর পর গাঢ় বেগুনি রঙের স্তরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে; যা ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
খাদ্যনালী, কোলন, স্তন, ওভারি এবং কিডনি ক্যান্সার প্রতিরোধে নিয়মিত লাল পেঁয়াজ খেতে হবে।
আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম থাকলে কাঁচা পেঁয়াজ খেলে ঢেকুর ওঠা, বুক জ্বলা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এমন রোগীদের কাঁচা পেঁয়াজ এড়িয়ে চলতে হবে বলে জানালেন শ্রীবাস্তব।
একই সঙ্গে তার পরামর্শ, রক্ত পাতলা রাখতে ওষুধ নিলে পেঁয়াজ খাওয়ার পরিমাণ নিয়ে পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করে নেয়া ভালো
তাহলে প্রতিদিন পেঁয়াজ খাওয়ার পরিমাণ কতটুকু হতে পারে?
শ্রীবাস্তব বলেন, “একজন ব্যক্তি অর্ধেক বা আস্ত একটি পেঁয়াজ রোজ খেতে পারেন খাবারে।”