Beta
রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫

সীমান্তে বেড়া নিয়ে বোঝাপড়া আছে : প্রণয় ভার্মা  

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা।
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা।
[publishpress_authors_box]

সম্প্রতি বাংলাদেশ সীমান্তে পাঁচটি জায়গায় ভারত কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করলে প্রতিরোধের মুখে তা থেকে সরে গেছে; তবে চলছে উত্তেজনা।

এ ব্যাপারে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, নিরাপত্তার জন্য এই বেড়ার ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে বোঝাপড়া আছে। আর দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ভারতের বিএসএফ ও বাংলাদেশের বিজিবি সহযোগিতার মাধ্যমে সীমান্তে অপরাধ দমনের বিষয়ে কাজ করবে।

রবিবার বিকালে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে আলোচনার পর প্রণয় ভার্মা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

বেড়া দেওয়া নিয়ে সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ায় রবিবার প্রণয় ভার্মাকে ডাকা হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।   

প্রণয় ভার্মা সাংবাদিকদের বলেন, “আমি পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলোচনা করেছি। অপরাধমুক্ত সীমান্ত নিশ্চিতের ব্যাপারে ভারতের প্রত্যয় নিয়ে কথা বলেছি। চোরাচালান, অপরাধীদের চলাচল, পাচারের চ্যালেঞ্জ কার্যকরভাবে দমনের বিষয়ে আলোচনা করেছি।

“নিরাপত্তার জন্য সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার ব্যাপারে আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে। এ ব্যাপারে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। আমরা আশা করি, সীমান্তে অপরাধ দমনের বিষয়ে সহযোগিতার মাধ্যমে সেই বোঝাপড়ার বাস্তবায়ন হবে।”

সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের প্রস্তুতি নিলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও স্থানীয় জনগণের প্রতিরোধের মুখে তা বন্ধ রয়েছে।   

এ নিয়ে বিজিবি ও বিএসএফ পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করলেও দুই দেশের স্থানীয়দের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে উত্তেজনা ও উৎকণ্ঠা। সোশাল মিডিয়াও বিষয়টি নিয়ে সরগরম হয়ে ওঠে।

রবিবার সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি সীমান্তের পাঁচটি জায়গায় ভারত কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ শুরু করে। তবে বিজিবি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের শক্ত অবস্থানের কারণে ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে। সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় আছে।

বিজিবির সঙ্গে এক হয়ে সীমান্তে বেড়া নির্মাণ প্রতিরোধ করায় সীমান্তবর্তী জেলার বাসিন্দারের ধন্যবাদ জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিএসএফের সঙ্গে বিজিবির যোগাযোগ হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও এ বিষয়ে ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে। তারা কূটনৈতিকভাবে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।

উপদেষ্টা বলেন, বিগত সরকারের সময়ে সীমান্তে বেড়া দেওয়া নিয়ে যেসব অসম সমঝোতা চুক্তি হয়েছে, সেগুলো বাতিলের বিষয়ে পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তী মাসে (ফেব্রুয়ারিতে) বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে ডিজি পর্যায়ে বৈঠক হবে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সীমানা নির্ধারণ ও উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দায়িত্ব পালন–সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত মোট চারটি চুক্তি রয়েছে বরে জানান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত যুগ্ম সীমান্ত নির্দেশাবলি-১৯৭৫ অনুযায়ী উভয় দেশের শূন্যরেখা ১৫০ গজের মধ্যে প্রতিরক্ষা সামর্থ্যতা–সংবলিত যেকোনো কাজ সম্পন্নের বিষয়ে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এছাড়া উভয় দেশের প্রয়োজনে শূন্যরেখা থেকে ১৫০ গজের মধ্যে যেকোনো উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্নের ক্ষেত্রে একে অপরের সম্মতি গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে ৩ হাজার ২৭১ কিলোমিটার স্থানে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করেছে এবং ৮৮৫ কিলোমিটার স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান উপদেষ্টা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত