২০২৩ সালে দিল্লি অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামের পশ্চিম দিকের ক্রিকেটারদের ড্রেসিংরুমের নাম দেওয়া হয় বিরাট কোহলি প্যাভিলিয়ন। এর উত্তর-পূর্ব কোণে বড় গ্যালারির নাম আগে থেকেই গৗতম গম্ভীরের নামে করা ছিল ২০১৯ সাল থেকে। ২০২৩-এই আইপিএলে মাঠেই বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন দিল্লির দুই ক্রিকেটার।
এরপর মুখোমুখি প্যাভিলিয়ন-গ্যালারি তাদের নামে নামকরণ করা নিয়ে বেশ হাসি ঠাট্টা ও চর্চা হয়েছে সংবাদ মাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। দিল্লিতে খেলা মানেই এখন কোহলি-গম্ভীর। আর সব মিলিয়ে দিল্লি স্টেডিয়ামটাও একটু ব্যতিক্রম। ভারতের অন্য সব স্টেডিয়ামের মতো নয়। এই মাঠের গ্যালারি শুধুই এই রাজ্যের ক্রিকেটারদের নামে নামকরণ করা হয়েছে।
অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম যা আগে ছিল ফিরোজ শাহ কোটলা – মাঠটিতে মোট পাঁচ দিল্লি ক্রিকেটারের নাম আছে। ভারতের যে কোনও স্টেডিয়ামের মধ্যে সর্বোচ্চ। মূল গেট বীরেন্দর শেবাগের নামে। দক্ষিণ গ্যালারি মহিন্দর অমরনাথের নামে। উত্তর গ্যালারি বিষেণ সিং বেদির নামে। পূর্ব গ্যালারি গৌতম গম্ভীর ও পশ্চিম গ্যালারি কোহলির নামে।
দিল্লি রাজ্য ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন চেয়ারম্যান অরুণ জেটলির ছেলে রোহান জেটলি এই ব্যাপারটিকে বলছেন নতুনত্ব। সকাল সন্ধ্যাকে তিনি বলেছেন, “এটা আমাদের রাজ্য ক্রিকেটের একটা মহান উদ্যোগ যে আমরা দিল্লির ক্রিকেটারদের আলাদা সম্মান দিতে চাই। অনেক স্টেডিয়ামেই দেখবেন শুধু দিক উল্লেখ করে গ্যালারি দেওয়া থাকে। আমরা সেরকম কিছু চাইনি। ইন্দোর এবং মুম্বাইতেও এই রীতিটা আছে। কিন্তু ইন্দোরে সেরা ক্রিকেটারদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে স্থানীয় নয়। আমরাই প্রথম স্থানীয় ক্রিকেটারদের এই সম্মান দিয়েছি।”
ইন্দোর ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিকে নাইডু, মুশতাক আলি, মনসুর আলি খান পাতৌদি, রাহুল দ্রাবিড়ের নামে প্যাভিলিয়ন ও গেট আছে। এছাড়া ছোট ছোট প্যাভিলিয়নের অংশ বিজয় হাজারে, অজিত ওয়াদেকার, সুনীল গাভাস্কার, কপিল দেব, শচিন টেন্ডুলকার ও অনিল কুম্বলের নামে করা হয়েছে। সেদিক থেকে সবচেয়ে বেশি ক্রিকেটারের নাম দেওয়া হয়েছে স্টেডিয়ামটিতে। কিন্তু তারা ইন্দোরের নন।
এছাড়া মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামেও বিজয় মারচেন্ট, ভিনু মানকড়, সুনীল গাভাস্কার ও শচীন টেন্ডুলকারের নামে প্যাভিলিয়ন আছে। এরা সবাই মুম্বাইয়ের। কিন্তু দিল্লি নামকরণের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় এগিয়ে আছে, মোট পাঁচজন ক্রিকেটারের নাম আছে অরুণ জেটলিতে।
এই পাঁচের মধ্যে কনিষ্ঠ দুজন গম্ভীর ও কোহলিকে নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। তাদের মাঠে ও মাঠের বাইরের লড়াই ভারতেও মুখরোচক গল্প। অথচ এটা নাকি শুধু গল্পই। দিল্লির সমাচার আজকাল নামের দৈনিকে কাজ করেন ভিকাশ চৌহান। সকাল সন্ধ্যাকে বলছিলেন, “বিরাট ও গম্ভীরের মাঝে বাজে সম্পর্ক কিন্তু নেই। এখন তারা জাতীয় দলে কিভাবে কাজ করবেন এ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল কিন্তু ওদের মধ্যে কিছুই নেই। ওরা দুজনই পাঞ্জাব বংশোদ্ভুত এবং ওদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক আছে। এমনকি কোহলি তার প্রথম ম্যাচ সেরার পুরষ্কারটাও গম্ভীরকে উপহার দিয়েছিলেন।”
চৌহান আরও যোগ করেন, “আসলে কিছু বিষয় হয়ে যায়। মাঠে দুই দলের হয়ে খেলার সময় নিজের দলের জন্য আপনি যে কোনও কিছু করতে চাইবেন। কোহলি-গম্ভীরও তাই করেছিলেন। এটাকে সংবাদ মাধ্যম অতিরঞ্জিত করে দেখিয়েছে। ওদের মধ্যে এতটা খারাপ সম্পর্ক না।”
দিল্লির এই স্টেডিয়াম ভারতের পুরোনো টেস্ট ভেন্যুর একটি। ২০২৩ সালে সংস্কারের পর আইপিএল হয়েছে। আন্তর্জাতিক ম্যাচও হয়েছে। নতুনত্বের সঙ্গে অভিনবত্বও ধরে রেখেছে। সেই সঙ্গে দিল্লির ছেলে কোহলি-গম্ভীরের রসায়নটাও আছে।