পুরো ওভার জুড়ে একবারও ছক্কা মেরে উল্লাস করেননি নুরুল হাসান সোহান। একেবারে শেষ বলে ছক্কা মারার পর ব্যাট ঘুরিয়ে সতীর্থদের দিকে ছুটলেন। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে রংপুর রাইডার্সকে জেতানোর দিনে অতীত মনে পড়েছে তার। তাই জয় নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত চুপটি করে ছিলেন।
২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে দলে ছিলেন সোহান। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২০ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের। পাওয়ার হিটার বা ফিনিশার যাই বলা হোক, তখন ওই দায়িত্বটা ছিল সোহানের ওপর। কিন্তু শেষ বলে ছক্কা মারতে ব্যর্থ হওয়ায় ৫ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ।
সেই ম্যাচের স্মৃতি বৃহস্পতিবার মনে পড়েছে সোহানের। রংপুর আর বাংলাদেশ জাতীয় দল এক না, তবুও দলকে জিতিয়ে সেদিনের দুঃখ ভুলেছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। জাতীয় দলকে জেতাতে না পারলেও ফ্র্যাঞ্চাইজিকে জিতিয়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটালেন সোহান।
এক ওভারে ৩০ রান নিয়ে অবিশ্বাস্য ম্যাচ জেতানো সোহান সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “আজকে জাতীয় দলের হয়ে শেষবার বিশ্বকাপে যে ম্যাচ খেলেছিলাম ওইটার কথা মনে পড়ছিল। সে ম্যাচের শেষ ওভারে আমাদের ২০ রান দরকার ছিল, আমি ১৫ নিতে পেরেছিলাম, শেষ বলে ৬ মারার দরকার ছিল কিন্তু পারিনি। আমরা খুব ক্লোজ গিয়েছিলাম। আজ একই রকম একটা পরিস্থিতিতে দলকে জেতাতে পারলাম এটা আমার জন্য অনেক তৃপ্তির। সেদিন পারিনি আজকে দলের জন্য অবদান রাখতে পেরেছি।”
এক ওভারে ২৬ রান বেশ চ্যালেঞ্জিং। তবে বিপিএলে এমন ম্যাচ জেতার নজীর কম। আইপিএলে বা বিশ্বকাপেও এমন ম্যাচে জয়ের নজীর আছে। সোহান সেই রকম কিছু থেকেই আত্মবিশ্বাস নিয়েছেন। ১৯তম ওভারের প্রথম দুই বলে খুশদিল শাহয়ের দুটি ছক্কা থেকে তাদের বিশ্বাস শুরু হয়।
সোহান জানিয়েছেন, “খুশদিল যখন দুটো ছক্কা মারে ও বলছিল ম্যাচটা জেতা সম্ভব। এরপর আমরা একটু ব্যাকফুটে পড়ে যাই। কিন্তু শেষ ওভারে রাব্বি (কামরুল ইসলাম) ভাই এসে বলল তুমি ৬ বল খেলো। ভালো শেপে থাকলে বল মারতে পারলে হয়ে যাবে। পরে যখন প্রথম বলে ছয় মারলাম মনে হলো যে হবে। এভাবেই আসলে হয়ে গেল।”
সোহানরা দুর্দান্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন এই আসরে। বিপিএলের আগে গ্লোবাল সুপার লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলটিকে মানসিকভাবে আরও শক্তিশালী করেছে। তার প্রতিফলন মাঠে দেখাচ্ছেন সোহানরা। টানা ৬ জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থেকে প্লে অফে পা রাখার পথে সোহানরা।