Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪
Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪

সামিটের এলএনজি না মিললেও বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি

মহেশখালীতে সামিটের এলএনজি টার্মিনাল।
মহেশখালীতে সামিটের এলএনজি টার্মিনাল।
Picture of বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

বিশেষ প্রতিনিধি, সকাল সন্ধ্যা

সামিটের এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ কারিগরি ত্রুটির কারণে মঙ্গলবার শুরু করা যায়নি। সিঙ্গাপুর থেকে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ শেষে এলএনজিবোঝাই জাহাজ কক্সবাজারের মহেশখালী আসে ২ এপ্রিল। এরপর গ্যাস সরবরাহ দিতে অনেক চেষ্টা করা হলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত সেই চেষ্টা সফল হয়নি।

বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কর্তৃপক্ষ আশা করেছিল, সোমবার থেকে সামিটের টার্মিনাল চালু হবে। এরপর বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

সামিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নির্ধারিত সময়ে গ্যাস পাওয়া না গেলেও সোমবার থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। মূলত সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত-শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাহিদা কমে যায়। এতে লোডশেডিং হ্রাস পায়।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) চট্টগ্রামের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “ঈদের ছুটি শুরু না হলে আমরা বড় ধরনের বিপাকে পড়তাম। এখন চাহিদা-যোগান সমান থাকায় লোডশেডিং হচ্ছে না। তবে ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার আগেই যদি এলএনজি দিয়ে উৎপাদন বাড়ানো না যায়, তাহলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হবে।”

গ্যাস বিতরণকারী কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা বলেন, ঈদের ছুটির পর ১৪ এপ্রিল থেকে সামিটের টার্মিনাল চালুর চেষ্টা হতে পারে। ততদিন পর্যন্ত একটি টার্মিনাল দিয়েই এলএনজি সরবরাহ করা হবে।

তবে এ বিষয়ে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, “ঈদের পর এলএনজি সরবরাহ চালু হতে পারে, বিষয়টি সঠিক নয়। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। যেকোনো মুহূর্তে এটি সচল হতে পারে। সেটা কালকেও হতে পারে।”

সাগরে বা অফশোরে সংযোগ লাইনের কাজ চ্যালেঞ্জিং জানিয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, “আবহাওয়া অনুকূলে নয়। তাই চালু করতে সময় লাগছে। আমরা নিজেরা রবিবার এলএনজি সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেছি। সেটি সম্ভব হয়নি। সাগরে এখন এলএনজিভর্তি জাহাজ আছে। সংযোগ চালু করতে পারলেই সরবরাহ দেওয়া যাবে।”

সামিটের এলএনজি টার্মিনাল চালু হলে দিনে কী পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ দেওয়া যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির মাধ্যমে এখন দিনে গড়ে ৬০০ ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে। সামিট চালু হলে দিনে গড়ে আরও ৫০০ ঘনফুট সরবরাহের সক্ষমতা হবে। তবে সরবরাহের পরিমাণ চাহিদার ওপর নির্ভর করবে।”

সামিটের টার্মিনাল চালু হওয়ার আশায় এলএনজিনির্ভর বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা যায়নি। ফলে এপ্রিলের শুরু থেকে দেশে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়ে যায়। দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪৫ শতাংশই গ্যাসনির্ভর। গ্যাস দিয়ে ১১ হাজার ৫৭৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়।

মহেশখালীর ভাসমান দুটি টার্মিনাল দিয়ে আমদানিকৃত এলএনজি সরবরাহ করা হয়। সামিট ও এক্সিলারেট এনার্জির টার্মিনালে জাহাজে করে আসা এলএনজিকে গ্যাসে রূপান্তর করা হয়।

গত অক্টোবরে এক্সিলারেট এনার্জির টার্মিনাল রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হয়। এসময় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ছিল।

এবছরের ১৯ জানুয়ারি থেকে এক্সিলারেট এনার্জি ফের গ্যাস সরবরাহ শুরু করে। রক্ষণাবেক্ষণের সময় এই টার্মিনালের সক্ষমতা বাড়িয়ে ৫০০ মিলিয়ন থেকে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত করা হয়। এই বাড়তি সক্ষমতার পুরোটা এখন চালু।

সরকার বিদেশ থেকে দুভাবে এলএনজি আমদানি করে, যা ২০১৮ সাল থেকে চালু আছে। একটি সরকারের সঙ্গে সরকারের (জিটুজি) দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির মাধ্যমে। আরেকটি হচ্ছে আর্ন্তজাতিক বাজার, যাকে স্পট মার্কেট বলে। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজি আমদানির সুবিধা হচ্ছে, আর্ন্তজাতিক বাজারে দাম ওঠানামার প্রভাব এক্ষেত্রে থাকে না।

দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এবছর কাতার থেকে ৪০টি জাহাজে করে ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন টন এলএনজি আমদানি করা হবে। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশটি থেকে ৬টি এলএনজিবোঝাই জাহাজ আসে।

এছাড়া এই চুক্তি অনুযায়ী, ওমান থেকে বছরে ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন টন এলএনজি আমদানি করা হয়। এবছর দেশটি থেকে আরও ১৬টি জাহাজে করে এলএনজি আমদানি করা হবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত