বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের কোনও শত্রুতা নেই বলে মনে করেন দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী।
ভারত থেকে সকাল সন্ধ্যার সংবাদদাতা জানান, সোমবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর বার্ষিক সম্মেলনে জেনারেল দ্বিবেদী এই মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সীমান্তে পাঁচটি জায়গায় ভারতের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা ঘিরে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে রবিবার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলবের পরদিনই দেশটির সেনাপ্রধান এমন মন্তব্য করলেন।
জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে কোনও শত্রুতা নেই। কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।”
বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে জানিয়ে ভারতীয় সেনাপ্রধান বলেন, “আমরা প্রতিবেশী। আমরা একসঙ্গে বাস করছি।”
দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক অটুট রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ক্ষমতার পরিবর্তনের সময় বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গে আমার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল। পরে আমাদের মধ্যে একটি ভিডিও কনফারেন্সও হয়েছে।”
বাংলাদেশে সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার প্রসঙ্গে জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, “আমাদের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা আগের মতোই আছে।”
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, “সেখানে যখন একটি নির্বাচিত সরকার আসবে, তখন আমাদের এ নিয়ে কথা বলা উচিত। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক ভালো এবং সঠিক পথে রয়েছে।”
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকেই ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। সেই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কূটনৈতিকভাবে দু’পক্ষের মধ্যে চেষ্টা চলছে।
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে হিন্দুদের নিপীড়নের কথা বলে আসছে ভারত, যদিও অনেক অভিযোগের ভিত্তি মেলেনি।
এর মধ্যে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেপ্তার করা হলে তাকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান আসে নয়া দিল্লি থেকে। ভারতের হিন্দু সংগঠনগুলোও এ নিয়ে সরব হয়। তাদের বিক্ষোভ থেকে ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলা হলে দুদেশের সম্পর্ক আরও অবনতির দিকে যায়।
এমন পরিস্থিতিতে গত ৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সফরে আসা ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বললেন, শেখ হাসিনার অবস্থান দুই দেশের সম্পর্কে বাধা হওয়া উচিত নয়।
এর আগে গত নভেম্বরের শুরুতে বাংলাদেশ ও ভারতের সেনাপ্রধানের মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়াল বৈঠক হওয়ার খবর আসে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে, যা সোমবার নিশ্চিত করেছেন জেনারেল দ্বিবেদী।