আন্দোলনের সময় গুলিতে গৃহকর্মী লিজা আক্তার নিহতের মামলায় গ্রেপ্তার একাত্তর টেলিভিশনের সিইও মোজাম্মেল হক বাবু ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের ৭ দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত।
আর গুলিতে ফজলু নামের এক ব্যক্তি নিহতের অভিযোগে রাজধানীর ভাষানটেক থানায় করা মামলায় দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তেরও ৭ দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার পৃথক দুই মামলার শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহের আদালত এই রিমান্ডের আদেশ দেন।
এদিন পৃথক দুই মামলায় প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। সকাল ৯ টার দিকে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। পরে ৯ টা ৪০ মিনিটের দিকে এজলাসে তোলা হয় তাদের।
এসময় বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা তাদের লক্ষ্য করে কটূক্তি করতে থাকেন।
আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে প্রথমে মোজাম্মেল বাবু ও শাহরিয়ার কবিরের রিমান্ডের শুনানি হয়। রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করে। বিএনপি সমর্থক আইনজীবী ওমর ফারুকও রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।
পরে আদালত আসামিরা কিছু বলতে চান কি না, তা জানতে চান।
এসময় শাহরিয়ার কবির বলেন, “আমি অসুস্থ, হাঁটতে পারি না। আমি ১০০ এর উপর বই লিখেছি। কোথাও দেখতে পাবেন না ইসলামের বিরুদ্ধে কিছু বলেছি। রিমান্ড দিবেন বা না দিবেন আপনার ইচ্ছা। অসুস্থ, হুইল চেয়ার ছাড়া আমি চলতে পারি না।”
এরপর মোজাম্মেল বাবু কথা বলতে চাইলে আইনজীবীদের তোপের মুখে পড়েন। পরে দুই হাত জোর করে ক্ষমা প্রার্থনার ভঙ্গিতে তিনি বলেন, “আমার ‘জয় বাংলা, জয় হিন্দ’ বক্তব্য ম্যানিপুলেট করা হয়েছে। আমি ক্যানসারে আক্রান্ত।”
শ্যামল দত্তের রিমান্ডের বিষয়ে শুনানিও পর আদালত তার কাছেও জানতে চান কিছু বলার আছে কি না।
তখন শ্যামল দত্ত আদালতকে বলেন, “আমি একজন পেশাদার সাংবাদিক। ৩৭ বছর সাংবাদিকতা করেছি। ৩৩ বছর একই হাউজে আছি। আমি কোনওদিন সরকারের সুবিধা নেইনি। কোনো প্লট নেইনি, টিভি নেইনি। আমি জাতীয় প্রেস ক্লাবের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। সম্পাদক পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট। ঘটনার সময় আমি ঢাকাতে ছিলাম না। সরকারের নির্দেশনা আছে যাচাই বাছাই না করে সাংবাদিকদের যেন গ্রেপ্তার করা না হয়। তারপরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় আমি কিছুই জানি না। ঘটনা ঘটনার সময় ওই জায়গাও ছিলাম না।”
আদালতের কার্যক্রম শেষে তাদের সিএমএম আদালতে হাজতখানায় নেওয়া হয়। এসময় তাদের ঘিরে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পথে অনেকেই তাদের আঘাত করতে গেলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বাধা দেয়।