ইলিশ রপ্তানি নিয়ে আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ভারতে ৩ হাজার মেট্রিকটন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
শনিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সুলতানা আক্তার স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিভিন্ন রপ্তানিকারকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্ধারিত শর্তাবলীপূরণ সাপেক্ষে ৩ হাজার মেট্রিকটন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হলো।’
আদেশে সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীদের আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর বেলা ১২টার মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করতে বলা হয়েছে। এই সময়ের পর আর কোনও আবেদন গ্রহণ করা হবে না।
তবে আগেই যেসব রপ্তানিকারক ইলিশ রপ্তানিতে আবেদন করেছিলেন, তাদের আর নতুন করে আবেদন করতে হবে না বলেও আদেশে বলা হয়েছে।
যদিও এর আগে সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়েছিলেন দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে এ বছর বাংলাদেশ থেকে ভারতে কোনও ইলিশ মাছ পাঠানো হবে না।
তখন তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে তারপর ইলিশ মাছ বিদেশে রপ্তানি করা হবে। দেশের মানুষ ইলিশ পাবে না, আর রপ্তানি হবে সেটা হতে পারে না। ফলে এবার দুর্গাপূজায়ও ভারতে যাতে কোনও ইলিশ না যায় তার জন্য আমি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলেছি। অবৈধ পথেও যেন কোনও ইলিশ যেতে না পারে সে বিষয়ে সীমান্ত এলাকায় কঠোর থাকতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছি।”
বাংলাদেশের মোট মৎস্য উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ এবং জিডিপির প্রায় ১ শতাংশ ইলিশ মাছের অবদান। মৎস্যজীবীরা প্রতি বছর প্রায় ৬ লাখ টন ইলিশ ধরে। এর অধিকাংশই সমুদ্র থেকে ধরা হয়। ২০১৭ সালে ইলিশকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সূচক হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তবে ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত রপ্তানি বন্ধ ছিল।
সবশেষ গতবছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিকটন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। দেশের ৭৯টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটিকে ৫০ মেট্রিকটন করে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়।
ওই বছর ১১ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে তৎকালীন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জানিয়েছিলেন, চার বছরে ভারতে ৫ হাজার ৫৪১ মেট্রিকটন ইলিশ রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ।
গত ৫ বছর ধরে ভারতে ইলিশ আমদানি হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। এবারও সেই রীতি মেনে ভারতে ইলিশ পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে আবেদন করে ফিস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন।