বাংলাদেশের সঙ্গে বিগত সরকারের আমলে হওয়া দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বৈদেশিক ঋণচুক্তিগুলো পর্যালোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত ‘শ্বেতপত্র প্রণয়ন’ কমিটি।
বিশেষ করে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে হওয়া জ্বালানি খাতের ঋণচুক্তিগুলো পর্যালোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
মঙ্গলবার পরিকল্পনা কমিশনে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির দ্বিতীয় বৈঠক শেষে চুক্তি পর্যালোচনার বিষয়ে একথা জানান তিনি। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরতে গতমাসে এই কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
বৈদেশিক ঋণচুক্তিগুলো পর্যালোচনা করা হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বিভিন্ন চুক্তি নিয়ে যদি লভ্য হয় (চুক্তির প্রয়োজনীয় দলিলপত্র) আমরা অবশ্যই সেগুলো দেখব। বিশেষ করে জ্বালানি খাতের জন্য এটা চিন্তা করা হয়েছে।”
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি কোন কোন বিষয়ের ওপর মনোযোগ দেবে সেগুলো আজকের বৈঠকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানান দেবপ্রিয়। এছাড়া লেখার ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে, কে লিখবেন বা কীভাবে লিখবেন সে দায়িত্বও বন্টন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিষয়গুলো কী হবে জানতে চাইলে সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় বলেন, “সাধারণ অর্থনীতি, সামষ্টিক অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি খাত এবং এগুলোর ভিতরে খাতওয়ারি বিষয়ও রয়েছে। এছাড়াও ব্যাংকিং খাত, কর আহরণ, পাঁচারকৃত অর্থ, মেগা প্রকল্প, দারিদ্র্র্য বিমোচন, বৈষম্য এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা নিয়েও আলোচনা হবে।”
এসব বিষয় নিয়ে সমালোচনার পাশাপাশি সঠিকতা যাচাই করবেন বলে জানান তিনি। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানের সঙ্গে তুলনা করে দেখা হবে বলেও জানান।
এ বিষয়ে সমাজের বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান এবং দেশের বাইরেও আলোচনা চলবে। বিশেষ করে সমাজ বিজ্ঞান, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ের বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপকদের সঙ্গে এই আলোচনা করা হবে, জানান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
গত ২৮ আগস্ট শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছিল, এই শ্বেতপত্রে দেশের বিদ্যমান অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিষয়ে সরকারের কৌশলগত পদক্ষেপ, জাতিসংঘের টেকসই অভীষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়ন ও বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে করণীয় বিষয়ের প্রতিফলন দেখা যাবে।
কমিটি ৯০ দিনের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবে বলেও সেদিন জানানো হয়।