ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সিলেটে গুলিতে নিহত সাংবাদিক এ টি এম তুরাব হত্যা মামলায় পুলিশ কর্মকর্তা সাদেক কাওছার দস্তগীরের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে সিলেটের একটি আদালত।
পুলিশ কর্মকর্তা সাদেক কাউসার দস্তগীর সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে তিনি শেরপুরের ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত।
সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলী আদালত -১ এর বিচারক আবদুল মোমেন এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বুধবার বিকালে তাকে তার কর্মস্থল শেরপুর থেকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)। বৃহস্পতিবার বিকালে সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেয়।
সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একজন আইনজীবি জানান, সাদেক কাউসারকে আদালতে তৃতীয় তলায় সিঁড়ি দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় কিল-ঘুষি মারেন অনেকে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। পরে আদালতে শুনানি শেষে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তৃতীয় তলা থেকে নিয়ে যাওয়ার সময়ও কিল-ঘুষির শিকার হন সাদেক কাউসার। পরে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে নিরাপত্তার সঙ্গে তাকে পিবিআই সিলেট কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
সাংবাদিক এ টি এম তুরাব দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার সিলেট প্রতিনিধি ছিলেন। পাশাপাশি তিনি স্থানীয় দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকায় কাজ করতেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই দুপুরে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। এসময় সাংবাদিক তুরাব ঘটনাস্থলে আহত হন। পরে সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
সিলেট নগরের কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলেন সাংবাদিক এ টি এম তুরাব।
এ ঘটনায় প্রথমে পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করে। অন্যদিকে নিহতের বড় ভাই থানায় অভিযোগ করতে গেলে সেটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। ওই অভিযোগে তিনি কয়েকজন পুলিশ সদস্যের নাম উল্লেখ করেছিলেন।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ১৯ আগস্ট আদালতে সাংবাদিক তুরাব হত্যায় মামলা করেন তাঁর বড় ভাই আবুল আহসান মোহাম্মদ আজরফ।
পিবিআই সিলেটের ইন্সপেক্টর (এডমিন) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো.মুরসালিন সকালসন্ধ্যাকে বলেন, “সাদেক কাওছার দস্তগীরকে ৭ দিন রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করেছিলাম। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। আমরা তাকে ইতিমধ্যে হেফাজতে নিয়েছি।”