চলতি মাসের শুরুতে হঠাৎ করেই আলোচনায় আসেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খান।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি অবসরপ্রাপ্ত এই সেনা কর্মকর্তার নামে থাকা ভেরিফায়েড ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি স্ট্যাটাস বা পোস্ট দেওয়া হয়। মুহূর্তেই যা ভাইরাল হয়ে পড়ে। কারণ যখন এই পোস্টটি প্রকাশ হয়েছে তখন তিনি অবস্থান করছিলেন কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে। যেখানে বসে ফেইসবুক ব্যবহারের সুযোগ নেই।
পোস্টটিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কিছু কথা লেখা হয়। সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ ফেরতের বিষয়েও উল্লেখ করা হয়।
মুহূর্তেই সেই পোস্ট ভাইরাল হয়ে যায়। কারাগারে থাকা একজন আসামি কীভাবে ফেইসবুকে পোস্ট দিতে পারেন তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা। যার পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ জানায় যে, কারাগারে থেকে ফেইসবুক ব্যবহার সম্ভব নয়। ফারুক খান কেন কোনও বন্দীর পক্ষেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করার সুযোগ নেই।
বুধবার আবারও উঠল সেই প্রসঙ্গ। সকালে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলা ঘটনায় মতিঝিল থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় ফারুক খানকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল।
শুনানি শেষে যখন তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হচ্ছিল তখন সাংবাদিকরা ফেইসবুক পোস্টটি সম্পর্কে জানতে চান।
হাজতখানায় যাওয়ার পথে পুলিশবেষ্ঠিত হয়ে হাঁটতে হাঁটতেই ফারুক খান বলেন, “কারাগার থেকে কি স্ট্যাটাস দেবো? এটা মিথ্যা কথা। কারাগার থেকে কি স্ট্যাটাস দেওয়া যায়। এটা মিথ্যা কথা।”
এর আগে তার পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছিল পুলিশ। ঢাকার মহানগর হাকিম এম এ আজহারুল ইসলামের তা মঞ্জুর করেন।
তীব্র ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকেই অন্যান্য নেতা-মন্ত্রীদের মতো আড়ালে ছিলেন ফারুক খান। গত বছরের ১৪ অক্টোবর রাতে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ফেইসবুক পোস্টটিতে লেখা হয়েছিল, “অনেক চেষ্টা করে অনলাইনে এসেছি। জেলের চার দেয়াল আমাদের নিজ সত্তার সামনে দাঁড়া করায়। অনেক কিছু বলতে চাই, কিনতু এখন সবই বলতে পারছি না। এতটুকুই বলবো শেখ হাসিনাকে নেত্রী মেনেছিলাম কিন্তু আজকে তার হঠকারিতার জন্যেই আমাদের দলের এই পরিণতি। দলের নেতৃত্বে পরিবর্তন এবং সর্বস্তরে শুদ্ধি অভিযান ব্যতিত কোন ধরনের রাজনীতিতে ফেরা উচিত হবেনা। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ আর চাইনা, বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ ফেরত চাই। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।”
এর পরিপ্রেক্ষিতে কারা কর্তৃপক্ষ আরও বলেছিল, ফেইসবুক আইডিটি সাবেক মন্ত্রী ফারুক খানের পক্ষে কারাগারে থেকে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তবে অন্য কেউ বা তার আত্মীয়-স্বজন সেটি পরিচালনা করছে কি না, তা কারা কর্তৃপক্ষ জানে না।
তবে আসলেই কে পোস্টটি করেছিল তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।