২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি উসমান খানের ছবি দিয়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স নিজেদের ফেইসবুক পেজে লিখেছিল ‘উসমান আসছে’। পাকিস্তানে জন্ম নেওয়া আর আরব আমিরাতে থিতু হওয়া অপরিচিত ক্রিকেটারটিকে নিয়ে এমন উচ্ছ্বাস দেখে ছবির নিচে আসতে থাকে আপত্তিকর সব মন্তব্য।
সেবার খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে ৫৮ বলে অপরাজিত ১০৩ রানের ইনিংসে নিজেকে চিনিয়েছিলেন উসমান। এরপর বলেছিলেন, ‘‘আমার ইন্সটাগ্রাম নেই, ফেইসবুক, টুইটার কিছুই নেই। আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ। কাজেই আমাকে নিয়ে কে কোথায় কি লিখে এসব আমি দেখি না। কেউ সামনে সমালোচনা করলে মাথা নিচু করে চলে যাই।’’
সেই উসমান এবারও চেনালেন নিজেকে। চিটাগং কিংসের হয়ে আজ (শুক্রবার) দুরন্ত রাজশাহীর বিপক্ষে খেললেন ৬২ বলে ১২৩ রানের ইনিংস। চিটাগংও পেয়েছে ১০৫ রানের বড় জয়। আরব আমিরাতে থিতু হতে যাওয়া উসমানেরও পরিচয় বদলেছে। তিনি এখন পাকিস্তান জাতীয় দলের খেলোয়াড়। সেই যাত্রাটাও নানা নাটকীয়তায় মোড়া।
পাকিস্তানের করাচিতে জন্ম নেওয়া উসমান যুব দলে খেলেছেন বর্তমান পাকিস্তানি সাদা বলের অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ানের সঙ্গে। তবে পাকিস্তান জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার সুযোগ নেই দেখে পাড়ি জমান আরব আমিরাতে। জীবিকার তাগিদে সেখানে করেছেন সিকিউরিটি গার্ডের কাজ। কখনও হয়েছেন স্টোর কিপার, কখনও বা এসি মিস্ত্রি। তবে ছাড়েননি ক্রিকেটটা। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ভালো করায় অপেক্ষায় ছিলেন আরব আমিরাত জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার।
ভাগ্যটা বদলে যায় গত পিএসএলে মুলতান সুলতানসের হয়ে ৩৬ বলে সেঞ্চুরি করায়। এটা আবার ছিল পিএসএল ইতিহাসেরই দ্রুততম সেঞ্চুরি। তার ডাক আসে পাকিস্তানের ক্যাম্পে। সেই সুযোগ হাতছাড়া করেননি উসমান। আরব আমিরাতের বদলে তিনি জাতীয় দল হিসেবে বেছে নেন জন্মভূমি পাকিস্তানকেই। তাতে বাধে বিপত্তি।
‘প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ’ করায় আরব আমিরাত পাঁচ বছর নিষিদ্ধ করে উসমান খানকে। স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় তাতে অবশ্য কিছু যায় আসেনি উসমানের। পাকিস্তানের জার্সিতে গত বছর অভিষেক হওয়ার পর ১৮টা টি-টোয়েন্টি খেলে ফেলেছেন তিনি। ১২২.৭৫ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ২৩২ রান। আজ বিপিএলেও খেললেন বিস্ফোরক ইনিংস। সিকিউরিটি গার্ড থেকে এভাবেই সাধারণ উসমান হয়ে উঠছেন অসাধারণ।