রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৪০তম বিসিএসের প্রশিক্ষণরত ২৫ এএসপিকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিস (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। রবিবার তাদের এই নোটিস দেওয়া হয়।
সেখানে অভিযোগ আনা হয়েছে, তারা প্যারেড চালুর পর নির্দেশ মতো দৌড়ের আদেশ না মেনে বিশৃঙ্খলা করেন, এতে অন্যরা দৌড়াতে পারছিলেন না।
এর আগে গত ২০ অক্টোবর একই ব্যাচের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত করা হয়।
অব্যাহতির পর শোকজ; সারদায় প্রশিক্ষণরত এসআইরা আতঙ্কে
সোমবার পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর সকাল সন্ধ্যাকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভেযোগে তাদের শোকজ করা হয়েছে। এর আগে গত অক্টোবরে এই ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির পুলিশ সুপার (বেসিক ট্রেনিং-২) মো. তানভীর সালেহীন ইমনের সই করা রবিবারের নোটিসে বলা হয়েছে, “আপনি এএসপি ব্যাচের একজন প্রশিক্ষণার্থী হিসাবে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত রয়েছেন। গত ২৬ নভেম্বর সাপ্তাহিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুযায়ী বিকালের সেশনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্যারেড চালু হওয়ার পর কোম্পানির দায়িত্বপ্রাপ্ত সিএএসআই কেন্দ্রীয় কমান্ডের অংশ হিসেবে দৌড়ের নির্দেশ দিলে আপনি আরও কয়েকজনের সঙ্গে যোগসাজশ করে দৌড় না দিয়ে এলোমেলোভাবে হেঁটে হেঁটে চলা শুরু করেন।
“আপনাদের কারণে মাঠের অন্য প্রশিক্ষণার্থীরা সঠিকভাবে দৌড়াতে পারছিল না। আপনাকে বারবার দৌড়ানোর কথা বলা হলেও আপনি প্রশিক্ষকের কথায় কোনও কর্ণপাত না করে বিভিন্ন ধরনের কটূক্তিমূলক কথা বলা শুরু করেন। আপনিসহ আপনার অন্য সহযোগীদের এরূপ কর্মকাণ্ডের ফলে মাঠে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। একজন প্রশিক্ষণরত এএসপি (প্রবেশনার) হিসেবে আপনার এরূপ আচরণ ও কার্যকলাপ মাঠের সার্বিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে চরমভাবে ব্যাহত করে এবং মাঠের অন্যান্য প্রশিক্ষণার্থীদেরকে শৃঙ্খলাভঙ্গে উৎসাহিত করে।”
“এমতাবস্থায়, আপনার এহেন কার্যকলাপ ও আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর কেন প্রেরণ করা হবে না, তার কারণ ব্যাখ্যাপূর্বক নোটিস প্রাপ্তির ৩ দিনের মধ্যে আপনার লিখিত বক্তব্য নিম্নস্বাক্ষরকারীর কাছে দাখিল করার জন্য আদিষ্ট হয়ে নির্দেশ প্রদান করা হলো।”
এবার ‘ক্লাসে মনোযোগ না দেওয়ায়’ ৪৯ এসআইকে শোকজ
এর আগে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণ দেখিয়ে প্রশিক্ষণরত আড়াইশর বেশি এসআইকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন অভিযোগ তুলে অনেককে শোকজও করা হয়।
উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে এখন সারদায় পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরতরা রয়েছে আতঙ্কে। এতটা পথ পেরিয়ে আসার পর তাদের চাকরি টিকবে কি না—তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় তারা।