ভয় ভয় লাগছিল নুসরাত শারমিনের (ছদ্মনাম); কেন ভয় পাচ্ছেন, তা ভেবে আবার অবাকও হচ্ছিলেন।
এই পথে তিনি যে এই প্রথম যাচ্ছেন, তা নয়। ঢাকার তেজগাঁওয়ে এই পথ ধরে কত দিন ধরে তার চলাচল, তার ইয়ত্তা নেই। সংবাদকর্মী হওয়ার পর তো আরও বেশি।
দুদিন আগে ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় চেনা সেই পথে তার ভয়ের কারণ হয়ে উঠেছিল তরুণদের একটি জটলা। ঠিক সেটাও ভয়ের কারণ নয়। তারা কিছু কথা বলছিল, রিকশায় করে যাওয়ার সময় কিছু কথা কানে লাগে তার, হয়ত সংবাদকর্মী হওয়ার কারণেই কান ছিল তার সজাগ।
“চেহারাটা মুখস্থ করে রাখলাম, যেখানে পামু, সেখানেই পিটামু”- চলতি পথে কেবল এক তরুণের এটুকু কথাই কানে ঢুকেছিল নুসরাতের; তাকে উদ্দেশ করে নয়, তবু তাতেই তার মনে জাগে ভয়।
৩০ পেরিয়ে আসা এই নারী বলেন, “সঙ্গে ছেলে (৫ বছর বয়সী) ছিল তো, তাই ভয়ই পেয়েছিলাম। এখন যা পরিস্থিতি, কোথাও তো কিছুর নিয়ন্ত্রণ নেই।”
সেদিনই পুরান ঢাকার দুটি কলেজের শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে ঘোষণা দিয়ে যাত্রাবাড়ীর আরেকটি কলেজে গিয়ে হামলা চালায়। তাদের হাতের লাঠিসোঁটা, ধারাল অস্ত্রের নির্মম ব্যবহার হয়েছিল প্রতিপক্ষের ওপর, যার ছবি-ভিডিও অনেকের গা শিউরে তোলে।
তার আগের দিন আবার পুরান ঢাকার কলেজ দুটিতে হামলা হয়েছিল, নেতৃত্ব দিয়েছিল যাত্রাবাড়ীর ওই কলেজটির শিক্ষার্থীরা, চলেছিল ব্যাপক ভাংচুর। সেদিনই তেজগাঁওয়ে বুটেক্স আর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেধেছিল মারামারি।
ওই উত্তেজনা চলার মধ্যেই শিশুপুত্রকে জড়িয়ে ধরে তেজগাঁওয়ের সেই পথ টুকু পার হওয়ার পর নুসরাত ভাবছিলেন, কয়েক মাস আগেও তো তার এমন ভয়ের অনুভূতি হয়নি। কেন এমন হলো?
যারা তার ভয়ের কারণ হয়ে উঠল এখন, এই তরুণরাই গত জুলাইয়ের আন্দোলনে নুসরাতের মতো অনেকের আশায় বসত দিয়েছিল। তাদের সেই আন্দোলনে পতন ঘটেছিল ‘আয়রন লেডি’ শেখ হাসিনার দেড় দশকের শাসনের।
অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, বন্যার্তদের সহায়তা এমন সব কাজে নিজেদের যুক্ত করে অনেকের আশা আরও বাড়িয়ে তুলেছিল এই তরুণরা।
কিন্তু তারপর? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মারামারি নিত্য দিনের চিত্র হয়ে উঠেছে।
গত সেপ্টেম্বরেই নগরবাসী দেখেছে, ধানমণ্ডিতে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে আইডিয়াল কলেজের ছাত্রদের মারামারি। আইডিয়াল কলেজের নামফলক খুলে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের মিছিলকে ‘খেলায় জিতে ট্রফি পাওয়ার মতো বিষয়’ বলে হাস্যরসও ছড়িয়েছিল সোশাল মিডিয়ায়।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা মহাখালীতে রাজপথ-রেলপথ অবরোধের সময় ট্রেনে হামলা চালিয়ে খবরের শিরোনাম হয়ে উঠেছিল।
এক সপ্তাহ আগে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে আবার সিটি কলেজের ছাত্রদের মারামারি থামাতে ছুটতে হয়েছিল সেনাবাহিনীকে।
তারপর পুরান ঢাকার কবি নজরুল কলেজ ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের সঙ্গে যাত্রাবাড়ীর মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের মারামারি তো চলল কয়েকদিন। তাতে আবার ৩৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জড়িয়ে পড়ার তথ্য এসেছে পুলিশের কাছ থেকে।
ঢাকার বাইরেও এমন ঘটনা ঘটছে। সার্বিকভাবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে দেশজুড়ে।
অভ্যুত্থানের প্রভাবেই কি?
জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে আগস্টের ৫ তারিখ পর্যন্ত টানা তিন সপ্তাহ রাজপথকেই ঠিকানা হিসাবে বেছে নিয়েছিল তরুণদের বড় একটি অংশ।
তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সাড়া দিয়ে নেমেছিল পথে, লড়েছে পুলিশ-বিজিবিসহ অন্যান্য সরকারি বাহিনীর সঙ্গে। তাদের লড়তে হয়েছিল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর সশস্ত্র কর্মীদের বিরুদ্ধেও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কলেজ, স্কুল পড়ুয়া কিশোররাও যোগ দিয়েছিল এই আন্দোলনে। এই বয়সে তাদের দেখতে হয়েছে মৃত্যু, সহপাঠির রক্তাক্ত দেহ; অনেক নৃশংসতা।
সেই লড়াইয়ে জয়ী হয়েছে তারা, যা তাদের নিজেদের অনেক ক্ষমতাবান ভাবার উপলক্ষ তৈরি করে দিয়েছে। আর এটাকেই বড় সংকট হিসাবে চিহ্নিত করছেন সমাজবিজ্ঞানীরা।
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের শিক্ষক স্নিগ্ধা রেজওয়ানা বলেন, “যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তরুণ, কিশোর শিক্ষার্থীরা যাচ্ছে, সে পরিবেশ বা পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে এর আগে তারা যায়নি।
“হঠাৎ করে তরুণদের উত্থান এবং কোনও ধরনের জবাবদিহি না থাকাকে হিরোইজম মনে করায় আজকের এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”
অভ্যুত্থানের পরপরই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সরিয়ে দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের, যারা তাদেরই শিক্ষক। ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ তকমা দিয়ে শিক্ষক লাঞ্ছনা নিত্যকার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। শিক্ষার্থীদের সচিবালয়, শিক্ষা বোর্ডের মতো জায়গায় গিয়েও কর্তৃত্ব ফলাতে দেখা গেছে।
নিজেদের ক্ষমতার প্রকাশ ঘটাতে সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি ফেইসবুক পোস্ট দম্ভের মতো ঠেকেছিল অনেকের কাছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেছিলেন, “হাসিনারেই থোরাই কেয়ার করছি, উৎখাত করছি। আপনেরা কোন হনু হইছেন?”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দায়িত্ব নিয়েই নিজেদের ‘নিয়োগকর্তা’ হিসাবে শিক্ষার্থীদের তুলে ধরেছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক আবু হাসনাত মো. কিশোয়ার হোসেন বলেন, এই শিক্ষার্থীরা এখন নিজেদের ‘সুপার পাওয়ারফুল’ মনে করছে।
“কলেজে কলেজে সংঘর্ষ হচ্ছে, মৃত্যু হচ্ছে… নিজের ক্ষমতা, নিজের আধিপত্য। আমি ছাত্র- এই বিষয়টা তাদের প্রাইড এর জায়গা তৈরি করেছে, যেটা হয়েছে আন্দোলনের সময়ে। তাদের ভেতরে একটা ফলস কনফিডেন্স তৈরি হয়েছে।”
“বিপ্লব উত্তর সমাজ ব্যবস্থায় একটা অ্যানার্কিজম হয়,” বলেন তিনি।
বেপরোয়া শিক্ষার্থীদের সামনে অসহায় শিক্ষক
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক যে সম্পর্ক থাকে, সেটা যে এখন দেখা যাচ্ছে না, তা সমাজবিজ্ঞানে গবেষকদের চোখেও ধরা পড়ছে। কারণ যারা শিক্ষাদাতা, শিক্ষার্থীরা যখন তাদের নিয়োগকর্তার মতো হয়ে ওঠেন, তখন স্বাভাবিকতার ব্যত্যয় ঘটে।
অনেক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা ঠিক করে দিচ্ছে, কোন শিক্ষক আসতে পারবে, কোন শিক্ষক আসতে পারবে না। শিক্ষকদের এখন শিক্ষার্থীদের সমঝে চলতে হচ্ছে।
