এর আগে হয়েছে জাতীয় লিগের ২৫টি মৌসুম। অথচ একবারও সিলেট শিরোপা জিততে পারেনি। এত বছরের অপেক্ষার অবসান হল অবশেষে। রাজিন সালেহ হেড কোচ হয়ে সিলেটকে প্রথমবার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের শিরোপা এনে দিলেন।
সিলেটের এই সাফল্যের কারণ বিশ্বাস ও স্বাধীনতা, যা শিষ্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পেরেছেন রাজিন সালেহ। সাবেক এই টেস্ট ক্রিকেটার দলের সব ক্রিকেটারদের দিয়েছেন পূর্ণ স্বাধীনতা। নিজেদের মতো করে ক্রিকেট উপভোগের মন্ত্র পেয়েছেন সিলেটের ক্রিকেটাররা। তাই জয়ের সংখ্যাটাও বেশি দলটির।
এছাড়া নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস রাখার মন্ত্রটাও ভালোই শেখাতে পেরেছেন রাজিন। তাই তো বোলার রেজাউর রহমান রাজা ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় নেমে ম্যাচ জেতাতে পারেন।
সকাল সন্ধ্যার সঙ্গে প্রথম সাফল্যের কারণ জানিয়ে সকাল সন্ধ্যাকে রাজিন বলেছেন, “আমি কখনই ক্রিকেটারদের বলিনি, এটা করো না ওটা করো না। আমি ওদের পূর্ণ স্বাধীণতা দিয়েছি। ওরা নিজেদের মতো খেলতে পেরেছে। বাজে বা ভালো সবসময় আমি ওদের সাপোর্ট করেছি।”
সিলেটের জয়ের পেছনে এ মৌসুমে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিন কারগির। ব্যাটার অমিত হাসান ও দুই পেসার খালেদ আহমেদ এবং রেজাউর রহমান রাজা। অমিত একটি ডাবল সেঞ্চুরি ও একটি সেঞ্চুরিতে এ আসরে এখন পর্যন্ত ১০ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৬৬১ রানের মালিক হয়েছেন। খালেদ ৯ ইনিংসে ২৪ ও রেজাউর রহমান ৮ ইনিংসে নিয়েছেন ২০ উইকেট।
রাজিনের কাছে দলের প্রতিটি খেলোয়াড় সমান। তবে অমিত-খালেদকে সত্যিকারের পারফরমার বলেছেন। এবারের আসরে দারুণ করলেও অমিতকে এখনই জাতীয় দলে দেখতে নারাজ রাজিন।
বলেছেন এই ব্যাটার আরও সময় পেলে আন্তর্জাতিকে ভালো করবেন, “অমিত কিন্তু এবারই ভালো করেছে এমন না। সে একটা প্রসেসের মধ্যে গত কয়েক বছর যাবত রান করছে। এখন তাকে জাতীয় দলে নেওয়ার চেয়ে আরও একটু সময় দিলে ভালো হয়। সে আরও শিখুক। এবার ভালো করেছে, সামনের বারও করুক। সেই সেঙ্গ জাতীয় দলের পাইপলাইন হয়ে সে সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলুক এটাই চাইবো।”
খালেদ আহমেদ অবশ্য পরিক্ষীত ক্রিকেটার। জাতীয় দলের হয়ে টেস্ট খেলেছেন একাধিক। সেসবে উইকেট নেওয়ার সামর্থ্যও দেখিয়েছেন। রাজিন ও সিলেটের কাজ তাই সহজ হয়েছে টেস্ট অভিজ্ঞ একজনকে দলে পেয়ে।
অবশ্য সিলেট দলে নয় রাজিন খালেদকে দেখতে চেয়েছিলেন উইন্ডিজ সফরের টেস্ট দলে, “খালেদ এই মৌসুমে দুর্দন্ত বল করেছে। ব্যাটিং উইকেটে সে ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়েছে। এটা সহজ কথা না। আমি জানি না সে কেন উইন্ডিজ টেস্ট দলে সুযোগ পায়নি। সে দলে তাকায় সিলেট উপকৃত হয়েছে কিন্তু আমিও কে জাতীয় দলে দেখতে চাইতাম।”
আরও এক ম্যাচ বাকি এবারের মৌসুম শেষ হতে। তার আগেই সর্বোচ্চ চার জয়ে শিরোপা নিশ্চিত করেছে সিলেট। শেষ ম্যাচেও জিতলে সবচেয়ে বেশি ৫ জয় ও অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পাবে দলটি। যে ছন্দে তারা আছে, সেই স্বাদ পাওয়া সিলেটের জন্য অসম্ভব কিছু না।