চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস থেকেই দাতাদের কাছ থেকে বাংলাদেশ যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাচ্ছে তারচেয়ে তাদেরকে বেশি অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে। এই ধারা অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরেও ছিল।
এই চার মাসে বাংলাদেশ দাতাদের কাছ থেকে যে পরিমাণ বৈদেশিক ঋণ সহায়তা পেয়েছে পরিশোধ করেছে তার ১৬ শতাংশ বেশি। দাতাদের কাছ থেকে নতুন ঋণ ছাড়ের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৬ শতাংশ পিছিয়ে পড়েছে।
এভাবে টানা চার মাস বৈদেশিক ঋণ পাওয়ার চেয়ে বেশি পরিশোধ করা দেশের ইতিহাসে বিরল ঘটনা। এর আগে কখনোই টানা চার মাস বৈদেশিক মুদ্রা পরিশোধ ও ছাড়ে এরকম নেতিবাচক পরিস্থিতি আর দেখা যায়নি।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী গত অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে বাংলাদেশ দাতাদের কাছ থেকে ঋণ ও অনুদান মিলে ছাড় করতে পেরেছে মাত্র ১২০ কোটি ডলার। বৈদেশিক ঋণের এই ছাড় আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬ শতাংশ কম।
গত অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে দাতারা বাংলাদেশের অনুকুলে ছাড় করেছে ১২০ কোটি ২০ লাখ ডলার। অর্থবছরের প্রথম চার মাসের এই অর্থ ছাড় গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪২ কোটি ৪১ লাখ ডলার বা ২৬ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণের ছাড় হয়েছিল ১৬২ কোটি ৬১ লাখ ডলার।
এ বছরের চার মাসে দাতাদের কাছ থেকে ঋণ হিসাবে যা পাওয়া গেছে তার বিপরীতে দাতাদের আগের পাওনার কিস্তি হিসাবে পরিশোধ করতে হয়েছে ২৩ কোটি ৫৯ লাখ ডলার বেশি।
গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বৈদেশিক ঋণ পাওয়া গিয়েছিল ১৪৩ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। সেখানে এবারের প্রথম চার মাসে পাওয়া গেছে ১২০ কোটি ২০ লাখ ডলার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইআরডির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “আসলে বর্তমান সরকারের সমন্বয় ও পরিকল্পনাহীনতার কারণে এই সমস্যা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “দাতাদের কাছ থেকে আমরা কোনও উন্নয়ন প্রকল্পের বিপরীতেই ঋণ চুক্তি করে থাকি। তাই প্রকল্পের কাজ চললে সেই কাজের বিপরীতে দাতারা অর্থ ছাড় করে। কিন্তু গত চার মাসে দেশে প্রকল্প বাস্তবায়নের কোনও গতিই তুলতে পারেনি।
“সরকার উল্টো প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার দিকেই বেশি মনোযোগী বলে আমাদের মনে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বৈদেশিক মুদ্রার ছাড় কম হবে এটাই স্বাভাবিক।”