“আন্দোলনের পর একটা নেগেটিভ অ্যানার্জি তৈরি হয়েছে। শিক্ষকরা এখন ভয় পাচ্ছে,” বলছিলেন ফরিদপুরের একজন স্কুল শিক্ষক, যিনি নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি।
নোয়াখালীর একটি কলেজের শিক্ষক বলেন, “এখন যে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে সমন্বয়কদের সম্মতি নিয়ে। ভয়ে কেউ কিছু বলতেও পারছে না।”
শিক্ষকরা বলছেন, বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে থাকা অনেক শিক্ষক যে অনিয়ম-দুর্নীতি করেননি, তা নয়। কিন্তু অপরাধ করলে তার বিচারের তো একটি প্রক্রিয়া আছে রাষ্ট্রে, এখন তো শিক্ষার্থীরাই বিচার করে ফেলছে।
ফলে যেখানে শিক্ষার্থীদের সঠিক পথ দেখানোর কথা শিক্ষকদের, হেনস্থা হওয়ার ভয়ে তারা সেই কাজটিই করতে পারছেন না।
শিক্ষকরা কি শিক্ষার্থীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে- এই প্রশ্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কিশোয়ার হোসেন ‘হ্যাঁ’ সূচক উত্তরই দেন।
তিনি বলেন, “গত ৫ আগস্টের পরেই সেটা হয়েছে। শিক্ষকদের হেনস্থা, পদত্যাগ করতে বাধ্য করানো হয়েছে, চিৎকার-উল্লাস হয়েছে। সেগুলোর ভিডিও ছড়িয়ে গেছে। তখন থেকেই শিক্ষকরা সব হারিয়েছে। শিক্ষক আর পুলিশের অবস্থা এখন একই রকম।”
সমাজেই নৈতিকতা-মানবিকতার এক ধরনের ঘাটতি থাকার বিষয়টিও টানলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজির অধ্যাপক কামরুজ্জামান মজুমদার।
তিনি বলেন, “মানুষের ভেতরে রেসপেক্ট, কেয়ার নেই। সবার মনেই পাওয়ার পজিশন নিয়ে ভাবনা। এসব কিছুর সম্মিলিত ফলাফল হচ্ছে শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকদের, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ না থাকা, গুরু-শিষ্য সর্ম্পকের অবনতি হওয়া। সেইসঙ্গে রয়েছে ইনসিকিউরিটি, ডিসস্যাটিসফ্যাকশন।”
প্রতিকার জরুরি; কিন্তু কীভাবে?
অস্বাভাবিক একটি সময় পেরিয়ে আসা এই শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিচ্ছেন সমাজবিজ্ঞানীরা। নইলে এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানা হতাশা তৈরির শঙ্কা তারা করছেন।
তারা বলছেন, অস্থির এই অবস্থার মধ্যে মনের ভেতরে থাকা দীর্ঘদিনের ক্ষোভ, ব্যক্তিগত টানাপোড়েন, বন্ধুদের সঙ্গে মনোমালিন্য, পুরনো বিরোধ সবই এখন বেরিয়ে আসছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, “গত কয়েকমাস ধরে যেটা দেখা যাচ্ছে, সেটা টিপ অব দ্য আইসবার্গ। ভেতরের বিষয় আরও অনেক গভীরে। এটা কেবল কয়েকমাস বা কয়েক বছরের না, আরও আগে থেকেই। এতদিন সেটা প্রকাশ পায়নি, এখন পাচ্ছে।”
আবার বেপরোয়া শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ নিজ স্বার্থে ব্যবহার করছেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্নিগ্ধা রেজওয়ানা।
তিনি বলেন, “বিগত সরকারের সময়ে যে আন্দোলন, সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল। কিন্তু এখন তাদের ব্যবহার করা যাচ্ছে এবং তারা ব্যবহৃত হচ্ছেও। এটুকু বোঝার মানসিক গঠন এখনও তাদের হয়নি। তারা মনে করছে, রাস্তায় বসে যাওয়া, লাঠি হাতে আন্দোলন করাটা সহজ উপায় এবং সেটাই তারা করছে।”
অধ্যাপক কিশোয়ার হোসেন বলেন, “তারা (শিক্ষার্থী) রাষ্ট্র পরিবর্তনের কথা বলছে, কিন্তু নৈতিকতা, মানবিকতা এই বোধের ফিলিং তাদের এখনও আসেনি।”
তার এই কথার সঙ্গে স্নিগ্ধা রেজওয়ানা যোগ করেন, “জুলাই-আগস্টের সেই রাস্তায় নামাকে এখন কীভাবে ট্যাকল করতে হবে, নিজেকে এবং দেশ গঠনে কীভাবে কাজে লাগাবে, তারা এখনও সেটা জানে না।”
এই শিক্ষার্থীদের প্রকৃত বয়স যত, রক্তাক্ত অভ্যুত্থান তাদের মনের বয়স বাড়িয়ে দিয়েছে, আবার তা ধারণ করার মতো সামর্থ্যও তাদের হয়ে ওঠেনি বলে মনোবিজ্ঞানীদের বিশ্লেষণ।
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজির অধ্যাপক কামরুজ্জামান বলেন, “এর সমাধান যদি না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে মূল্য দিতে হবে এবং সেজন্য দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষক রাজনীতি, রাজনৈতিক কাঠামোর ভূমিকা রয়েছে।”
অস্থির শিক্ষার্থীদের সুস্থির করার দায়িত্ব সরকার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে বেশি বলে মনে করেন গবেষকরা; যদিও শিক্ষার্থীদের বাহবা দিয়ে গেলেও তাদের এই সমস্যার দিকে সরকারের কর্তাব্যক্তিদের কারও মনোযোগ চোখে পড়ে না।
উপদেষ্টারা আহ্বান জানিয়েই তাদের দায়িত্ব সারছেন। শিক্ষক হেনস্তার সময় শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ তা না করার আহ্বান জানালেও তাতে কোনও সাড়া দেখা যায়নি।
এখন কলেজে কলেজে সংঘর্ষ, সড়কে নামা নিয়েও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী শিক্ষার্থীদের জনদুর্ভোগ না ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের বোঝানোর ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেছেন, “আমরা কঠোর হতে চাই না।”
তবে শিক্ষক স্নিগ্ধা রেজওয়ানা মনে করেন, প্রয়োজনে কঠোরও হতে হবে।
“পরিত্রাণ দরকার এবং সেটা খুব শিগরগিরই। যেকোনও মূল্যে কঠোরভাবে একে (ভাংচুর-অবরোধ) দমন করতে হবে সরকারকে। শিক্ষার্থীদের বোঝাতে হবে, আন্দোলনও প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতে হয়।”
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কিশোয়ার হোসেনের মত এক্ষেত্রে কিছুটা ভিন্ন। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এমন পরিস্থিতি অস্বাভাবিক মনে করছেন না তিনি। তার মতে, সামনের কিছু দিন এই পরিস্থিতি আরও নাজুক হতে পারে। তবে সময় যতই গড়াবে, স্বাভাবিকতাও ধীরে ধীরে ফিরবে।
“সময় বলে দেবে, এটা কতদূর যাবে। সরকার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যখন ঠিক হবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যখন তার নিজের ক্ষমতা ফিরে পাবে, তখন এটা ঠিক হয়ে যাবে।”
এক্ষেত্রে ঢাকার নটরডেম কলেজ কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপকে উদাহরণ দেখিয়ে সেই পথ অনুসরণের পরামর্শ দেন অধ্যাপক কিশোয়ার।
দেশজুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা, বিশৃঙ্খলা এবং হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে নটরডেম কলেজের অধ্যক্ষ ড. হেমন্ত পিউস রোজারিও একদিন আগেই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলেছিলেন, কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলায় তার কলেজের কোনও শিক্ষার্থী জড়িত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“নটরডেম ব্যবস্থা নিয়েছে, তাদেরকে দেখে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও সাহস পাবে, তারাও এমন পদক্ষেপ নেবে,” আশা করছেন অধ্যাপক কিশোয়ার।