যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা সব স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এর ফলে কানাডার অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে কারণ দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি অ্যালুমিনিয়াম সরবরাহ করে থাকে।
রবিবার ফ্লোরিডা থেকে নিউ অরলিন্সে যাওয়ার সময় ট্রাম্প এই দুই ধাতুর ওপর শুল্ক আরোপের কথা সাংবাদিকদের জানান।
তিনি তাদের আরও জানান, এ সপ্তাহের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যে শুল্ক আরোপকারী সব দেশের পণ্যের ওপরও পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা আসবে।
ট্রাম্প বলেন, “তারা যদি যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক বসায়, তাহলে আমরাও বসাব।”
কানাডা ও মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় স্টিল বাণিজ্য অংশীদার।
এর আগে ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদকালে ২০১৮ সালে কানাডা, মেক্সিকো ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আমদানি করা স্টিলের ওপর ২৫ শতাংশ ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন।
তবে এক বছর পর কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে চুক্তি করে তাদের ওই দুটি পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করে নেন তিনি। যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আমদানি করা স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর বসানো সেই শুল্ক ২০২১ সাল পর্যন্ত বহাল ছিল।
এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় বসে ট্রাম্প যে আবার স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন, তাতে কেবল কানাডা ও মেক্সিকোই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান স্টিল রপ্তানিকারক দেশ দক্ষিণ কোরিয়াও ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তাদের গাড়ি নির্মাতাদের শেয়ারের দাম কমে যাবে।
এ মাসের শুরুর দিকে কানাডা ও মেক্সিকোর সব পণ্যে ২৫ শতাংশ এবং চীনের সব পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন ট্রাম্প, যা ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।
তিনি তখন বলেছিলেন, যেহেতু দেশ তিনটি অবৈধ অনুপ্রবেশ ও মাদক চোরাচালানের বিষয়ে কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না, তাই তাদের পণ্যের ওপর শুল্ক বসানো হবে।
কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর এই শুল্ক কার্যকরের ঠিক আগ মুহূর্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও মাদক চোরাচালানের বিষয়ে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ট্রাম্পকে আশ্বস্ত করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম পারদো।
এই দুই রাষ্ট্রনেতার কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে ৩০ দিনের জন্য তাদের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন ট্রাম্প।
তবে চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক স্থগিত বা প্রত্যাহার কোনোটিই তিনি করেননি।
এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয় চীন।
চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় সেসময় জানায়, ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা কয়লা ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ওপর ১৫ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেল, কৃষি সরঞ্জাম ও কয়েকটি স্বয়ংক্রিয় যানের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক বসবে।