মালদ্বীপের বিপক্ষে জয়ের আশায় ঘরের মাঠে খেলতে নেমেছিলেন তপু বর্মণরা। কিন্তু জয় দূরে থাক প্রথম ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে মালদ্বীপের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। রাকিব হোসেন, শেখ মোরসালিনদের এমন হারের কোনও ব্যাখ্যা জানা নেই কোচ হাভিয়ের কাবরেরার।
সংবাদ সম্মেলনে মুখে শুকনো হাসি টেনে নিয়ে কাবরেরা বলেন, “এই হার খুবই বেদনাদায়ক। এটার কোনও ব্যাখ্যা নেই। আজকের ম্যাচে আমরা অনেক সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু গোল করতে পারিনি। কিন্তু একই সঙ্গে ওদের নিয়ে গর্বিত। প্রথমার্থে অনেকবার গোল হতে পারতো। কিন্তু সত্যি বলতে ওরা গোল পায়নি। তবে পরের ম্যাচে অবশ্যই একই আত্মবিশ্বাস, একই রকম আক্রমণাত্মক মানসিকতা নিয়ে ফুটবল খেলবো।”
এমন হারের পরও ফুটবলারদের প্রশংসা করলেন কোচ, “দলের পারফরম্যান্সে আমি খুশি। কারণ যেভাবে আমরা পরিশ্রম করেছি, খেলেছি সেটা ইতিবাচক দিক। এখনও অনেক কিছু পরিবর্তনের সুযোগ আছে। কিন্তু এই হার কোনও কিছু দিয়েই ব্যাখ্যা করা যাবে না। এখন থেকেই ইতিবাচক দিকগুলো নিতে হবে।”
ভুটানের বিপক্ষে গত সেপ্টেম্বরে হেরেছিল বাংলাদেশ। সেই একই ভুল এই ম্যাচেও করেছেন ফুটবলাররা। বক্সের সামান্য বাইরে থেকে সেটপিস থেকে নেওয়া মালদ্বীপ ফরোয়ার্ড আলী ফাসিরের হেড থেকে গোলটা হয়েছে। তবে বারবার এভাবে গোল খেয়ে চিন্তিত কোচ, “আমরা ভুটানের সঙ্গেও একই ভুল করেছিলাম। এমন একটা ফ্রি কিক থেকে গোল খেয়েছিলাম। সেট পিস নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমাদের এটা নিয়ে কাজ করতে হবে। ”
নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গিয়ে কোচ পিটার বাটলার বলেছিলেন বাংলাদেশ নারী দল পুরুষদের চেয়ে অনেক ভালো ফুটবল খেলে। সংবাদ সম্মেলনে উঠে এল সেই প্রসঙ্গও। এ ব্যাপারে কাবরেরার জবাব, “ আমরা নারী দল নিয়ে গর্বিত। ওদের প্রতিটি ম্যাচ উপভোগ করি। জয় পায় ওরা। ফুটবল এখন ছড়িয়ে যাচ্ছে। নারী দলের কোচ যেটা বলেছেন সেটার প্রতি আমার পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে।
তবে এরপরও বলব এসব নিয়ে কোনও তুলনা করতে চায় না পুরুষ ও নারী ফুটবল নিয়ে। ওরাও ভালো করছে।”
মালদ্বীপের বিপক্ষে জয় পেলে এশিয়ান কাপের পট তিনে থাকার সম্ভাবনা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু সেই সম্ভাবনা দেখছেন না তিনি, “ আমরা এশিয়ান কাপ ড্রয়ের পট তিনে থাকছি না এটা নিশ্চিত। যদি দুটি ম্যাচই জিততাম তাহলে থাকতাম। এখন আর সেই সু্যোগ নেই। আমি মনে করি, এত কিছুর পরও দলের পারফরম্যান্স ইতিবাচক ছিল।”
মালদ্বীপের বিপক্ষে রক্ষণভাগের প্রশংসা করেছেন কোচ। অভিষিক্ত ডিফেন্ডার শাকিল আহাদের প্রশংসা ছিল। এমনকি গোলরক্ষক মিতুল মারমার এই ম্যাচে নার্ভাস মনে হলেও কোচ তারও প্রশংসা করেন, “আমি মনে করি, একজন ১৮ বছর বয়সী সেন্টার ব্যাক (শাকিল আহাদ) তার প্রথম ম্যাচেই টপ পারফরম্যান্স করেছে। এমন ম্যাচ খেলা সবসময় কঠিন যখন ১৫ মিটার পেছন থেকে ডিফেন্স লাইন অনুসরণ করে খেলতে হয়। আমি মনে কর, মিতুল ২০০ ভাগ আত্মবিশ্বাসী ছিল। গোলরক্ষক নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। মিতুল অনেক কিছুই ভালো করেছে। বাকি যারা গোলরক্ষক আছে তারাও প্রস্তুত সবসময়। এই পজিশনে খেলা সহজ নয়। টানা আক্রমণে সাহায্য করাটাও অনেক কঠিন ব্যাপার যেটা সে করেছে।”
বাংলাদেশ দলে পারফেক্ট নাম্বার নাইন নেই। এটাও স্বীকার করেছেন তিনি, “এই বিতর্কটার বিষয় আমি বুঝতে পেরেছি। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া এমনকি বিশ্বের সব দলে কতজন স্ট্রাইকার এভাবে আছে। মালদ্বীপে একজন আলী আশফাক ছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানে, বাংলাদেশে – প্রতিটি দেশে প্রতিটা ক্লাবে এমন টপ স্ট্রাইকার আছে। আসলে স্ট্রাইকার তৈরি করা কঠিন। এখানে অন্য কোনও উপায় খুঁজে বের করতে হবে। কারণ বেশির ভাগ জাতীয় দলে এমনটা নেই। এজন্য এমনটা হবেই।”
আগামী ১৬ নভেম্বর পরের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে কোচ, “ শনিবার আরেকটা ম্যাচ আছে । চেষ্টা করবো ওই ম্যাচ জিততে।”