পুরুষ বিভাগে দিনের শেষ ইভেন্ট ছিল ১০০ মিটার ফ্রি স্টাইল। মিরপুর সৈয়দ নজরুল ইসলাম সুইমিং কমপ্লেক্সের সব দর্শক চেয়ে ছিলেন সামিউল ইসলাম রাফির দিকে। বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর এই সাঁতারু রেকর্ড গড়বেন কিনা সেটাই ছিল সবার কৌতুহলের কেন্দ্রে।
রাফি শেষ পর্যন্ত সোনা জিতেছেন। কিন্তু রেকর্ড আর গড়া হলো না। মিরপুরে চলমান ম্যাক্স গ্রুপ ৩৩তম জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় অবশ্য আগের দুটি ইভেন্টে রেকর্ড গড়ে সোনা জিতেছেন এই সাঁতারু।
দিন শেষে তাই খুব বেশি আক্ষেপ ছিল না রাজবাড়ীর সাঁতারুর। দ্বিতীয় দিনে রাফি নিজে দুটি ইভেন্টে রেকর্ড গড়েছেন। এর মধ্যে সকালে ২০০ মিটার ইনডিভিজুয়াল মিডলেতে রেকর্ড গড়ে সোনা জেতেন। তিনি সময় নেন ২ মিনিট ০৯.৯৯ সেকেন্ড। গত বছর কাজল মিয়ার রেকর্ড ভাঙেন তিনি।
এরপর ২০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে দুপরে গড়েন নতুন জাতীয় রেকর্ড। তিনি এই ইভেন্টে সময় নেন ২ মিনিট ১০:৮৭ সেকেন্ড।
এর বাইরে রবিবার আরেকটি ইভেন্টে রেকর্ড গড়ে সোনা জিতেছেন রোমানা আক্তার। মেয়েদের ২০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে সকালে রেকর্ড গড়েন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই সাঁতারু। তিনি সময় নেন ২.৫১:৩৫ সেকেন্ড। নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙেছেন তিনি।
রবিবার সব মিলিয়ে রেকর্ড হয়েছে ৩টি ইভেন্টে। দুই দিনে এ পর্যন্ত রেকর্ড হলো ৭টি ইভেন্টে।
বিশ্ব সাঁতার সংস্থার (ফিনা) বৃত্তি নিয়ে রাফি গত বছর গেছেন থাইল্যান্ডে। সেখানে ফুকেটের থানিয়াপুরা স্পোর্টস অ্যান্ড হেলথ রিসোর্টে রাশিয়ান কোচ আলেকজান্ডার তিখনভের অধীনে অনুশীলন করেন।
এই অনুশীলনের কারণেই দিনকে দিন রাফির টাইমিংয়ের উন্নতি ঘটছে। মিরপুর সুইমিং পুলে দাঁড়িয়ে রাফি সেই কথাগুলো শোনালেন, “অবশ্যই আমার টাইমিংয়ের উন্নতি হয়েছে। ফ্রান্স অলিম্পিক থেকে এসে দেশে বেশ কিছু দিন ছিলাম। ওই সময়ে প্র্যাকটিসের অভাবে পিছিয়ে পড়ি। এরপর আবারও থাইল্যান্ড গিয়ে তাদের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছিল। এক মাস হতাশায় ভুগেছিলাম। এরপর যখন জাতীয় সাঁতারের তারিখ দেওয়া হয় তখন আরও চিন্তায় পড়ি। তবে কোচ বললেন সমস্যা নেই ।“
পুরোটা সময় তিনি তখন অনুশীলন করেছেন, “ আমাকে কোচ দুই মাস কঠোর ট্রেনিং করিয়েছে। দিনে প্রায় ১৬-১৭ হাজার মিটার সুইমিং করতে হয়েছে। সঙ্গে এক্সারসাইজ, জিম, ড্রাই ল্যান্ডে ট্রেনিং। গত দুই মাস আমার ওপর দিয়ে অনেক ঝড় গেছে। এই পরিশ্রমের ফল পাচ্ছি। আমি খুব খুশি।”