Beta
বুধবার, ৩ জুলাই, ২০২৪
Beta
বুধবার, ৩ জুলাই, ২০২৪

সামিটের এলএনজি সরবরাহ শুরু, কমেছে লোডশেডিং

দেশীয় কোম্পানি ‘সামিট এলএনজি’ টার্মিনাল দিয়ে ১২ এপ্রিল থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
দেশীয় কোম্পানি ‘সামিট এলএনজি’ টার্মিনাল দিয়ে ১২ এপ্রিল থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

ঈদের আগ পর্যন্ত সামিটের এলএনজি সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও সেই সমস্যা কেটে গেছে। আমদানিকৃত এলএনজি সরবরাহে এসেছে সুখবর।

ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার আগেই ১২ এপ্রিল থেকে দেশীয় কোম্পানি ‘সামিট এলএনজি’ টার্মিনাল দিয়ে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। এই টার্মিনাল থেকে দিনে গড়ে সাড়ে তিনশ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘এক্সিলারেট এনার্জি’র টার্মিনাল দিয়ে ৫শ থেকে সাড়ে ৫শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হচ্ছিল। সামিটের টার্মিনাল যুক্ত হওয়ায় দুটি মিলিয়ে এখন দিনে গড়ে ৮শ থেকে সাড়ে ৮শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ হচ্ছে।

এতে এলএনজির ঘাটতির কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ঘিরে যে সংকট দেখা দিয়েছিল, কেটেছে তাও। গ্যাসের অভাবে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে না পারার কারণে ঈদের আগে লোডশেডিং বাড়লেও সেই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।

জানতে চাইলে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (এলএনজি) প্রকৌশলী শাহ আলম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “১২ এপ্রিল থেকেই সামিটের টার্মিনাল দিয়ে এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে ৩শ মিলিয়ন ঘনফুট দিয়েছি। এটি আরও বাড়বে।”

তিনি বলেন, “আসলে কেন্দ্রীয়ভাবে যেভাবে চাহিদা নির্ধারণ করা হয় সেভাবেই আমরা সরবরাহ দিচ্ছি। তবে এটুকু বলা যায়– সামিট, এক্সিলারেট দুটি টার্মিনাল দিয়ে ১১শ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহের সক্ষমতা তৈরি আছে।”

ঈদের সময় বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় কম গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে জানিয়ে শাহ আলম বলেন, দুটি টার্মিনাল দিয়ে সরবরাহ বাড়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে, লোডশেডিং কমেছে। ঈদের ছুটি শেষে চাহিদা বাড়লে সরবরাহও বাড়বে। ফলে এলএনজি নিয়ে এখন আর টেনশন নেই। বহির্নোঙরে এলএনজিবাহী জাহাজও আছে।”

ঈদের ছুটিতে ৯ এপ্রিল থেকেই দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহে উন্নতি হয়েছে। মূলত অফিস-আদালত ও শিল্প কারখানা বন্ধ হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়। ফলে সামিটের এলএনজি সরবরাহ না হওয়া সত্ত্বেও দেশে লোডশেডিং হয়নি।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) হিসাবে, দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ২৬ হাজার মেগাওয়াট। বিভিন্ন কারণে সক্ষমতার পুরোটা বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় না।

পিডিবির তথ্য অনুযায়ী, গত ৩ এপ্রিল দিনের বেলায় সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল সাড়ে ১৫ হাজার মেগাওয়াট। ওই সময়ে সরবরাহ ঘাটতি ছিল ২ হাজার মেগাওয়াটের বেশি, যা লোডশেডিং দিয়ে পূরণ করা হয়। আর লোডশেডিংয়ের পুরোটাই করা হয় গ্রাম এলাকায়। ২ এপ্রিল মঙ্গলবার মধ্যরাতে ১ হাজার ৮২৬ মেগাওয়াট লোডশেডিং ছিল।

পিডিবির হিসাবে, ৭ এপ্রিল সারাদেশে ১৪ হাজার ৬২৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। কিন্তু কোনও লোডশেডিং ছিল না। ৮ এপ্রিল চাহিদার বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করে পিডিবি। সেদিন সারাদেশে ১৫ হাজার ৩শ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হয় ১৫ হাজার ৫৬৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। অর্থ্যাৎ ২৬৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত ছিল।

৯ এপ্রিল বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়। সেদিন বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১২ হাজার ৭২৯ মেগাওয়াট। বিপরীতে উৎপাদন সমান হয়েছে। ফলে সেদিনও লোডশেডিং করতে হয়নি বলে জানিয়েছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। আর ১০ এপ্রিল থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন একই থাকায় লোডশেডিং হয়নি। ১২ এপ্রিল ১১ হাজার ৭৬২ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে সমান বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।

গরমের কারণে উদ্বেগ

দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে তাপপ্রবাহের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। এর পাশাপাশি ঈদের ছুটি শেষে সোমবার (১৫ এপ্রিল) থেকে চালু হয়েছে অফিস-আদালত ও শিল্পকারখানা। এতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করে পরিস্থিতি সামলা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশের এক কর্মকর্তা সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “সব শিল্পকারখানা পুরোদমে চালু হলে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বাড়বে। আর এভাবে যদি তাপমাত্রা বাড়তে থাকে, তাহলে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া অনেক কঠিন হবে।”

এমন পরিস্থিতি বৃষ্টি হলে তা আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিবে বলেও মন্তব্য করেন ওই কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত