বক্সিং কিংবদন্তি মাইক টাইসন বনাম জেইক পল এর লড়াই দেখলো সারা বিশ্ব। নেটফ্লিক্সে এই দুই বক্সার এর লড়াই সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। প্ল্যাটফর্মটির দাবী, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬ কোটি দর্শক ইভেন্টটি সরাসরি দেখেছে। ১৬ নভেম্বর টেক্সাসের এটিঅ্যান্ডটি স্টেডিয়ামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়।
নেটফ্লিক্সের এই উদ্যোগটিকে প্রশংসায় ভাসিয়েছে আইটি জায়ান্টরা। ইভেন্টটি বিনামূল্যে দেখার সুযোগ করে দেয় প্ল্যাটফর্মটি।
তবে, দুই প্রজন্মের এই লড়াই নেটফ্লিক্সে দেখতে গিয়ে হতাশ হয়েছেন অনেকেই। কোন কোন সাবস্ক্রাইবারের অভিযোগ, সম্প্রচার চলাকালীন বার বার ক্র্যাশ করছিল এই স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম।
অবশ্য ম্যাচটি যারা নির্বিঘ্নে দেখতে পেরেছেন তারাও সমালোচনা করতে ছাড়েননি। তাদের মতে জমজমাট লড়াইয়ের আশায় স্ক্রিনের সামনে বসলেও মন ভরেনি তাদের। কারণ লড়াইটি নাকি খুব একটা জমেনি।
তবে ৫৮ বছর বয়সী সাবেক বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন মাইক টাইসন ২৭ বছর বয়সী বক্সার এবং ইউটিউবার জেইক পলের কাছে পরাজিত হয়েছেন।
নেটফ্লিক্সে সম্প্রচারিত ইভেন্টটির দিকে তাকিয়ে ছিল সারাবিশ্বের গণমাধ্যম। বক্সার টাইসন তো বটেই, জেইক পলও নতুন প্রজন্মের দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়।
ম্যাচের দিন রিংসাইডে বসেছিল তারকার মেলা। উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী শার্লিজ থেরন, অভিনেতা রাফ ম্যাকিও, আমেরিকান গায়ক-গীতীকার জো জোনাস এবং স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান হাসান মিনহাজের মতো তারকারা।
এমন ঐতিহাসিক একটি ম্যাচ, অথচ অসংখ্য সাবক্রাইবারের দাবি বাফারিং সমস্যার কারণে তারা নেটফ্লিক্সে প্রবেশ করতে পারেননি।
প্রতিক্রিয়া জানিয়ে একজন এক্স ব্যবহারকারী লিখেছেন, “লড়াইটি দেখার অযোগ্য ছিল”। একজন নারী দর্শক “ক্ষুব্ধ” বলে মন্তব্য করেছেন। আরেকজনের অভিযোগ, “সারারাত জেগে কোন লাভই হলো না”।
এদিকে নেটফ্লিক্স প্রযুক্তিগত এইসব ত্রুটির ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ডেভনের বাসিন্দা ব্রেন্ডান অ্যাশফোর্ড বিবিসি নিউজকে জানান, স্থানীয় সময় ভোরবেলা ম্যাচটি শুরু হওয়ায় গভীর রাত থেকে তিনি জেগে ছিলেন।
তিনি বলেন, “আমি দেখতে চেয়েছিলাম ৫৮ বছর বয়সে মাইক টাইসন তার চেয়ে অনেক কমবয়সী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে কেমন পারফর্ম করেন”।
অ্যাশফোর্ড বলেন “আমি সাধারণত রাত জাগি না, কিন্তু ভেবেছিলাম এটি দেখার মতো হবে।”
তিনি জানান, স্থানীয় সময় রাত ৪টায় তিনি নেটফ্লিক্সে প্রবেশের চেষ্টা করেন। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও বাফারিং এর সমস্যার কারণে ম্যাচটি দেখতে পারেননি তিনি।
তার মতে এমন প্রযুক্তিগত সমস্যা নেটফ্লিক্সের সুনাম খর্ব করবে।
লাইভ স্ট্রিমিং করতে গিয়ে এর আগেও নেটফ্লিক্স সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল বলে জানা গেছে।
গত বছর জনপ্রিয় ডেটিং শো ‘লাভ ইজ ব্লাইন্ড‘ এর পুনর্মিলনী পর্বের সরাসরি সম্প্রচারের সময়ও বিঘ্ন ঘটায় নেটফ্লিক্স তার দর্শকদের কাছে ক্ষমা চায়।
হেভিওয়েট এই ম্যাচের সম্প্রচার নিয়ে সমস্যাগুলোর কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা সাংবাদিক ক্রিস স্টোকেল ওয়াকার বলেছেন, এই লড়াই দেখার বিপুল চাহিদাই নেটফ্লিক্সের সম্প্রচারকে কঠিন করে দেয়।
সাংবাদিক ক্রিস স্টোকেল বলেন, “যারা বক্সিংয়ের বড় ভক্ত নন, তারাও প্রচার প্রচারণার কারণে ম্যাচটি দেখতে চেয়েছিলেন। ফলে স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি চাহিদা তৈরি হয়েছিল।”
ক্রিসের মতে, এই অতিরিক্ত চাহিদাই কাল হয়েছে নেটফ্লিক্সের জন্য।
নেটফ্লিক্স ২০২৩ সালে প্রথম কোন ইভেন্ট সরাসরি সম্প্রচার করে। স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান ক্রিস রকের ‘ক্রিস রক: সিলেক্টিভ আউটরেজ’ শিরোনামের শোটি সে বছর সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।