দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হবে ২৮ নভেম্বর থেকে। যদিও কোথা থেকে জাহাজ ছাড়া হবে, সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
তবে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দিনে ২ হাজারের বেশি পর্যটকের যাতায়াত ও রাত্রিযাপনে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
সোমবার সন্ধ্যায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) নিজাম উদ্দিন আহমেদ।
সাধারণত অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের প্রথম দিকে শুরু হয় দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল। কিন্তু এবার সরকারের নেওয়া উদ্যোগ ও প্রশাসনিক বিধিনিষেধের জটিলতায় এখনও তা শুরু করা সম্ভব হয়নি।
গত ২২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভায় সেন্ট মার্টিনে নানা বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ অক্টোবর মন্ত্রণালয় থেকে একটি পরিপত্র জারি করে বলা হয়, সেন্ট মার্টিনে নৌযান চলাচলের বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেবে।
পরিপত্রে আরও বলা হয়, নভেম্বরে দ্বীপে পর্যটক গেলেও দিনে ফিরে আসতে হবে, সেখানে রাত্রিযাপন করা যাবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাত্রিযাপন করা যাবে। প্রতিদিন পর্যটকের সংখ্যা গড়ে ২ হাজারের বেশি হবে না। দ্বীপে শব্দদূষণ করা যাবে না, রাতে আলো জ্বালানো যাবে না, বার-বি-কিউ পার্টি করা যাবে না।
এমন ঘোষণার পর এবার জাহাজ চলাচলের সময় নির্ধারণ করা হলো। তবে এসব জাহাজ কোথা থেকে ছাড়বে তা নির্ধারণ করবে মন্ত্রণালয়ের গঠন করা ‘সেন্ট মার্টিন দ্বীপে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ’ সংক্রান্ত কমিটি।
গত ১৯ নভেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটিতে কক্সবাজার সদর ও টেকনাফের ইউএনওকে আহ্বায়ক করা হয়েছে।
নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, জাহাজ চলাচলের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে একটিমাত্র আবেদনপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার জেলা প্রশাসন কেয়ারি সিন্দাবাদ নামের একটি জাহাজ কর্তৃপক্ষকে চলাচলের অনুমতি দেয়।
“তবে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দ্বীপে ২ হাজারের বেশী পর্যটক যাতায়াত করতে পারবে না। নভেম্বর ও ফেব্রুয়ারিতে দ্বীপে রাত্রিযাপনের নিষেধাজ্ঞাও বলবৎ থাকবে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে পর্যটকরা দ্বীপে রাত্রিযাপন করতে পারবেন।”
মন্ত্রণালয়ের গঠন করা কমিটির আহ্বায়ক ও কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী বলেন, “মঙ্গলবার বিকালে কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্টিত হবে। সেখানে কমিটির সদস্যদের সঙ্গে পরিবেশসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
তবে কমিটির সদস্যদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপে সবাই জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট হিসেবে কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়ার বিআইডব্লিউটিএ জেটি ঘাট বিবেচনা করছে বলে জানান তিনি।