জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার পরিচালনার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংস্কার করা মূল ভবন ও এজলাস কক্ষ উদ্বোধন হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় হাই কোর্টের পাশে সংস্কার করা এ ভবন ও এজলাস কক্ষ উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, এর মধ্য দিয়ে নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।
“এই ভূ-খণ্ডের বিচার বিভাগীয় ইতিহাসে ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি ‘ঢাকা হাই কোর্ট’ বা ‘পুরাতন হাই কোর্ট ভবন’ হিসেবে যে মহান ঐতিহ্য ধারণ করে আছে, ২০২৪ এর জুলাই- আগস্ট মাসে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনয়ন, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ও ন্যায়বিচারের শ্বাশ্বত নীতিসমূহের অনুসরণের মাধ্যমে তা নতুন মাত্রায় পূর্ণতা পাবে।”
অনুষ্ঠান শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, “ট্রাইব্যুনালের অবকাঠামোর যে সংস্কার কাজ করা হয়েছে তা রুটিন কাজের অংশ। জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে মানুষ মারা গেছে, এখানে মানবতাবিরোধী অপরাধের উপাদান আছে। আইনের সংজ্ঞার মধ্যে যারা পড়বেন, তাদের বিচার এই ট্রাইব্যুনালে বিচার করা হবে।”
এই বিচারে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখার গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “সরকারের মতো আমিও আশাবাদী যে, এখানে কোনও বিতর্ক রাখতে চাই না। এজন্য আইনের সংশোধন করা হয়েছে। ব্যক্তি নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ, জবাবদিহিতামূলক এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার জন্য যা যা করার প্রয়োজন, তার সব এখানে নিশ্চিত করা হবে বলে আমি প্রত্যাশা করি।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের একাধিক বিচারক, ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারসহ অন্যান্য বিচারক, ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করতে এই ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। এ আদালতের রায়ের পর চূড়ান্ত বিচার শেষে পাঁচ জামায়াত নেতা এবং এক বিএনপির নেতার ফাঁসিও কার্যকর করা হয়।
গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার এখন জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনাকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে বিবেচনা করে ওই ট্রাইব্যুনালেই বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে।
ইতোমধ্যে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যা ও গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের একাধিক মামলায় ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যান্য কর্তাব্যক্তি, তৎকালীন সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ও আমলা, পুলিশের সাবেক শীর্ষস্থানীয়দের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরেয়ানা জারি করেছে।