লন্ডনের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করছেন তার দুই পুত্রবধূ। এ ছাড়া লন্ডনে তারেক রহমানের বাসা থেকে আনা খাবারই খাচ্ছেন তিনি। সবমিলিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হাসপাতালে তার ভালো সময় কাটছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ।
বুধবার যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সরাসরি লন্ডন ক্লিনিকে নিয়ে সেখানে ভর্তি করা হয়।
কয়ছর আহমদ জানান, হাসপাতালে খালেদা জিয়ার প্রতিদিনের সকালের নাস্তাসহ প্রতি বেলার খাবার তারেক রহমানের বাসা থেকেই আসছে। ঘরোয়া পরিবেশে, আমেজ করে তিনি (খালেদা জিয়া) খাওয়া-দাওয়া করছেন।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক বলেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে সব সময় তার ছেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান, প্রয়াত ছোট ছেলে কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান ও নাতনিরা আছেন। এত বছর পর পরিবারের সবার সঙ্গে দেখা হয়েছে, এতে তাদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, “অনেক বছর পর আমরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের মুখে সবচেয়ে বেশি খুশি দেখেছি। মনে হচ্ছে উনার চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেছে খুশিতে। মাকে কাছে পেলে যা হয়। মা ও ছেলের এত আনন্দ দেখে আমাদের নেতাকর্মীদের মনে ঈদের আনন্দ চলে এসেছে।”
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। তার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ে কয়েক বছর আগে। এর মধ্যে তার হৃদপিণ্ডে স্টেন্ট বসানো হয়, বসানো হয় পেস মেকারও।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বন্দিদশা থেকে মুক্তির পাঁচ মাস বাদে চিকিৎসার জন্য গত মঙ্গলবার রাতে লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন খালেদা জিয়া। লন্ডনে তার সঙ্গে আছেন ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেনও।
তিনি বলেন, “দ্য লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসক প্রফেসর জন পেট্রিক কেনেডির অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন আমাদের চেয়ারপারসন। উনাকে কার্ডিওলজিস্ট, আইসিইউ স্পেশালিস্ট, ফিজিও থেরাপিস্টসহ অন্যান্য বিশেজ্ঞরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে কিছু পরীক্ষা শুরুও হয়েছে। আশা করছি একদিনের মধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্ব শেষ হবে।”
জাহিদ হোসেন আরও বলেন, “যেহেতু এখানে দীর্ঘ ছুটি গেল, এখনও হাসপাতালে অনেক কনসালট্যান্ট ছুটিতে আছেন, উনারা আসবেন, তাকে দেখবেন। দেখে উনার পরবর্তী চিকিৎসার পদ্ধতি কী হবে সে ব্যাপারে সুপারিশ করবেন। বাংলাদেশ থেকে মেডিকেল বোর্ডের সম্মানিত সদস্যরাও আছেন, উনারাও এখানকার চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।”