জাতীয় অ্যাথলেটিকসে একটা দৃশ্য সবার পরিচিত। ১০০ মিটার দৌড় শেষে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর পতাকা নিয়ে ট্র্যাকের ওপর উল্লাস করছেন শিরিন আক্তার। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দ্রুততম মানবী হওয়াটা যেন অভ্যাসে পরিণত করেছেন বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর এই অ্যাথলেট।
এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। ৪৮তম জাতীয় অ্যাথলেটিকসে জাতীয় স্টেডিয়াম ঢাকায় সোমবার আবারও নিজেকে প্রমাণ করেছেন। ১২.০১ সেকেন্ড সময় নিয়ে এবারও প্রথম হয়েছেন।
বাংলাদেশের অ্যাথলেটে রেকর্ড ১৭ বার দ্রুততম মানবী নাজমুন নাহার বিউটি। আর মাত্র একবার দ্রুততম মানবী হতে পারলেই ছুঁয়ে ফেলবেন বিউটির রেকর্ড।
শিরিনের বয়স ছুঁয়েছে ত্রিশ। এখনও নিজের ফিটনেস দারুণভাবে ধরে রেখেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পার করেছেন। বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের বর্তমান অ্যাডহক কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু এত কিছুর মাঝেও সব নজর যেন অ্যাথলেটিকস ট্র্যাকে।
দেশের ক্ষয়িষ্ণু অ্যাথলেটিকসে যে নতুন কোনও মুখ উঠে আসছে না, সঠিক পরিচর্যা নেই অ্যাথলেটদের। তৃণমূল থেকে অ্যাথলেটিকস তুলে আনার কোনও উদ্যোগ নেই। দিনের পর দিন শিরিনদের মতো পুরনো মুখ বারবার ট্র্যাকে রাজত্ব করাটা যেন এসবই প্রমাণ করে।
শিরিনের টাইমিং অবশ্য আন্তর্জাতিক মানদন্ডে মোটেও ভালো কিছু নয়। ১১.৯৯ সেকেন্ড দৌড়েছিলেন ২০১৯ সালের এসএ গেমসে। এখন পর্যন্ত এটাই শিরিনে সেরা টাইমিং।
তবে টাইমিং নিয়ে চিন্তিত নন, নিজে আরও অনেক দিন অ্যাথলেটিকস ট্র্যাকে রাজত্ব করতে চান। দৌড় শেষে শিরিন সেই কথায় বললেন, “ আমার ক্যারিয়ারের শেষ কোথায় জানিনা। এখনই এসব নিয়ে ভাবছি না। আমি এসএ গেমসে অন্তত একবার হলেও সোনা উপহার দিতে চাই।”
বিকেএসপির সাবেক কোচ আবদুল্লাহ হেল কাফির অধীনে সারা বছর অনুশীলন করেন শিরিন। এই সাফল্যের পেছনে কৃতজ্ঞতা ঝরল কোচের জন্য, “আবদুল্লাহ হেল কাফি স্যারের অধীনে সারা বছর ট্রেনিং করি। তিনি তো আছেন। এছাড়া বেশ কিছু গোপন মানুষ আমাকে পেছন থেকে অনেক বেশি সাপোর্ট করেন। তারা চাননা যে তাদের কথা প্রকাশ করি। কিন্তু এই মানুষগুলোর সহযোগিতার জন্য এই পর্যায়ে এসেছি।”
নিজের টাইমিং নিয়ে যদিও সন্তুষ্ট নন শিরিন, “আজ যে টাইমিং করেছি সেটা তত ভালো না। এর চেয়েও ভালো করা সম্ভব।”