বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন আগামী ২৬ অক্টোবর। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু হচ্ছে ৯ অক্টোবর। তবে নির্বাচন কেন্দ্র করে আগের মতো কোনও উন্মাদনা নেই। পক্ষ-প্রতিপক্ষের কোনও হুংকারও নেই। সভাপতি পদে তাবিথ আউয়াল ছাড়া কারও নাম শোনা যাচ্ছে না। এই পদে তরফদার রুহুল আমিন সবার আগে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে প্রথমেই চুপসে গেছেন। বলা যায়, বাফুফের সর্বোচ্চ পদে সাবেক সহ-সভাপতি তাবিথ আউয়ালই একরকম ফেভারিট। নিজের ফুটবল চিন্তা নিয়ে তিনি টেলিফোনে কথা বলেছেন সকাল সন্ধ্যার ক্রীড়া সম্পাদকের সঙ্গে।
প্রশ্ন: বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি পদে আপনার কোনও প্রতিদ্বন্দ্বীই দেখা যাচ্ছে না। আগে এই পদে আরেকজন নির্বাচন করার ঘোষণা দিলেও এখন কোনও কথা বলছেন না।
তাবিথ আউয়াল: কী বলেন! নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে কেবল। আমার বিপক্ষে কেউ না কেউ দাঁড়াবে নিশ্চয়ই। আমি যখন ঘোষণা দিয়েছি তখন আমি নির্বাচনে আছি এবং জেতার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করব।
প্রশ্ন: আপনার প্যানেলে সিনিয়র সহ-সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সদস্য পদে কারা আছেন?
তাবিথ: আমার কোনও প্যানেল নাই। সভাপতি পদে আমি নির্বাচন করছি, সেটাই জানি। আগের দুবার সহ-সভাপতি হয়েছিলাম একা নির্বাচন করেই। এবারও তাই। অন্যরা নির্বাচন সবার জন্য উন্মুক্ত, ফুটবলে যারা আগ্রহী তারা নির্বাচনে আসুক। এটা তো ভাল, নিজের যোগ্যতায় পাস করে আসার সুযোগ তৈরি হয়েছে।
প্রশ্ন: জাতীয় দলের অবস্থা তো খারাপ, ভাল রেজাল্ট করতে পারছে না…
তাবিথ: শুধু জাতীয় দল নিয়ে কাজ করলে হবে না। পুরো ফুটবল নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ছেলেদের লিগ, মেয়েদের খেলা, বয়সভিত্তিক ফুটবল- সবকিছুতেই নজর দিতে হবে। যেমন ধরুন, খেলা করব কিন্তু ভেন্যু নেই- এটা যেমন ঠিক করতে হবে; আবার সবই আছে খেলার মতো ফুটবলার নেই, এটাও হতে দেওয়া যাবে না। ফুটবল উন্নতির জন্য যেসব অনুষঙ্গগুলো দরকারি সবই আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। সবকিছু ভালভাবে চললেই জাতীয় দলের চেহারা বদলাবে, ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাবে।
প্রশ্ন: আপনি দুই দফায় ৮ বছর সহ-সভাপতি ছিলেন। বাফুফে ও দেশের ফুটবল সম্পর্কে আপনার ভাল ধারণা আছে। তাতে কি সভাপতি পদে কাজ করা সহজ হবে?
তাবিথ: আমার কিছু ধারণা আছে, এটা ঠিক। বিশ্ব ফুটবলটা কীভাবে চলছে, সেটাও আমি জানি। আমি বিশ্বাস করি, সভাপতি হলে ফুটবলের কাজ করাটা খুব কঠিন হবে না।
প্রশ্ন: ফুটবল চালাতে গেলে অনেক টাকার দরকার। টাকার সংস্থান করাটাও কঠিন কাজ। বিশেষ করে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষেও ফুটবলের জন্য বড় বরাদ্দ দেওয়া সহজ নয়।
তাবিথ: সরকার রাষ্ট্র মেরামতের কাজ করছে। ফুটবল দেশের একটা সম্পদ। এটা দিয়ে তরুণদের যেমন পথে রাখা যায় তেমনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিও আনা যায়। এই বাস্তবতাটা সরকারকে বোঝাতে হবে আমাদের। এটা বুঝে সরকার নিশ্চয়ই ফুটবলে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে। এছাড়া ফিফা-এএফসির অনুদানগুলো কাজে লাগাতে হবে। স্থানীয়ভাবে ফুটবলের যারা স্পন্সর তারা নিশ্চয়ই আমাদের সঙ্গে থাকবে। আসলে পুরো পৃথিবীতে ফুটবল যেভাবে চলে তার বাইরে তো আমরা যেতে পারব না। সরকার, স্পন্সর, ফিফা-এএফসি সবার পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিতে হবে।
প্রশ্ন: গত চার বছরে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে নিষিদ্ধ করে ফিফা বাফুফেতে অর্থিক অনিয়মের বিষয়টাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সঙ্গে আরও কয়েকজনকে নিষিদ্ধ করে ফিফা। ফুটবলের দুর্নাম হয়েছে অনেক বেশি…
তাবিথ: এই দুর্নামের কাজগুলোর পাশাপাশি সুনামও কিছু ছিল। ফুটবল ফেডারেশন এই জিনিসগুলো বিজ্ঞাপিত করতে পারেনি। ভবিষ্যতে অবশ্যই বাফুফের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড নিয়ম-নীতি মেনে করতে হবে। এবং নির্ভুলভাবে করতে হবে।
প্রশ্ন: নিয়ম-নীতির যে ব্যত্যয় হয়ছে তার আরেকটা বড় উদাহরণ হলো নিষিদ্ধ সোহাগকে বাফুফে ফুটবল থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করলেও তার কোনও আনুষ্ঠানিক চিঠি দেয়নি। অথচ বাফুফে কর্তারা সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে বলেছিল তার আজীবন নিষেধাজ্ঞার কথা…
তাবিথ: কী সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সেটা আমি জানি না। আমি নির্বাচিত হলে সভার কাগজ-পত্রগুলো ঘেঁটে দেখব, তারপর বলতে পারব। এছাড়া গঠনতন্ত্রের ব্যাপারগুলোও দেখতে হবে। তার সংস্কার করতে হলে আইন ও নিয়ম-কানুনের মধ্য দিয়ে করতে হবে।