Beta
শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫

আফগান রূপকথা থামিয়ে প্রথমবার ফাইনালে দ.আফ্রিকা

যড৪
[publishpress_authors_box]

রূপকথা গড়ে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে নাম লিখিয়েছিল আফগানিস্তান। অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয় এই সাফল্যে কাবুল, কান্দাহার কিংবা জালালাবাদ-পুরো আফগানিস্তানেই বয়ে গেছে খুশির ঢেউ। চমকটা থামল সেমিফাইনালেই। রশিদ খানের দলকে গুঁড়িয়ে ফাইনালে নাম লেখাল দক্ষিণ আফ্রিকা।

বা টি-টোয়েন্টি, বিশ্বকাপের যে কোনও ফরম্যাটেই এটা প্রথম ফাইনাল প্রোটিয়াদের। বারবার সেমিফাইনাল থেকে বিদায়ের যে বেদনা, এবার সেই অধ্যায়টা পেছনে ফেলল তারা।

এ নিয়ে বিশ্বকাপে টানা ৮ ম্যাচ জিতল দ.আফ্রিকা, যা যৌথ সর্বোচ্চ। ২০২২-২০২৪ বিশ্বকাপ মিলিয়ে ৮ ম্যাচ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। আর ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ৮বার সেমিফাইনাল খেলে ফাইনালের টিকিট পেল প্রথমবার।

শুরুতে ব্যাট করা আফগানিস্তান অলআউট হয় মাত্র ৫৬ রানে। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের ইতিহাসে এবারই প্রথম ১০০ রানের কমে গুটিয়ে গেল কোনও দল। জবাবে এইডেন মারক্রামের দল লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ৮.৫ ওভারে। ৯  উইকেটের ঐতিহাসিক জয় পায় তারা। রেজা হেনড্রিকস ২৯ আর এইডেন মারক্রাম অপরাজিত ছিলেন ২৩ রানে।

৫ রান করা কুইন্টন ডি কককে ফেরান ফজলহক ফারুকি। তাতে বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ ১৭ উইকেট নেওয়ার রেকর্ডটা এখন তার। আগের ১৬ উইকেটের কীর্তি ছিল লঙ্কান ভানিন্দু হাসারাঙ্গার।

ত্রিনিদিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে এবারের বিশ্বকাপে এর আগে ম্যাচ হয়েছিল ৪টি। এর ৩টিতেই শুরুতে ব্যাট করা দল অলআউট হয়েছিল ১০০ রানের কমে। তারপরও বোলিং শক্তির কারণে শুরুতে ব্যাট করে ১৩০-১৪০ রানের লক্ষ্য ছিল আফগানদের। দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্দান্ত বোলিংয়ে সেই স্বপ্নটা পূরণ হয়নি। মাত্র ৫৬ রানেই অলআউট তারা।

আজমতউল্লাহ ওমরজাই ছাড়া (১০) দুই অঙ্কের রান করতে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ০, ইব্রাহিম জাদরান ২, মোহাম্মদ নবি ০ আর রশিদ খান আউট হন ৮ রানে। মার্কো ইয়ানসেন ১৬ রানে নেন ৩ উইকেট। কাগিসো রাবাদা ১৪ রানে ২টি ও আনরিখ নরকিয়া ৭ রানে নেন ২ উইকেট। শেষ দিকে তাবরাইজ শামসি ৩ উইকেট নিয়ে ছেঁটে দেন আফগানদের লেজটা।

টি-টোয়েন্টিতে এটাই আফগানিস্তানের সর্বনিম্ন স্কোর। তাও সেটা এমন ম্যাচে হলো, যার স্বপ্ন তারা দেখে এসেছে ক্রিকেট খেলা শুরুর করার পর থেকে। তাদের আগের সর্বনিম্ন ছিল ২০১৪ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭২। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও এটা কোনও দলের সর্বনিম্ন স্কোর। আগের সর্বনিম্ন এবারের বিশ্বকাপেই  শ্রীলঙ্কার ৭৭।

ছেলেদের কোনও নকআউট ম্যাচেও আফগানদের ৫৬ রান সর্বনিম্ন স্কোর। আগের সর্বনিম্ন ছিল গত বছর আফ্রিকা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন কাপ ফাইনালে। উগান্ডার বিপক্ষে সেই ম্যাচে ৬২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বতসোয়ানা।

ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে বিশ্বকাপে ১১টি নকআউট ম্যাচ খেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। হেরেছে এর ৮টি, টাই ১টি আর জয় ২টি। ১৯৯৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টাই হলেও নিয়মের গ্যাঁড়াকলে বিদায় নিতে হয় প্রোটিয়াদের।

নকআউটে তাদের জয় কেবল দুটি। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতেছিল প্রথমবার।  ৯ বছর পর জিতল আজকের সেমিফাইনালে। তাতে কোনও বিশ্বকাপে প্রথমবার ফাইনাল খেলার কীর্তিও গড়ল প্রোটিয়ারা।

টার্নিং পয়েন্ট

প্রোটিয়াদের ফাস্ট বোলাররাই গড়ে দিয়েছেন ম্যাচের ভাগ্য। মার্কো ইয়ানসেন, কাগিসো রাবাদা, আনরিখ নরকিয়ার মতো বিশ্বমানের পেসারদের বলের কোনও জবাব ছিল না আফগান ব্যটারদের কাছে। একেকটা উইকেট পড়েছে আর ড্রেসিংরুমে থমথমে মুখে হতাশা দেখিয়ে গেছেন অধিনায়ক রশিদ খান ও কোচ জোনাথান ট্রট।

সেরা তারকা           

মার্কো ইয়ানসেন সেমিফাইনালের আগে পুরো বিশ্বকাপে নিয়েছিলেন কেবল ৩ উইকেট। আজ সেমিফাইনালে শুরুতেই ৩ উইকেট নিয়ে আফগানদের টপঅর্ডার গুঁড়িয়ে দেন তিনি। সেরাটা হয়ত তুলে রেখেছিলেন বড় মঞ্চের জন্যই। ম্যাচ সেরার পুরস্কার হাতে জানালেন, ‘‘আমরা নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী গুডলেংথে বল করে গেছি আর দেখতে চেয়েছি উইকেট কেমন আচরণ করে। আমাদের অধিনায়ক মারক্রাম ছিল অসাধারণ। আমরা উপভোগ করেছি ম্যাচটা।’’

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত