Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে আইনি আহ্বান জানানো হবে : টবি ক্যাডম্যান

ss-tobi cadman-111224
[publishpress_authors_box]

শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ভারতকে যথাযথভাবে আইনি আহ্বান জানানো হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক টবি ক্যাডম্যান।

ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে বুধবার আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

টবি বলেন, “ভারত আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলে এবং প্রত্যর্পণের একটি আইনগতভাবে বৈধ এবং যথাযথ অনুরোধের সম্মান করলে আমরা অবশ্যই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে ভারতকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের আহ্বান জানাব।”

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরও ছয় বছর প্রতিবেশী দেশটিতেই রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন তিনি।

শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর গঠিত ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নিহতদের ঘটনার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নেয়।

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছিলেন, সেই আদালতেই তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ দায়ের হয়।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ট্রাইব্যুনালে নতুন বিচারক, আইনজীবী ও তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার পর গত ১৭ অক্টোবর এই আদালত আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করে।

আর প্রথম দিনেই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ হয়।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে জানিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ টবি বলেন, “ভারত আগামীতে কি করতে যাচ্ছে, তার কোনও প্রাক-বিচার এখনই আমরা করতে চাই না। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যথাযথভাবে অভিযোগ আনা এবং তাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে ভারতকে জানানোর বিষয়টি নিশ্চিত করার গুরুদায়িত্ব এখন ট্রাইব্যুনালের এবং এর চিফ প্রসিকিউটরের।”

বাসস জানিয়েছে, তবে কোনও কারণে হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ প্রত্যাখ্যাত হলে তার অনুপস্থিতিতেই বিচার করা যায় কিনা, কিংবা এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সহায়তা নেওয়া যায় কি না তা নিয়ে আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি।

বিচারের বর্তমান প্রক্রিয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পূর্ণ সহায়তা ও সমর্থন প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি যুক্তরাজ্য, মার্কিন দূতাবাস, ইইউ এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। অনেকের সমর্থন পাওয়ার ব্যাপ্যারে আমরা আশাবাদী।”

তবে ইউরোপীয় কিছু রাষ্ট্র আছে যারা বিচার ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকলে প্রত্যর্পণ বা প্রমাণ সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানায়। এই বিচার প্রক্রিয়ার সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হলে তা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের সমর্থন হারাবে কিনা এ বিষয়ে সরকারকে আলোচনায় বসতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের সংশোধনী বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি মনে করি, এরই মধ্যে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যে সংশোধনীগুলো করা হয়েছে, সেগুলো সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য এবং এখনও কিছু বিষয় রয়েছে যা সংশোধন করা দরকার।”

এসময়, বাংলাদেশের মানুষকে, বিশেষত গণমাধ্যমকে ধৈর্যধারণ করে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, “যেহেতু এগুলো খুবই জটিল ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলা, সেহেতু এর সঙ্গে জড়িত কাজগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বাইরের কোনও হস্তক্ষেপ ছাড়াই কাজ করতে দিতে হবে।”

গত ২০ নভেম্বর ব্রিটিশ আইনজীবী, লন্ডনভিত্তিক ল’ ফার্ম ‘গুয়ের্নিকা ৩৭’ গ্রুপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ‘গুয়ের্নিকা-৩৭ চের্ম্বাস’-এর যুগ্ম প্রধান টবি ক্যাডম্যানকে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি নিজেই তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে একথা জানান।

এর পরপর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে, টবির নিয়োগ ট্রাইব্যুনালের এক উল্লেখযোগ্য মাইলফলক বলে মন্তব্য করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত