Beta
বুধবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বুধবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৫

কে হচ্ছেন ট্রুডোর উত্তরসূরি

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
[publishpress_authors_box]

কানাডার লিবারেল পার্টিকে ধ্বংসস্তূপ থেকে তুলে নির্বাচনে জিতিয়েছিলেন জাস্টিন ট্রুডো; তারপর টানা প্রায় এক দশক ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

কিন্তু ঘরে-বাইরে নানা চাপের মুখে পরবর্তী নির্বাচনের ১০ মাস আগে সোমবার পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন তিনি।

আপাতত তিনি লিবারেল পার্টির প্রধানের দায়িত্ব ছেড়েছেন। এই পদে গত এক যুগ ছিলেন তিনি। এখন লিবারেল পার্টি তাদের পরবর্তী নেতা নির্বাচন করবে। যিনি নেতা হবেন, তার হাতে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়ে চলে যাবেন ট্রুডো।

সেজন্য সময় আছে আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত; সেই পর্যন্ত পার্লামেন্টের অধিবেশনও স্থগিত থাকছে।

ট্রডোর উত্তরসূরিই লিবারেল পার্টিকে পরবর্তী নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাবে, যা আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, লিবারেল পার্টির সদস্যরা ভোটের মাধ্যমে তার উত্তরসূরি বাছাই করবেন।

এখন পর্যন্ত ট্রুডোর সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে চারজনের নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হচ্ছেন ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড, ডমিনিক লেব্লাঙ্ক, মেলানি জলি ও মার্ক কার্নি।

ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড

জন্ম ও বেড়ে ওঠা কানাডার অ্যালবার্টা অঙ্গরাজ্যে। কানাডার সংবাদমাধ্যম দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইলে জ্যেষ্ঠ সম্পাদক হিসেবে ফ্রিল্যান্ডের কর্মজীবন ছিল সফল। কাজ করেছেন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস ও রয়টার্সে। ব্রিটেন ছেড়ে ২০১৩ সালে দেশে ফিরে লিবারেল পার্টিতে যোগ দেন তিনি। বিয়ে করেন দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের কালচারাল ডেস্কের এক প্রতিবেদককে।লিবারেল পার্টি ২০১৫ সালে ক্ষমতায় আসার পর দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন ফ্রিল্যান্ড। ২০১৯-২০২৪ সাল পর্যন্ত ছিলেন কানাডার উপপ্রধানমন্ত্রী। দায়িত্ব পালন করেন অর্থ মন্ত্রণালয়েরও। গত মাসে ওই দুই পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। কথিত আছে, একটি ভিডিও কলকে কেন্দ্র করে ফ্রিল্যান্ডকে উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরখাস্ত করতে চেয়েছিলেন ট্রুডো। তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে না রেখে নামমাত্র মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন, যা প্রত্যাখ্যান করে পদত্যাগ করেন ফ্রিল্যান্ড।

ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড
ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড



ডমিনিক লেব্লাঙ্ক

কানাডার অন্টারিও অঙ্গরাজ্যে জন্ম। দেশটির সাবেক গভর্নর জেনারেল রোমিও লেব্লাঙ্কের ছেলে। শৈশবে কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিয়ের ট্রুডোর সন্তানদের দেখাশোনা করতেন তিনি। পিয়ের ট্রুডোই কানাডার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বাবা। অর্থমন্ত্রী হিসেবে গত মাসে ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগের পর সেই জায়গায় ডমিনিক লেব্লাঙ্ককে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৬-২০১৮ সাল পর্যন্ত ফিশারিজ, ওশান্স অ্যান্ড কানাডিয়ান কোস্ট গার্ড মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ট্রুডোর দীর্ঘদিনের বন্ধু তিনি। গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার পর ফ্লোরিডায় তার বাসভবনে দেখা করে কানাডা সরকারের একটি প্রতিনিধি দল, সেই দলে ছিলেন লেব্লাঙ্ক। ২০০০ সালে প্রথম সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। দায়িত্ব পান জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের। ২০১২ সালে লিবারেল পার্টির নেতৃত্বের নির্বাচনে অংশ নিতে চেয়েছিলেন লেব্লাঙ্ক। কিন্তু যখন তিনি জানতে পারেন, ট্রুডো ওই নির্বাচনে অংশ নিতে চান, তখন তিনি মত পাল্টান।    

ডমিনিক লেব্লাঙ্ক
ডমিনিক লেব্লাঙ্ক

    

মেলানি জলি

কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বড় হয়েছেন মন্ট্রিয়েলে। ২০০১ সালে মন্ট্রিয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনশাস্ত্রে স্নাতক করেন তিনি। ২০২১ সাল থেকে দেশটির শীর্ষ কূটনীতিক জলি। সে বছর কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়া নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন জলি। এই গুরুদায়িত্ব তার সন্তানধারণের চিকিৎসায় কোনও ধরনের প্রভাব ফেলবে কি না, এ নিয়ে উদ্বেগ ছিল তার। ট্রুডো সেসময় তাকে উৎসাহ দেন। তার উৎসাহ পেয়েই শেষমেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেন জলি। কানাডার পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেন, এমন নেতাদের সঙ্গে জলিকে কাজ করতে দেখা গেছে। কানাডা থেকে ছয় ভারতীয় কূটনীতিক বরখাস্তে তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

মেলানি জলি
মেলানি জলি

মার্ক কার্নি

ব্যাংক অব কানাডার সাবেক গভর্নর। ছিলেন ব্যাংক অব ইংল্যান্ডেরও শীর্ষ পদে। ১৯৮৮ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক করেন মার্ক কার্নি। গত ডিসেম্বরে ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ালে মার্ক কার্নিকে ওই পদে বসাতে চেয়েছিল ট্রুডোর দল। তারা গোপনে এ নিয়ে তার সঙ্গে কয়েকবার বৈঠকও করে। কিন্তু কার্নি তাদের প্রস্তাবে রাজি হননি। অর্থনীতিবিদ কার্নি আর ফ্রিল্যান্ড দীর্ঘদিনের বন্ধু। ফ্রিল্যান্ডের এক সন্তানের তিনি গডফাদারও। সম্প্রতি ‘ভ্যালুস’ নামে কার্নির একটি বই প্রকাশিত হয়। ওই বইয়ে তিনি পুঁজিবাদের কড়া সমালোচনা করেন।

মার্ক কার্নি
মার্ক কার্নি

তথ্যসূত্র: দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস  

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত